আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
রিহ্যাব ফেয়ারে ছোট-মাঝারি ফ্ল্যাটের চাহিদাই বেশি

রাজধানী ঢাকায় একটি বাড়ি করার স্বপ্ন কার-ই না থাকে। তাই সাধ আর সাধ্যমত পছন্দের আবাস খুঁজে পেতে বাড়ি, প্লট বা জমির খোঁজে অনেকেই ভিড় করেছেন আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) আয়োজিত আবাসন মেলায়। ক্রেতারা দাম, বুকিং মানি, ডাউন পেমেন্ট, প্রকল্পের অবস্থান সম্পর্কে খোঁজ খবর নিচ্ছেন। অধিকাংশ ক্রেতাই মাঝারি আকারের ফ্ল্যাট খুঁজছেন। মাঝারি মানে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট। দাম এক থেকে দেড় কোটি টাকার মধ্যে। ছোট আকারের ফ্ল্যাটের চাহিদাও আছে। তবে আবাসন প্রতিষ্ঠানের কাছে মাঝারি আকারের ফ্ল্যাটের সংখ্যাই বেশি। দরদামে মিলে গেলে অনেকেই সংশ্লিষ্ট প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন। আবাসন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারাও সেটির ব্যবস্থা করছেন।

ক্রেতারা বলছেন, এক সঙ্গে অনেক প্রতিষ্ঠান থাকায় যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অনেকেই আবার তৈরি ফ্ল্যাট খুঁজছেন। কয়েক মাসের তুলনায় দাম বেড়েছে বলেও জানান তাঁরা। এদিকে, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি, পূর্বের তুলনায় কম সুদে ঋণ-সুবিধা প্রাপ্তি, সরকারি আবাসন ঋণ উন্মুক্ত থাকায় ফ্ল্যাট ও প্লট ক্রয়ে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন মেলায় বিভিন্ন স্টলের দায়িত্বরত ব্যক্তিরা। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রিহ্যাব ফেয়ারের তৃতীয় দিন শনিবার এ চিত্র দেখা যায়।

গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে রিহ্যাব মেলা ২০১৭। চলবে আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এবারের ফেয়ারে ২০৫টি স্টল রয়েছে। এই ফেয়ারে ৩০টি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ও ১৩ অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। আর কো-স্পন্সর হিসেবে আছে মোট ২৪টি প্রতিষ্ঠান। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিআইসিসিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে রিহ্যাব ফেয়ারের উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

আয়োজকরা জানান, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের আয়ের সাধ-সাধ্যের সমন্বয় করতে এই মেলার আয়োজন। মেলা আয়োজনের মাধ্যমে এক ছাতার নিচেই আবাসনের সব সেবা দেওয়া হচ্ছে। রাজধানীর ব্যস্ততম মানুষ একনজর এসে সব কিছুই জানতে পারছে।

আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, এবারের মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীর উপস্থিতি বেশ ভালো। প্রথম ও দ্বিতীয় দিনের মতো আজ শনিবার সকাল থেকেই মেলায় আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপস্থিতি বেশ লক্ষ্যণীয় বিকেল গড়াতে তা আরও বাড়ে। প্রথম দিন বৃহস্পতিবার উদ্বোধনের পর দুপুর ২টার পর থেকে আধাবেলা চালু ছিল মেলা। এতে মেলায় দর্শনার্থীদের উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও পরিপূর্ণ রূপ পায় শুক্রবার ছুটির দিন। সকালে মানুষের কিছুটা ভিড় থাকলেও বিকেলে পরিপূর্ণ হয়ে যায় মেলা প্রাঙ্গণ।

মেলার তৃতীয় দিন বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখা গেছে, সব স্টলেই মানুষের ভিড়। সবাই প্লট ও ফ্ল্যাটের খোঁজ নিচ্ছেন। ক্রেতাদের অনেকে তথ্য নিয়ে পরে যোগাযোগ করবেন—এমন কথা বলে চলে যাচ্ছেন। আর কেউ কেউ বুকিংও দিচ্ছেন। স্টলের পক্ষ থেকে রেজিস্টার খাতায় ঠিকানা ও যোগাযোগের নম্বরও রেখে দেওয়া হচ্ছে। মেলা প্রাঙ্গণে ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, কনকর্ড, বিল্ডিং টেকনোলজি অ্যান্ড আইডিয়াজ লিমিটেড (বিপিআই), নাভানা রিয়েল এস্টেট, আমিন মোহাম্মদ, আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক, ভরশা হাউজিং এ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেড, পূর্বাচল মেরিন সিটি, মালুম সিটি, ও আসোসিয়েটেড বিল্ডার্স করপোরেশন লিমিটেডের (এবিসি) স্টলে ছিল লক্ষণীয় ভিড়।

