
কিশোরগঞ্জের হাওরের নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ৩১ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করতে পুরনো ভবন সংস্কারসহ নতুন চারটি ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। দোতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন, চিকিৎসকদের দোতলা আবাসিক ভবন, দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের আবাসিক ভবন ও তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের তিনতলা আবাসিক ভবন নির্মাণ ও পুরনো হাসপাতাল ভবন সংস্কারের কাজটি পায় ঢাকার মেসার্স কাজল বিল্ডার্স।
পাঁচ কোটি ১৪ লাখ টাকার এই নির্মাণ কাজ ২০০৮ সালের ১৬ জুন থেকে শুরু হয়। ২০০৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ভবনগুলো কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল ঠিকাদারের। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাজের ৬০ ভাগও করতে পারেনি ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ ফেলে উধাও হয়ে গেছে প্রতিষ্ঠানের লোকজন। দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় নির্মাণাধীন ভবনগুলো নষ্ট হচ্ছে। এমতাবস্থায়, বাকি কাজ কবে হবে তা কেউ জানে না।
এদিকে, নতুন ভবন হাতে না পাওয়ায় হাসপাতালের ৫০ শয্যার কার্যক্রম শুরু করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। আবাসন সমস্যার কারণে চিকিৎসকেরা থাকছেন না হাসপাতালের চৌহদ্দিতে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আছেন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা। হাওরের অসংখ্য রোগীকে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আর স্থানীয়দের অভিযোগ, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের যথাযথ তদারকি না থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির নির্মাণ কাজ ৯ বছর ধরে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ কিশোরগঞ্জের নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা ইউনিটের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়াউল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, কাজ দ্রুত শেষ করতে প্রতিষ্ঠানটিকে বেশ কয়েকটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে কাজ না হলে কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হবে।
নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এডি মাহমুদ আসাদ বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরনো ভবনের সংস্কার নতুন ভবনের সঙ্গে যুক্ত। তাই পুরনোটা আলাদাভাবে সংস্কারের উদ্যোগ নিতে পারছি না। হাসপাতালের দরজা, জানালা সব ভেঙে যাচ্ছে।
জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সঙ্গে জেলার অন্য যে সব হাসপাতালের কাজ শুরু হয়েছিল সেগুলোর নির্মাণ কাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাজ শেষ হলো না। এ বিষয়ে সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
মেসার্স কাজল বিল্ডার্সের সাইট প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম বলেন, তাদের কিছু সমস্যা ছিল। তাই কাজটি ঠিকমতো করা যায়নি। কয়েকদিনের মধ্যে কয়েকশ’ শ্রমিক একসঙ্গে কাজে লাগিয়ে হলেও তা দ্রুত শেষ করার ইচ্ছা রয়েছে বলে জানান তিনি।
সম্পাদনা: কেডিএম/আরএ/এসকে