
উত্তরা এপার্টমেন্ট প্রকল্পের ২ হাজার ৬ শত ২১ জন বরাদ্দ গ্রহীতাকে লটারীর মাধ্যমে ফ্ল্যাটের আইডি নম্বর প্রদান করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। রোববার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রকল্পের ‘এ’ ব্লকে যে সকল বরাদ্দ গ্রহীতা ৪র্থ কিস্তি পর্যন্ত পরিশোধ করেছেন তাঁদের মধ্যে ডিজিটাল পদ্ধতিতে লটারির মাধ্যমে ফ্ল্যাটের আইডি নম্বর প্রদান করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন মো: দবিরুল ইসলাম এম.পি ও সভাপতি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি, একেএম ফজলুল হক এমপি, নূর ই হাসনা লিলি এমপি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রাজউক চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান।
উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের ‘এ’ ব্লকে ১৮ নং সেক্টরে ১৬৫৪ বর্গফুট আয়তনের মোট ফ্ল্যাট সংখ্যা ৬ হাজার ৬৩৬টি। ৬ হাজার ৬৩৬ ফ্ল্যাটের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে ফ্ল্যাট বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে ৫ হাজার ৬১৪টি। ফ্ল্যাটগ্রহিতা চার কিস্তি টাকা পরিশোধ করেছেন ১৮৩২ জন। এর মধ্যে হস্তান্তর উপযোগী ৮৪০টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ৩টি ফ্ল্যাট আইডি এস এ গেমসে স্বর্ণজয়ী তিনজনকে দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে। বাকি ৮৩৭টি ফ্ল্যাটের আইডি গত ১০ সেপ্টেম্বর/১৭ তারিখে ১ম লটারির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। সভার শুরুতে রাজউক চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান বলেন, ‘এক সময় মানুষ শঙ্কায় ছিলেন কোনো দিন তারা ফ্ল্যাট পাবে কি না। সেই শঙ্কা এখন কেটে গেছে। তিনি বলেন, ‘এবার যাঁরা ফ্ল্যাট পাবেন না তাদের ভয়ের কিছু নেই।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে যাঁরা চার কিস্তি টাকা পরিশোধ করবেন তাঁরা মার্চের প্রথম সপ্তহে ফ্ল্যাট বুঝে পাবেন।’ জনাব রহমান বলেন, উত্তরা এপার্টমেন্ট এর সকল রাস্তার টেন্ডার হয়ে গেছে। শীঘ্রই রাস্তা নির্মাণ হয়ে যাবে। এছাড়া এই প্রকল্পের যোগাযোগ সহজ করার জন্য উত্তরা জসিম উদ্দিন সড়কের সঙ্গে সংযোগ দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে মিরপুরের সঙ্গেও যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, পূর্বাচল প্রকল্পের ভেতরে মেট্রোরেলের কাজ চলছে। যা উত্তরা প্রকল্পের মধ্য দিয়ে যাবে। এখানে নিত্য প্রয়োজনীয় আর কি কি দরকার এ বিষয়ে ফ্ল্যাটের মালিকদের জানানোর অনুরোধ জানিয়েছেন রাজউক চেয়ারম্যান। সবার জন্য আবাসন স্লোগান নিয়ে রাজউকের মাধ্যমে রাজধানীবাসীকে বসবাসের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে এমন কথা উল্লেখ করে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, ‘প্লট বরাদ্দ দেওয়ার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে। এখন থেকে উঁচু বিল্ডিং নির্মাণ করে সবার বসবাসের ব্যবস্থা করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘রাজধানীর ঝিলমিল প্রকল্পে আরো ১৪ হাজার ৫০০ এবং পূর্বাচল প্রকল্পে ৭০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বস্তিবাসী স্থানীয় মাস্তানদের টাকা দেয়। অবৈধ ভাবে গ্যাস, বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়। এসব কাজে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়।
তার থেকে কম টাকা খরচ হবে রাজউকের বিল্ডিংয়ে বসবাস করতে।’ প্রথমবারের মতো স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মাধ্যমে ২৫ বছয় মেয়াদি ৮ দশমিক ৫ শতাংশ সুদে লোন নিয়ে ফ্ল্যাটের মূল্য পরিশোধ করার সুযোগ পাবেন। প্রতিটি ফ্ল্যাটে ৩টি বেড রুম, একটি লিভিং রুম, একটি ডাইনিং রুম, একটি ফ্যামিলি লিভিং, ৪টি বারান্দা, ৪টি টয়লেট ও কিচেন রয়েছে। এ ছাড়া ২০ জন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ২টি উন্নতমানের লিফট রয়েছে। ভবনে ১টি প্রধান সিঁড়ি ও ২টি অগ্নিনির্বাপক সিঁড়ি রয়েছে। প্রকল্পের ‘এ’ ব্লকের প্রতিটি ভবনে একটি বেজমেন্ট, গ্রাউন্ড ফ্লোর ও ১৪টি ফ্লোর রয়েছে। ১৪টি ফ্লোরের প্রতিটিতে নেট ১২৭৬ বর্গফুট (গ্রস ১৬৫৪ বর্গফুট) এর ৬টি ফ্ল্যাট রয়েছে। প্রতিটি ভবনে ৮৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে। বর্তমানে স্বল্প সংখ্যক ফ্ল্যাট বরাদ্দের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে এবং আবেদনের মেয়াদ ২৯ মার্চ পর্যন্ত রয়েছে। ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুটের দাম ধরা হয়েছে ৪৮০০ টাকা।