মেলায় মধ্যম আয়ের মানুষের পদচারণই বেশি দেখা যায়, যাঁরা সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। নিজের জমানো অর্থ কিংবা চাকরির বেতনের বিপরীতে ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট কিনতে চান। ১০০০-১২০০ কিংবা ১২০০-১৪০০ বর্গফুটের মাঝারি আকারের ফ্ল্যাটে আগ্রহ বেশি। আবাসিক ভবনের পাশাপাশি বাণিজ্যিক ভবনেরও চাহিদা রয়েছে।

রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফুট রাস্তার পাশে প্লটের পসরা নিয়ে বসেছে ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট (প্রা.) লিমিটেড। জি, এইচ, আই, জে, এল আর কিউ ব্লকে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। কিউ ব্লকের প্লট বুকিংয়ে রয়েছে পাঁচ লাখ টাকা ছাড়। এই ব্লকে প্রতি কাঠা জমির দাম ২৫ লাখ টাকা হলেও পাঁচ লাখ টাকা ছাড়ে ২০ লাখ টাকায় বরাদ্দ নেওয়া হচ্ছে। তিন, চার ও পাঁচ কাঠার প্লটে এক লাখ টাকায় নগদ বুকিং আর ৫০ মাসের কিস্তিতে মূল্য পরিশোধ করা যাবে।

প্রতিষ্ঠানটির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (মার্কেটিং) কামরুল আহসান বলেন, বসুন্ধরার ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টির সব প্লটই প্রস্তুত। ভবন নির্মাণের উপযোগী। কিউ ব্লকের প্লটে কাঠাপ্রতি পাঁচ লাখ টাকা ছাড় দেওয়া হচ্ছে। আর অন্যান্য প্লটের বুকিংয়ে এককালীন মূল্য পরিশোধ করতে হবে।

রাজধানীর শ্যামলীর একজন স্ত্রীসহ মেলায় এসেছেন একটি প্রস্তুত করা ফ্ল্যাট কিনতে। দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই নিজ ফ্ল্যাটে উঠতে পারেন এমন ফ্ল্যাট খুঁজছেন তিনি। স্টলে স্টলে ঘুরে ফ্ল্যাট দেখছেন। তিনি বলেন, ‘সরকারি একটি সংস্থায় চাকরি করি। স্ত্রীও চাকরি করে। ১৫ থেকে ২০ বছরের চাকরিজীবনে কিছুই করতে পারিনি। বছরের পর বছর ভাড়া বাসাতেই থাকতে হয়েছে। এখন নিজস্ব একটা ফ্ল্যাট প্রয়োজন। তবে সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করতে পারব না। নগদ কিছু অর্থ আর বাকি টাকা ঋণ নিয়ে নিজের ফ্ল্যাটে উঠতে চাই। ১২০০-১৫০০ বর্গফুটের বাসা খুঁজছেন তিনি।

আকাশ ডেভেলপমেন্টের মার্কেটিং ও সেলস এক্সিকিউটিভ পিয়াস বিশ্বাস বলেন, মেলায় মধ্যম আয়ের ক্রেতা বেশি। তাঁদের আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তাঁরা মধ্যম বা মাঝারি আকারের ফ্ল্যাট খুঁজছেন। বাণিজ্যিক ফ্ল্যাটের চাহিদা থাকলেও মাঝারি আকারের ফ্ল্যাটের চাহিদা বেশি।

বিল্ডিং টেকনোলজি অ্যান্ড আইডিয়াজের কর্মকর্তা মঈনুদ্দীন জুবায়ের বলেন, ১২০০-১৫০০ বর্গফুট ফ্ল্যাটে ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। স্থানভেদে ফ্ল্যাটের দামও ভিন্ন। মধ্যম আয়ের ক্রেতারা মোটামুটি দামের ফ্ল্যাট কিনতেই আগ্রহী। মেলায় ক্রেতাদের সাড়া ভালোই।

এবারের আবাসন মেলায় কমপ্রিহেনসিভ হোল্ডিংস ২৭টি প্রকল্পের ১৬০টি ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য প্রদর্শন করছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রকল্পগুলো রাজধানীর লালমাটিয়া, ধানমন্ডি, সেন্ট্রাল রোড, মিরপুর, জিগাতলা, নাজিম উদ্দিন রোড, উত্তরা ও বনানী এলাকায়। কমপ্রিহেনসিভের সর্বনিম্ন ১ হাজার ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৮২০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটগুলোর প্রতি বর্গফুটের দাম প্রকল্পভেদে ৭ হাজার থেকে ১৩ হাজার টাকা।

জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক (উদ্ভাবন ও পরিকল্পনা) কাজী সামসুল আলম বলেন, ক্রেতাদের অর্ধেকই ১,২০০-১৫০০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট খুঁজছেন। মাঝারি আকারের পর্যাপ্ত ফ্ল্যাট থাকায় আমরা চাহিদা মেটাতে পারছি। মেলা উপলক্ষে প্রতি বর্গফুটে ৩০০-৪০০ টাকা ছাড় দেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন তিনি।

অ্যাসুরেন্স ডেভেলপমেন্টস ২১টি প্রকল্পে এক হাজারের বেশি ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য এনেছে। তাদের ফ্ল্যাটের আয়তন ১ হাজার ১৯০ বর্গফুট থেকে ২ হাজার ৬৬৫ বর্গফুট। আর প্রতি বর্গফুটের দাম সাড়ে ৭ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত। অ্যাসুরেন্সের ফ্ল্যাটগুলো উত্তরা, বারিধারা, গুলশান, বনানী, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি ও বংশাল এলাকায়। মহাখালীর আমতলী এলাকায় তাদের একটি বাণিজ্যিক স্পেসের প্রকল্প আছে। প্রতি বর্গফুটের দাম ৬০ হাজার টাকা।

প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ নির্বাহী (বিক্রয়) কাজী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ক্রেতারা এক থেকে দেড় কোটি টাকার মধ্যে ফ্ল্যাট কিনতে চান। একই সঙ্গে তাঁরা রেডি ফ্ল্যাট চাইছেন। আমরা সেই চাহিদা পূরণ করতে পারছি। মেলায় এখন পর্যন্ত ভালো সাড়া পাওয়া গেছে।

খেলার মাঠ, বিদ্যালয়, ব্যায়ামের জায়গা, ক্লাব হাউসসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে মিরপুরের পুলিশ কনভেনশন হলের পেছনে ৫০ বিঘা জায়গার ওপর গড়ে উঠছে বিজয় রাকিন সিটি। সেখানে ১৫টি ভবনে আছে ১ হাজার ৯০০ ফ্ল্যাট। এসব ফ্ল্যাটের আয়তন ১ হাজার ৫৫৩ ও ১ হাজার ৮৭২ বর্গফুট। প্রতি বর্গফুটের দাম ৬ হাজার ২০০ থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত।

রাকিন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির সহকারী ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) মাহবুব আলম বলেন, বিজয় রাকিন সিটির ৮৫ শতাংশ ফ্ল্যাট ইতিমধ্যে বিক্রি হয়েছে। বাকিগুলো মেলায় বিক্রি করছি। আগামী জুন থেকে এসব ফ্ল্যাট হস্তান্তর শুরু হবে। ক্রেতাদের কাছে ভালো সাড়া পাওয়ায় কাঁচপুরে আমরা ১৫০ বিঘা জমিতে নতুন আরেকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি।

মিরপুর, বসুন্ধরা ও উত্তরা এলাকার তিনটি প্রকল্পের ৩৬টি ফ্ল্যাট এবং পূর্বাচল ও মাওয়া রোডের প্লট বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছে এশিয়ান টাউন ডেভেলপমেন্ট। মিরপুরে তাদের ১ হাজার ৪১০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুটের দাম ৪ হাজার ২০০ টাকা। উত্তরা ও বসুন্ধরায় ১ হাজার ৪০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট আছে এশিয়ানের। উত্তরায় প্রতি বর্গফুটের দাম ৮ হাজার ও বসুন্ধরায় প্রতি বর্গফুট ৬ হাজার ৫০০ টাকা। পূর্বাচলের প্রতি কাঠা জমির দাম ৮-১০ লাখ ও মাওয়ায় প্রতি কাঠা সাড়ে ৫ লাখ থেকে সাড়ে ৬ লাখ টাকায় বিক্রি করছে এশিয়ান। এ ছাড়া পূর্বাচল এলাকায় ৫ কাঠা জমিসহ দোতলা বাড়ি আছে তাদের। প্রতিটির দাম দেড় কোটি টাকা।

জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির উপব্যবস্থাপক (মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস) সবুজ হোসেন বলেন, আমরা মেলায় মিরপুরের প্রকল্পের একটি ফ্ল্যাট বিক্রি করেছি। আরও কয়েকজন আমাদের প্রকল্প দেখে এসেছেন। আশা করছি, সামনের দিনগুলোতে বিক্রি বাড়বে।

