
অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নাটোরে ‘বীর নিবাস’ নামে বসতবাড়ি নির্মাণ করছে সরকার। এক কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে জেলায় মোট ২৩টি ‘বীর নিবাস’ নির্মাণ কাজের মধ্যে ১৫টির নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট ৮টির নির্মাণ কাজ চলতি অর্থবছরের মধ্যে শেষ হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ‘ভূমিহীন ও অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ প্রকল্প’র আওতায় জেলায় মোট ২৩টি বসতবাড়ী নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে নাটোর সদর উপজেলায় সর্বোচ্চ ৮টি, লালপুরে ৭টি, নলডাঙ্গায় ৪টি এবং গুরুদাসপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলায় ২টি করে। ইতিমধ্যে নাটোর সদর, বাগাতিপাড়া ও গুরুদাসপুর উপজেলার নির্ধারিত ১২টি বীর নিবাস এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন শেষে এর চাবি সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা বা তাঁর উত্তরাধিকারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
নির্মিত বীর নিবাসের মধ্যে গুরুদাসপুর উপজেলার উদবাড়িয়া গ্রামে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রাবেয়া বেগম, গুরুদাসপুর সদরে মুক্তিযোদ্ধা বিশ্বনাথ সরকার এবং বাগাতিপাড়া উপজেলার ক্ষুদ্র মালঞ্চিতে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সমীজান বেওয়া ও করচমাড়িয়া গ্রামে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সুভাগ রাণী মন্ডল বাস করছেন। সম্প্রতি বীর নিবাস এর চাবি বুঝে নেওয়া নাটোর সদর উপজেলার চন্দ্রকোলা গ্রামের পুর্ণিমা বালা এবং ছাতনীর বীরঙ্গনা গোলেজান বেওয়া নতুন বাড়ীতে বসবাসের আনন্দ অভিব্যক্তি প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
৮ শতাংশ জমির উপর প্রতিটি প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এসব পাকা বাড়িতে দুইটি বেডরুম, একটি ড্রইংরুম ও রান্নাঘর আছে। বাড়িতে টয়লেট ছাড়াও কাউশেড ও পোল্ট্রিশেড নির্মাণ করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের তত্বাবধানে বসতবাড়ি নির্মাণের আগে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে গঠিত নির্বাচন বা বরাদ্দ প্রদান কমিটি উপকারভোগী মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের উত্তরাধিকারদের তালিকা প্রণয়ন করে। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী নাটোর সদর উপজেলা প্রকৌশলী তানজীব খান বলেন, উপকারভোগীর তালিকা প্রণয়নে বীরঙ্গণাদের সর্বোচ্চ অগ্রধিকার প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, পর্যায়ক্রমে এই নীতিমালায় রয়েছেন- মুক্তিযোদ্ধাদের বিধবা স্ত্রী, উপার্জনক্ষম ছেলেবিহীন মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, কৃষি জমিবিহীন মুক্তিযোদ্ধা, অসম্মানজনক পেশায় নিয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা। যাচাই-বাছাই শেষে কমিটি সভায় মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়।
নাটোর এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী সুবাস কুমার সরকার সাংবাদিকদের বলেন, নির্মিতব্য অবশিষ্ট ৮টি বীর নিবাসের নির্মাণ কাজ চলতি অর্থবছরের মধ্যে শেষ হবে। বড়াইগ্রাম ও সিংড়া উপজেলায় তালিকা চূড়ান্ত হলে দ্রুত এর কাজ শুরু করা হবে।
সম্পাদনা: এমজেআর/জেডএইচ/আরবি