আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
ইমারত নির্মাণ কাজের চুক্তিনামা লেখার নিয়ম

১৮৭২ সালের চুক্তি আইন অনুযায়ী চুক্তি বলতে একজন সুস্থ মস্তিস্ক প্রাপ্তবয়স্ক আইনের দৃষ্টিতে সাবালক ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে কোন বস্তু অর্থের বিনিময়ে অথবা বস্তুর বিনিময়ে আদান প্রদান করার জন্য লিখিত ভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ হওয়ার প্রক্রিয়াকে চুক্তি বলে। তবে এক্ষেত্রে কিছু শর্ত প্রযোজ্য হবে।

চুক্তি সম্পাদনকারী ব্যক্তিকে অবশ্যই আইনের দৃষ্টিতে সাবালক, সুস্থ মস্তিস্ক সম্পন্ন ব্যক্তি হতে হবে। প্রত্যেক চুক্তিতে অবশ্যই একজন অপর একজনকে প্রস্তাব প্রদান করবে এবং অপর ব্যক্তি উক্ত প্রস্তাব গ্রহণে সম্মতি জ্ঞাপন করে কোন কিছু প্রতিদান করতে হবে। প্রতিদান ব্যতিত কোনো চুক্তিই কার্যকর হবে না।

নিম্নে ইমারত নির্মাণ কাজের চুক্তিনামার বিষয়ে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো———-

মো: তৌহিদ রানা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মিডিয়া কো লিমিটেড, ফার্মগেট, ঢাকা।
প্রথম পক্ষ (মালিক) ………….

মো: মাহবুবর রহমান, প্রোপ্রাইটর, রাজ কনস্ট্রাকশন, ঢাকা।
দ্বিতীয় পক্ষ (ঠিকাদার) …………

কাজের ধরণ: ১০ তলা ভবন নির্মাণ, ঠিকানা: পূর্ব শেওড়াপাড়া, বেগম রোকেয়া স্বরণী, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬।

কাজের মূল্য (প্রতি বর্গফুট হিসেবে):

১। বেইজমেন্টের ফ্লোর, ছাদ এবং প্রথম তলার ছাদ নির্মাণের দর প্রতি বর্গফুট ১৭০/- (একশত সত্তর) টাকা।

২। দ্বিতীয় তলার ছাদ থেকে পরবর্তী প্রতিটি ছদের দর নির্ধারিত ১৭০.০০ (একশত সত্তর) টাকা সাথে ৫% (পাঁচ শতাংশ) হারে বৃদ্ধি পাবে।

সময়সীমা: ৩০ মাস। শুরু তারিখ …………………..

শর্তাবলী

প্রথম পক্ষ (মালিক):
১। প্রথম (মালিক) ইট, বালি, সিমেন্ট, রড, পাথরসহ মালামাল সরবরাহ করবেন।
২। সেনেটারি, টাইলস, মোজাইক এবং ইলেকট্রিক এর কাজ মালিকের আওতায় থাকবেন।
৩। নিরাপত্তা দেয়াল (সেপটির জন্য ইষ্টার্চ) দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় মালামাল দিবেন।
৪। পাম্প স্থাপন করবেন।
৫। ৪৪০ ভোল্টের বিদ্যুৎ লাইন টেনে দিবেন।
৬। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা অগ্রিম প্রদান করবেন।
৭। অগ্রিম প্রদানকৃত ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা প্রতি তলার ছাদ ঢালাইয়ের সাথে ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা করে মোট দশ কিস্তিতে কর্তন বা সমন্বয় করে নিবেন।
৮। মাথাপিছু ৪০০/- (চারশত) টাকা করে খোরাকী প্রদান করবেন।
৯। মোট বিলের মধ্যে প্রতি ছাদ ঢালাইয়ের পর ৫০%, ভিতরের গাথুনির পর ২০%, ভিতরে প্লাষ্টারের পর ১০%, বাহিরের আস্তরের পর ১০% বিল পরিশোধ করবে। বাকি ১০% বিল ভবনের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর ২ মাসের মধ্যে পরিশোধ করবেন।
১০। বেইজমেন্টের ফ্লোরের কাজ শেষ হওয়ার পর এর সমুদয় বিল পরিশোধ করবেন।
১১। শ্রমিকদের জন্য বাথরুমসহ থাকার ব্যবস্থা করে দিবেন।
১২। খোয়, খোয়া চালা বহন করবেন।
১৩। সুনির্দিষ্ট কারণ সাপেক্ষে চুক্তি বাতিলের অধিকার সংরক্ষণ করেন। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় পক্ষের কোন ওজর আপত্তি থাকবে না।