অন্যদিকে, পূর্বাচল মেরিন সিটি বুকিং মানিতে পার কাঠা ১০,০০০ টাকায় প্লট দিচ্ছে। পূর্বাচল মেরিন সিটি বাংলাদেশের এক এবং একমাত্র আবাসন প্রকল্প যা রাজউক পরিকল্পিত মেগাসিটি পূর্বাচল নিউ টাউননের সেক্টর- ২১, ২২ ও ৩০ দ্বারা পরিবেষ্টিত এবং জিন্দা পার্ক সংলগ্ন। এদিকে, খুব অল্প সময়ের মধ্যে তিন শতাধিক প্লট হস্তান্তরের উপযোগী করে তুলেছে পূর্বাচল মেরিন সিটি, যা শিগগিরই হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে।

প্লট হস্তান্তরের বিষয়ে পূর্বাচল মেরিন সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন মো: শাহ আলম আবাসন বার্তার এই প্রতিবেদক রাজু আহমেদকে বলেছেন, প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয় ২০১০ সালের আগস্টে। তিনি বলেন, অতি আনন্দের বিষয় পূর্বাচল মেরিন সিটি ইতিমধ্যে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ৩০০ প্লট হস্তান্তরের উপযোগী করে তুলেছে। অতি শিগগিরই প্লটগুলো ক্রেতাদের মাঝে হস্তান্তর করা হবে।

ক্যাপ্টেন মো. শাহ আলম আরও বলেন, পূর্বাচল মেরিন সিটি মূলত একটি কমিউনিটি ভিত্তিক আবাসন প্রকল্প। শুধুমাত্র এই প্রকল্পেই আছে নানাবিধ পেশার লোকদের স্বতন্ত্র ও আলাদা আবাসিক জোন। যেমন- ক্যাপ্টেন্স হোম, ইঞ্জিনিয়ারস ভিলা, চ্যার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ভিলা ইত্যাদি। এসব পেশার লোকদের একসাথে বসবাসের সুযোগে এ প্রকল্পে আবাসনের ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। আপনিও আপনার পেশার লোকদের নিয়ে কিংবা স্বতন্ত্রভাবে থাকার সুযোগ নিতে পারেন।

পূর্বাচল মেরিন সিটি সূত্রে জানা যায়, ক্যাশ পেমেন্ট ২৫% ছাড়সহ ৩ দিনের মধ্যে সাফ কাবলা এবং প্লট বুঝিয়ে দেয়া হয়। পূর্বাচল মেরিন সিটি সম্পর্কে যেকোনো তথ্য এবং প্রকল্প পরিদর্শনের জন্য ০১৬ ১৭৫ ১৭৫ ২৫ এই নম্বরে যোগাযোগ করার কথা জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।

প্রকল্পের অবস্থা : “পূর্বাচল মেরিন সিটি” দেশের এক এবং একমাত্র আবাসন প্রকল্প যা রাজউক পরিকল্পিত মেগাসিটি পূর্বাচল নিউ টাউনের ২১, ২২ ও ৩০ নম্বর সেক্টর দ্বারা পরিবেষ্টিত। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে ১০ কি.মি দূরত্বের মধ্যে। ১৮০ ফুট এশিয়ান হাইওয়ে/ঢাকা বাইপাস এর সাথে লাগানো। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মাত্র ১০ মিনিটের ড্রাইভ। নয়নাভিরাম ইকোপার্ক “জিন্দা” লাগানো। লাল শক্ত উচু মাটি বলে ভরাট/পাইলিংয়ের প্রয়োজন হবে না।

প্রকল্পের কর্মকর্তারা বলেছেন, সবাই বলে লেক বানিয়ে দিব- আমরা বলি, আমাদেরটা এখনই তৈরি। কেউ কেউ পার্কের কথা বলে, আমরা বলি, পার্কের পাশেই আমাদের বাস। এছাড়া, অনেকেই বলে ভরাট হবে এইতো এখনি, আমরা বলি, কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ, আমাদের ভূমি প্রাকৃতিক ভাবেই উঁচু।

রিহ্যাব কর্মকর্তারা আবাসন বার্তাকে বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে আবাসন ব্যবসায় একধরনের মন্দা চলছে। এবারের মেলা আবাসন ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াতে ভূমিকা রাখবে।

পূর্বাচল মালুম সিটি:
পূর্বাচল মালুম সিটি মেলা উপলক্ষে এককালীন প্লট ক্রয়ে ৩০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে। রাজউক পূর্বাচলের ৪ ও ২১ নম্বর সেক্টর সংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে আধুনিক সুপরিকল্পিত আবাসন পূর্বাচল মালুম সিটি। মালুম সিটির মার্কেটিং ম্যানেজার মেসকাত হোসাইন বলেন, তাদের এ অফার চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্প পরিদর্শনের জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

