
ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংখ্যা কত তা সংশিস্নষ্ট কর্তৃপক্ষ জানে না বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজের সভাপতি অধ্যাপক নজরম্নল ইসলাম। তিনি বলেন, গবেষণার কাজে কাগজপত্র ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণের সীমানা পেয়েছেন। কিন্তু এই দুই এলাকায় জনসংখ্যা কত তার কোনো তথ্য তিনি খুঁজে পাননি। এর ফলে সংশিস্নষ্টরা আদৌ তাদের দায়িত্ব পালন করছেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) আয়োজিত ‘জলাবদ্ধতা: বিপর্যস্ত্ম নগর ও গ্রামীণ জীবন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নজরম্নল ইসলামের প্রশ্ন, শহরাঞ্চলে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্ত্মবায়নের জন্য রাজউক, ওয়াসাসহ প্রভৃতি সংস্থা রয়েছে কিন্তু আদৌ কি তারা তাদের কাজগুলো পরিকল্পনা মাফিক করতে পারছেন?
তবে রাজউকের কিছু কিছু পরিকল্পনা বাস্ত্মবায়নে রাজউকের জনবলের সত্যিই অভাব রয়েছে বলেও তিনি জানান।
তিনি বলেন, পূর্ব ঢাকার বিশাল এলাকা একসময় বন্যাকবলিত থাকত। সেখানে এখন কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রী সেখানকার বিষয়ে একটি ব্যয়বহুল সমাধান দিয়েছেন। নিকুঞ্জ থেকে পূর্বাচল তিনশ ফুট রাস্ত্মার পাশে একশ ফুট খাল করার পরিকল্পনা করা হয়েছে যা শহরের সব জলাবদ্ধ জায়গার পানি টেনে নিতে পারবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন প্রধানমন্ত্রীকে তার মুখ থেকে এমন পরিকল্পনার কথা বলতে হবে? তাহলে পরিকল্পনা সংস্থাগুলো কী করছে?
একটি পরিকল্পনার বিষয়ে চূড়ান্ত্ম সিদ্ধান্ত্ম কে কোথায় কীভাবে নেবেন তা এ সংশিস্নষ্ট মন্ত্রী বা তাদের অধীন সংস্থাগুলোকে দিয়ে করাতে হবে বলেও তিনি জানান।
অধ্যাপক নজরম্নল ইসলাম বলেন, গবেষণার কাজে ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে কাগজপত্র ঘেঁটে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণের সীমানা পেয়েছেন কিন্তু এই দুই এলাকায় জনসংখ্যা কত তার কোনো তথ্য তিনি খুঁজে পাননি। কয়েকবার তথ্য চাওয়ার পর তারা জানালো ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংখ্যা ১ কোটি ২০ লাখ। তাহলে উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংখ্যা কত? তার কাছে আগে যে তথ্য ছিল সেই তথ্য অনুসারেই তো উভয় সিটির জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখের বেশি ছিল। অথচ এমন মামুলি বিষয়ে তারা কোনও সঠিক তথ্য দিতে পারলো না। তারা তাদের ইচ্ছামত তথ্য দিল। এখানে তার প্রশ্ন, তাহলে সংশিস্নষ্টরা কি আদৌ তাদের দায়িত্ব পালন করছেন?
বাংলাদেশের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের একটি ডেল্টা পস্ন্যান (ডেল্টা পরিকল্পনা) চুক্তি হয়েছে। চুক্তিটি বাস্ত্মবায়নে কাজ চলছে। যে দেশ এত বড় একটি পরিকল্পনা করতে পারে সেখানে বুঝতে হবে বাংলাদেশের চিন্ত্মা কতটা ওপরে হতে পারে।
শহরাঞ্চলের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা বাস্ত্মবায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, এসব পরিকল্পনা বাস্ত্মবায়ন করতে হলে অবশ্যই সংশিস্নষ্ট ক্ষেত্রগুলোতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যার যা দায়িত্ব আছে তা নিয়ে তারা কাজ করছে কিনা সেদিকে ঊর্ধ্বতনদের লক্ষ্য রাখতে হবে। তাহলে এসব পরিকল্পনা বাস্ত্মবায়ন সম্ভব হবে।
প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের সহযোগী সভাপতি শামসুল হুদা, স্থপতি ইকবাল হাবিব, ড. আকতার মাহমুদ, চট্টগ্রামের নগর পরিকল্পনাবিদ সৈয়দ জেরিনা হোসেন, তফাজ্জল সোহেল, ইকবাল কবির জাহিদ, প্রফেসর ড. ইশরাত ইসলাম।