দ্বিতীয় পক্ষ (ঠিকাদার):
১। দ্বিতীয় পক্ষ কাঠ, বাঁশ, তার, তারকাটা, পলিথিন, প্লেইন সিড, বালতি, ফুলের ঝাড়ু, শলার ঝাড়ু, ফোম কাটার সীট ইত্যাদি নিজ দায়িত্বে এনে কাজ করবেন।
২। কলমে স্টিল সাটার ব্যবহার করবেন।
৩। বাহিরের সাইডে বাঁশ ও মাচা ঠিকাদার বহন করবেন।
৪। রুপুস মেশিন, ভাইব্রোটর মেশিন ও মিক্সার মেশিন নিজ দায়িত্বে আনবেন।
৫। প্রতি তলায় মালামাল (ইট, বালি) বহন খরচ ঠিকাদার বহন করবেন।
৬। প্লাষ্টারের বালি চালতে হবে।
৭। কোম্পানী চাহিদামত কাজ করতে বাধ্য থাকবেন।
৮। ভবনের কাজ ২য় পক্ষ নিজেদের খেয়াল খুশিমত করতে পারবেন না।
৯। ঠিকাদারের অবহেলার কারণে যদি কোন কাজে ভুল হয়, তবে সেটা পূণ:রায় ঠিকাদার কাজটি করে দিতে বাধ্য থাকবে।
১০। কাজ শুরু এবং শেষ করার পর দ্বিতীয় পক্ষের সন্তোষজনক রিপোর্টের পরই ২য় পক্ষের কাজ সঠিক হয়েছে বলে প্রতীয়মান হবে। অন্যথায় তার দায়-দায়িত্ব দ্বিতীয় পক্ষকে বহন করতে হবে।
১১। কাজের সাথে যুক্ত শ্রমিক/ব্যক্তি কোন প্রকার অসামাজিক বা রাষ্ট্রদ্রোহমূলক কোন কাজে জড়িত হতে পারবেন না। জড়িত হলে তার দায়-দায়িত্ব ১ম পক্ষ বহন করবেন না।
১২। ১ম পক্ষের সাথে আলোচনা বা পরামর্শ নিয়ে তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে ২য় পক্ষ কাজ করতে বাধ্য থাকবেন।
১৩। ১ম পক্ষ কর্তৃক সরবরাহকৃত কোন মালামালের অপচয় করা যাবে না। অপচয় করলে এবং প্রমাণিত হলে ২য় পক্ষ তার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবেন।
১৪। প্রয়োজনীয় মালামাল সরবরাহের পরও যদি কাজ বন্ধ থাকে তবে, তার দায়-দায়িত্ব ২য় পক্ষকে বহন করতে হবে।
১৫। প্রকৌশলী কর্তৃক অনুমোদিত নকশা পরিবর্তন/পরিবর্ধন হলে সে মোতাবেক কাজ করতে হবে। সেক্ষেত্রে কোন আপত্তি থাকতে পারবে না।
১৬। ছাদ ঢালাইয়ের পূর্বে প্রয়োজনীয় সকল জায়গায় কুন্দাইতে (খোদাই করতে) হবে।
১৭। দ্বিতীয় পক্ষ কোন অবস্থাতেই অত্র চুক্তি ভঙ্গ করতে পারবেন না। করলে, আইনত: দন্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।

অদ্য নিম্নস্বাক্ষরকারী স্বাক্ষীগণের উপস্থিতিতে আমরা উভয় পক্ষ স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিস্কে এবং অন্যের বিনাপ্ররোচনায় অত্র চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর সম্পাদন করলাম। ইতি। তাং-

প্রথম পক্ষের স্বাক্ষর
মো: তৌহিদ রানা
ব্যবস্থাপনা পরিচালক
মিডিয়া কো লিমিটেড

দ্বিতীয় পক্ষের স্বাক্ষর
মো: মাহবুবর রহমান
প্রোপ্রাইটর
রাজ কনস্ট্রাকশন

স্বাক্ষীগণের নাম ও স্বাক্ষর:

১।

২।

৩।