
দেশের ঝালকাঠি জেলায় ২০০৭ সালে উত্তর কিস্তাকাঠি মৌজায় ৬৫ একর জমিতে ৩টি ব্যারাকে নির্মাণ করা হয় ৪৫০টি ঘর। এরমধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্প-১ এ ২৫০টি, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এ ১৪০টি ও আশ্রয়ণ প্রকল্প-৩ এ ৬০টি পরিবারকে ঘরের সঙ্গে পৌনে ২ শতাংশ করে জমি বরাদ্দ দেয়া হয়। তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ ঘরগুলো নির্মাণ করে দেয়। নির্মাণের পর থেকে অদ্যবধি সংস্কার করা হয়নি। এ কারণে ঘরগুলো বসবাসের সম্পূর্ণ অযোগ্য হয়ে পরেছে। মরিচা পড়ে নষ্ট হওয়ায় ঘরের টিনের বিকল্প হিসেবে পলিথিন ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন খেটে খাওয়া বাসিন্দারা।
এছাড়া, এখানকার ৪৫০টি পরিবার অস্বাস্থ্যকর ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশের মধ্যে রয়েছে। অস্বাস্থ্যকর টয়লেটের কারণে আবাসনের পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। দেয়াল ও পিলারের পলেস্তারা খসে পড়ে ঘরগুলো হয়ে পড়েছে নাজুক। ঝালকাঠি সদর উপজেলা ত্রাণ পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
জেলা প্রতিনিধি জানায়, সম্প্রতি সরেজমিনে এই আবাসন প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, ইকোপার্ক সংলগ্ন সড়কটি নদীতে নিশ্চিহ্ন হতে চলছে। সড়কের দুই-তৃতীয়াংশ ইতিমধ্যেই ভেঙে গেছে। বাকি অংশ যে কোন সময় ধ্বসে পরার উপক্রম হয়েছে। আবাসনের ভিতরে প্রবেশ করে দেখা যায় বাসিন্দারা দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। ঘরের চালাগুলো মরিচা পরে নষ্ট হওয়ায় পলিথিন দিয়ে বর্ষার পানি ও শীত থেকে বাঁচার চেষ্টা চলছে। পিলারের পলেস্তার খসে পড়ে মরিচা পড়া রড বেরিয়ে গেছে। প্রতি ১০ পরিবারের জন্য বরাদ্দ টয়লেটগুলো অনেক আগেই ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এখানে কোন নর্দমা না থাকায় ময়লা দুর্গন্ধ যুক্ত পানি বাসিন্দাদের ব্যবহৃত পুকুরে পড়ছে। টয়লেটের রিংগুলো ভরে যাওয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। এ কারণে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে এখানকার শিশুসহ নারী পুরুষ সবাই।
আবাসনের বাসিন্দারা সাংবাদিকদের বলেন, আমাগো এখানে থাকার পরিবেশ নেই। সব ঘরের টিন ঝাঝরা হওয়ায় পলিথিন দিয়া লইছি। টয়লেটের টিন না থাকায় খুচরা টিন দিয়া কোন রহম কাজ চালাই। ১০টা পরিবারের জন্য ১টা টয়লেট। ড্রেন না থাহায় আবাসনের সব ময়লা পানি আমাগো পুকুরে পড়ছে। সেই পানি সবাই ব্যবহার করি। রাস্তা ভেঙে নদীতে যাইতে আছে।
এসব সমস্যার বিষয়ে ঝালকাঠি সদর উপজেলার পিআইও জিএম সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আবাসন প্রকল্পে গিয়ে সমস্যা গুলো চিহ্নিত করে চাহিদার জন্য বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
আবাসনের সড়কের বিষয়ে ঝালকাঠির পৌর মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার বলেন, বরাদ্দ পেলেই সড়কটির মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।
সম্পাদনা: এমএইচ/আরএ/এসকে