
দেশের সব সিটি করপোরেশনের গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন-সংক্রান্ত সব কার্যক্রম স্থগিত করেছে সরকার। গৃহকর নির্ধারণ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় এবং অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় এ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি সব সিটি করপোরেশনে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব আবুল ফজল মীর স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারের অনুমতি ছাড়া কেউ এ কার্যক্রম চালু করতে পারবে না। ভবিষ্যতে অনলাইনভিত্তিক অটোমেশন পদ্ধতিতে কর আদায় করা হবে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সব সিটি করপোরেশনের মেয়রকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সরকারের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র জানিয়েছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গৃহকর না বাড়ানোর ব্যাপারে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক সাংবাদিকদের বলেছেন, গৃহকর পুনর্মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অনেকে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। এ কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নেই। নাগরিক সেবা প্রদান কার্যক্রম সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, জনবান্ধব ও অনলাইনে সম্পাদন নিশ্চিত করতেই আমরা গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন-সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম স্থগিত করেছি।
আবদুল মালেক আরও বলেছেন, বর্তমানে সাতটি সিটি করপোরেশনে গৃহকর মূল্য নির্ধারণ ও আদায় কার্যক্রম অটোমেশনের মাধ্যমে সম্পন্ন করার কাজ চলমান। বাকি চারটি সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই এ কার্যক্রম (গৃহকর পুনর্মূল্যায়নের) শুরু করা যাবে।
উল্লেখ্য, মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন (ট্যাক্সেশন) রুলস ১৯৮৬-এর বিধান অনুসারে, প্রতি পাঁচ বছর পরপর গৃহকর নতুন করে নির্ধারিত হওয়ার কথা। স্থানীয় সরকার বিভাগের তথ্যমতে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ২৭ বছর ও সিলেট সিটি করপোরেশন ১০ বছর ধরে গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন করেনি। বাকিগুলোরও পুনর্মূল্যায়নের সময় হয়ে গেছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে কোনো অনুমোদন না নিয়েই সিটি করপোরেশনগুলো গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু করে। গত ৭ আগস্ট ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন শুরু করে। আর গত বছরের ২১ মার্চ চট্টগ্রাম নগরের ১১টি ওয়ার্ডে ‘ভাড়ার ভিত্তিতে’ গৃহকর আদায়ে উদ্যোগ নেয় করপোরেশন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা এখনো চিঠি পাইনি। কিছুটা সমস্যা তো হবেই। অনেকখানি কাজ আমরা করেছি। চিঠি পেলে আলাপ আলোচনা করে ঠিক করব, কী করা যায়।
চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, অটোমেশন হলে সবার জন্যই ভালো হবে। স্বচ্ছতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠবে না।