আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
পাবনায় আবাসনপল্লী নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে

পাবনায় গ্রিন সিটি আবাসনপল্লী নির্মাণের কাজ অনেকটাই শেষ পর্যায়ে। পাবনা গণপূর্ত অধিদপ্তর এগুলো বাস্তবায়ন করছে। পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের রূপপুর গ্রামে নির্মিতব্য ‘পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র’ মূল প্রকল্প এলাকার বাইরে এরই মধ্যে তিনটি সুউচ্চ ভবনের কাজ শেষ হয়েছে। এ এলাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ২০তলা ১১টি ও ১৬তলা আটটি ভবনের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। ২২টি সুউচ্চ ভবন তৈরি হবে এ চত্বরে। এছাড়া, থাকবে মাল্টিপারপাস হল, মসজিদ, স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

এদিকে, পাবনাবাসীর প্রায় পাঁচ যুগের স্বপ্ন রূপপুর গ্রামে দৃশ্যমান হচ্ছে ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প’। বর্তমানে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি স্থাপনের কাজ। সফলভাবে শেষ হয়েছে দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল এই বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের প্রথম ধাপের কাজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি মাসের শেষের দিকে চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ উদ্বোধন করবেন বলে নিশ্চিত করেছে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে ঘুরে দেখা যায়, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকে ঘিরে রূপপুর পদ্মার পারে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রসাটম) নেতৃত্বে চলছে মহাকর্মযজ্ঞ। প্রকল্পে প্রতিদিন রাশিয়ার বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশি কর্মী মিলে এক হাজারের বেশি কর্মী দিন-রাত কাজ করছেন।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, সরকারের ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের আওতায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সার্বিক কার্যক্রম সরাসরি তদারকি করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই মধ্যে নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়েছে পাঁচ হাজার ৮৭ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ। শুরু হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে দ্বিতীয় বা শেষ পর্যায়ের কাজ। এরই অংশ হিসেবে নভেম্বরে উদ্বোধন হতে পারে বিদ্যুৎ প্রকল্পের মূল স্থাপনার ‘রি-অ্যাক্টর বিল্ডিং (উৎপাদন কেন্দ্র)’ নির্মাণকাজ।

দুই পর্যায় মিলে এক লাখ ১৮ হাজার ১৮০ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির কাজ ২০১৩ সালে শুরু হয়েছে। প্রকল্প শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর। দুই ইউনিটের এ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

জমি অধিগ্রহণ : প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের মাধ্যমে পাইওনিয়ার বেস ও ইরেকশন বেসের কাজ শেষ হয়েছে। চলছে প্রটেকশন ড্যাম (বাঁধ) তৈরির কাজ। ২ দশমিক ৮ কিলোমিটার লম্বা ও ১৩ মিটার প্রস্থ এ বাঁধের কাজও এগিয়েছে অনেক দূর। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রথম পর্যায়ে ২৬০ একর জমি অধিগ্রহণ করা ছিল। পরে আরো ৮০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। আরো ২১৯ একর জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। নতুনভাবে অধিগ্রহণ করা পদ্মার বিশাল চরে চলছে মাটি ভরাটের কাজ।

পাবনার পাকশী-খুলনা মহাসড়কের পাশের বিস্তীর্ণ ফাঁকা মাঠের কথা এরই মধ্যে ভুলতে বসেছেন স্থানীয়রা। বাইরের কেউ দেখে কল্পনাও করতে পারবে না ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প’ এলাকার অতীত ও বর্তমান অবস্থার পার্থক্য। পাবনাবাসীর প্রায় পাঁচ যুগের স্বপ্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প সত্যি হতে চলেছে।

সম্পাদনা: এলএম/আরএ/এসএ