হামিদ রিয়েল এস্টেট: প্রিয়প্রাঙ্গণসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ১০টি প্রকল্প নিয়ে মেলায় এসেছে হামিদ রিয়েল এস্টেট। বাড্ডা, নর্দ্দা বারিধারা, মালিবাগ চৌধুরীপাড়া, উত্তরা এলাকায় অবস্থিত এসব প্রকল্প। ১ হাজার ২৭৬ বর্গফুট থেকে ২ হাজার ২০০ বর্গফুট আয়তনের এসব ফ্ল্যাট। প্রতি বর্গফুটের দাম ৫ হাজার ৮০০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

উত্তরাতেই প্রিয়প্রাঙ্গণের পাঁচটি প্রকল্প। উত্তরার ৩, ৭, ৯ ও ১০ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত এসব প্রকল্পে সর্বনিম্ন ১ হাজার ৮২৫ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট আছে।

মেলায় বেশ ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে হামিদ গ্রুপের সহকারী ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) আমজাদ হোসেন বলেন, প্রিয়প্রাঙ্গণের বেশির ভাগ প্রকল্পের ফ্ল্যাট ছোট ও মাঝারি আয়তনের। মধ্যবিত্তদের কথা মাথায় রেখেই এসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

অ্যাসোসিয়েটেড বিল্ডার্স করপোরেশন (এবিসি): গুলশান, উত্তরা, বারিধারা, উত্তরা, মিরপুর, বেইলি রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় থাকা প্রকল্পগুলো নিয়ে মেলায় হাজির হয়েছে এবিসি লিমিটেড। ১ হাজার ৪০০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট রয়েছে এসব প্রকল্পে। নাখালপাড়া, মিরপুর সেনপাড়া এবং উত্তরা এলাকায় থাকা প্রকল্পের ফ্ল্যাটগুলো মাঝারি আয়তনের। প্রতি বর্গফুটের দাম ৬ হাজার ৫০০ থেকে ২৪ হাজার টাকা পর্যন্ত।

এবিসি লিমিটেডের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) মোহাম্মদ আক্কাস আলী বলেন, মেলা উপলক্ষে ৫ লাখ টাকায় ফ্ল্যাট বুকিং দিলে কিচেন কেবিনেট ও কিস্তিতে মূল্য পরিশোধে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

ইস্টার্ন হাউজিং: এবারের মেলায় মোট ১১টি আবাসিক প্রকল্প নিয়ে এসেছে ইস্টার্ন হাউজিং। আর তিনটি বাণিজ্যিক প্রকল্প। মেলা উপলক্ষে বিশেষ ছাড় দিচ্ছে ইস্টার্ন হাউজিং।

ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ব্যবস্থাপক সুমন কুমার সাহা বলেন, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের আবাসিক প্রকল্পে ১ হাজার ৩৯ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট পাওয়া যাচ্ছে। বনানীতে অবস্থিত ইস্টার্ন লিমিটেডের প্রকল্পটিতে ২ হাজার ৪০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট আছে। রমনার সার্কিট হাউস রোড, লালমাটিয়া, উত্তরা, নিকেতন, বনানী, বারিধারা, বসুন্ধরায় অবস্থিত ইস্টার্ন হাউজিংয়ের আবাসিক প্রকল্পগুলো। এছাড়া গুলশান, বিজয়নগর এবং কমলাপুরে বাণিজ্যিক ভবনের প্রকল্পও মেলায় এনেছে ইস্টার্ন হাউজিং।

ক্রিডেন্স হাউজিং: গ্রিন রোড, মোহাম্মদপুর, লালমাটিয়া, ইন্দিরা রোড, মিরপুরে অবস্থিত ক্রিডেন্সের প্রকল্পগুলোতে ১ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট রয়েছে। মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনা করেই এসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। মূল্য পরিশোধের পদ্ধতির ওপর ফ্ল্যাটের দাম নির্ভর করবে বলে ক্রিডেন্সের কর্মকর্তারা জানান।

ক্রিডেন্সের ব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম বলেন, মেলায় মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আসা দর্শনার্থী বেশি থাকে। তাঁদের চাহিদাও থাকে ছোট ও মাঝারি ফ্ল্যাট। তাঁদের কথা ভেবেই ক্রিডেন্স ছোট ও মাঝারি আয়তনের ফ্ল্যাট প্রকল্প এনেছে।

 

সম্পাদনা: আরএ/আরবি/এসকে