আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
শুল্কমুক্ত রপ্তানির সুযোগ পাবে সিরামিক: বাণিজ্যমন্ত্রী

আগামীতে সিরামিক শিল্প শুল্কমুক্ত রপ্তানির সুযোগ পাবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে রাজধানী ঢাকায় আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) ৪ নম্বর হলে তিন দিনব্যাপী “সিরামিক এক্সপো বাংলাদেশ-২০১৭” এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রথমবারের মতো সিরামিক পণ্যের এই আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী আয়োজন করেছে বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ)। প্রদর্শনীতে বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশের ৬০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রদর্শনটি দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, এই এক্সপো প্রমাণ করে আমরা ধীরে ধীরে রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে রূপান্তরিত হচ্ছি। ১৯৬২ সালে দেশে প্রথম সিরামিক কারখানা প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে তিন ক্যাটাগরিতে ৬২টি কারখানা রয়েছে। এতে বিনিয়োগ হয়েছে ১ বিলিয়ন ডলার। এই খাত থেকে বছরে ৩ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পায় সরকার। রফতানি আয় ৫০ মিলিয়ন ডলার।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের পঞ্চবর্ষিকী পরিকল্পনায় সিরামিক সাত নম্বরে আছে। সামনে শুল্কমুক্ত রপ্তানির সুযোগ পাবে সিরামিক। বন্দর সমস্যা নিয়েও আমরা কাজ করছি। আগামী ২১ ডিসেম্বর এই নিয়ে বিশেষ একটা মিটিং আছে। আমরা চেষ্টা করবো, চট্টগ্রামের পাশাপাশি অন্যান্য বন্দরগুলো যেন আরও ফলপ্রসুভাবে ব্যবহার করা যায়।

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সিরামিক পণ্যের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে প্রস্তুতকারক, রপ্তানিকারক এবং সরবরাহকারীরা তাদের নতুন পণ্য, আধুনিক প্রযুক্তি এবং নিজেদের দক্ষতা বিশ্বব্যাপী তুলে ধরবেন। এতে করে বিশ্বের কাছে তাদের ভাবমূর্তি বাড়বে এবং পুরো প্রক্রিয়াতে নতুন মান যোগ করবে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিসিএমইএ’র সভাপতি ও সংসদ সদস্য মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দিন, বিসিএমইএ এবং ফেয়ার প্রজেক্টিং কমিটির চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ছিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, সিনিয়র সহ-সভাপতি ময়নুল ইসলাম, এফবিসিসিআই’র ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম সহ আরও অনেকে।

সভাপতির বক্তব্যে বিসিএমইএ সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, বর্তমানে দেশে ৩ ক্যাটাগরিতে ৬২ প্ল্যান্ট আছে। সামনে আরও নতুন কোম্পানি আসছে। শুধু তৈরি পোষাক নয়, সিরামিক ইন্ডস্ট্রিতেও বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে অনেক এগিয়ে থাকব। তবে আমাদের কাঁচামালের দাম কমাতে হবে। না হলে প্রতিযোগীতায় পিছিয়ে পড়তে হবে।

সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামের বন্দরে দুই মাসের আগে আমরা মাল খালাস করতে পারিনা। পরিকল্পনা করতে হবে এটা থেকে কিভাবে বের হওয়া যায়। বাকী দুটো বন্দরও কিভাবে কাজে লাগানো যায় সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়কে অনুরোধ করছি।

বিসিএমইএ’র সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দিন বলেন, ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিতর পর থেকেই বিসিএমইএ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে সিরামিক সেক্টরে। ২০টি টেবিলওয়ার ম্যানুফেকচারার থেকে বছরে ২৫০ মিলিয়ন পিস সিরামিক প্রোডাক্ট তৈরি হচ্ছে। ২৬টি টাইলস প্ল্যান্ট থেকে ১২০ মিলিয়ন স্কয়ার মিটার টাইলস এবং ১৬টি স্যানিটারিওয়ার প্রোডাক্ট কোম্পানি থেকে ৭.৫ মিলিয়ন পিস প্রোডাক্ট তৈরি হচ্ছে।

ইরফান উদ্দিন আরও বলেন, বর্তমানে ৫০টি দেশে আমাদের দেশের সিরামিক পণ্য রপ্তানি করছে। এই খাতে এখন সব মিলিয়ে বিনিয়োগের পরিমাণ এক বিলিয়ন ইউএস ডলার এবং বার্ষিক আয়ের পরিমাণ প্রায় ৫০ মিলিয়ন ইউএস ডলার।

এফবিসিসিআই ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, এখন সিরামিক ইন্ডাস্ট্রি লেভেল এক এ আছে। এই মেলা থেকেই শুরু হোক লেভেল দুই এ যাবার প্রক্রিয়া। তা করতে বিসিএমইএ কে সব ধরনের সহযোগীতা দিতে এফবিসিসিআই সর্বদা প্রস্তুত।

সম্পাদনা: আরএ/আরবি/এসকে