আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
থামছে না পাহাড় নিধন: এক মাসে ২০০ ঘরবাড়ি তৈরি

দেশের পর্যটন শহর কক্সবাজার। এই জেলার পাহাড়গুলো রক্ষা করা যাচ্ছে না। পাহাড় কাটা বন্ধে গত পাঁচ মাসে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ২০ বার অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ করে এক হাজারের বেশি অবৈধ ঘরবাড়ি। অন্যদিকে, পরিবেশ অধিদপ্তর ১০ মাসে ৪৮টি মামলা করলেও থামছে না পাহাড় কাটা। নতুন নতুন বসতি গড়ে উঠছে পাহাড় কেটে। গত এক মাসে কক্সবাজারের ২০টি সরকারি পাহাড়ে কমপক্ষে ২০০ নতুন ঘরবাড়ি তৈরি হয়েছে বলে জানায় পরিবেশ অধিদপ্তর ও সদর ভূমি কার্যালয়। তাদের হিসাবে, গত এক মাসে উত্তর লারপাড়া পাহাড়ে নতুন করে গড়ে উঠেছে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২টি ঘরবাড়ি। সব মিলিয়ে ২০টি সরকারি পাহাড়ে অবৈধ বসতির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ২০০টি।

পরিবেশ অধিদপ্তর, ভূমি কার্যালয় ও পরিবেশবাদী সংগঠন সূত্র জানায়, ক্ষতবিক্ষত পাহাড়গুলোর মধ্যে রয়েছে- শহরের ঘোনারপাড়া, মোহাজেরপাড়া, বৈদ্যঘোনা, বইল্যাপাড়া, জাদি পাহাড়, খাজা মঞ্জিল, বাদশাঘোনা, ফাতেরঘোনা, ইসলামপুর, হালিমাপাড়া, লাইটহাউসপাড়া, আবু উকিলের ঘোনা, পাহাড়তলী, বাঁচা মিয়ারঘোনা, হাশেমিয়া মাদ্রাসার পেছনে, সাহিত্যিকাপল্লী, বিজিবি ক্যাম্পের পেছনে, উপজেলা পরিষদের পেছনে উত্তর লারপাড়া ও দক্ষিণ লারপাড়ার পাহাড়।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশ্রাব সাংবাদিকদের বলেছেন, এখন দিন-রাত সমানে পাহাড় নিধন হচ্ছে। কয়েক বছরে পাহাড় কাটার দায়ে  এক হাজারের বেশি ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১৭৪টি মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। কক্সবাজার সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নাজিম উদ্দিনও বলেন, সরকারি পাহাড় কেটে ঘরবাড়ি তৈরি হয়েছে প্রচুর। তবে উচ্ছেদও হচ্ছে।

পরিবেশবাদী সংগঠন কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান বলেন, সম্প্রতি শহরের বিভিন্ন পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছে ৮০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা। কিছু প্রভাবশালী রোহিঙ্গাদের দিয়ে পাহাড় নিধন করছেন। কেউ ঘরবাড়ি তৈরি করে রোহিঙ্গাদের থাকতে দিচ্ছেন। পাহাড় নিধনের ফলে গাছপালা উজাড় হচ্ছে।

পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করে উখিয়ার বালুখালীর ত্রাণশিবিরে পাঠানোর চেষ্টা চলছে বলে জানান কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুবুর রহমান চৌধুরী। তবে পাহাড় কাটা বন্ধ করতে না পারায় অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন তিনি। পৌর মেয়র বলেন, পাহাড়গুলো রক্ষা করা যাচ্ছে না। এখনো পাহাড়গুলোতে ৩০ হাজারের মতো ঘরবাড়ি আছে। সেখানে থাকছে ২ লাখের বেশি মানুষ।