আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
প্রত্যেক জেলায় হচ্ছে ত্রাণ গুদাম

দেশের প্রত্যেক জেলায় ‘ত্রাণ গুদাম-কাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র’ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। দুর্যোগ কবলিত এলাকায় দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর নিকট দ্রুত ত্রাণসামগ্রী ও মানবিক সহায়তা পৌঁছানো এবং দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসকল্পে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে গত মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ১২৭ কেটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয়ের একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। প্রকল্পের আওতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম তদারকি করার নিমিত্তে জেলা পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় সেলও স্থাপন করা হবে।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গণমাধ্যমকে বলেছেন, ত্রাণসামগ্রী সরবরাহের নিমিত্তে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ গড়ে তোলা এবং দুর্যোগের সময় জরুরীভিত্তিতে সাড়াদানের জন্য প্রয়োজনীয় অকবাঠামো তৈরির লক্ষ্যে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। এর আওতায় ঢাকা ও পটুয়াখালী জেলায় ২টি করে এবং অন্য ৬২ জেলায় একটি করে মোট ৬৬টি ত্রাণ গুদাম নির্মাণ করা হবে। এতে দুর্যোগের সময় জরুরীভিত্তিতে ত্রাণ সহায়তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দুর্যোগ কবলিত এলাকায় দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর নিকট দ্রুত ত্রাণ সামগ্রী ও মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে সম্ভব বলে আশা প্রকাশ করেন কামাল।

প্রকল্প প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ পৃথিবীর একটি দুর্যোগ প্রবণ দেশ। প্রতি বছর বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদী-ভাঙ্গন, অগ্নিকান্ড, বজ্রপাত, ভূমিকম্পসহ বিভিন্ন দুর্যোগে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী দেশটির মধ্যবর্তী অঞ্চলে বন্যা, নদী ভাঙ্গন ও জলাবদ্ধতা, উত্তর অঞ্চলে প্রচন্ড শীত ও খরা এবং উপকূলীয় অঞ্চলে সাইক্লোন ও জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানে। এ সমস্ত দুর্যোগে ক্ষয়-ক্ষতি হ্রাসের জন্য দুর্যোগের পূর্বাভাস প্রদান, ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপণ এবং দুর্যোগ পরবর্তী সহায়তা প্রদান ও পুনর্বাসন কার্যক্রম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর করে থাকে।

তবে এ সকল দুর্যোগে ত্রাণ সামগ্রী দ্রুত পৌঁছানোর লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে সংরক্ষণের জন্য কোন গুদাম নেই। প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অস্থায়ীভাবে অপর্যাপ্ত পরিসরে এবং কোন কোন জেলায় পরিত্যক্ত ভবনে ত্রাণ সামগ্রী যেমন- ঢেউটিন, তাঁবু, কম্বল এবং অন্যান্য শীত বস্ত্র, শুকনা খাবার, রান্না করা বিভিন্ন সরঞ্জামাদি সংরক্ষণ করা হয়।

ফলে এসব ত্রাণসামগ্রী গুণাগুণ নষ্ট ও চুরি হয়ে যায়। এ কারণে ত্রাণ সামগ্রী সংরক্ষণ ও সুষ্ঠুভাবে সরবরাহের লক্ষে ‘জেলা ত্রাণ গুদাম কাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রকল্প ব্যয়ের পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। জানুয়ারি, ২০১৭ হতে ডিসেম্বর, ২০১৯ মেয়াদে এটি বাস্তবায়ন হবে। ৬৬টি ত্রাণ গুদাম কাম তথ্য কেন্দ্র প্রত্যেকটির আয়তন হবে ৫ হাজার ৪২৬ বর্গফুট, প্রতিটিতে ১৫শ’ ওয়াটের সোলার সিস্টেম স্থাপন এবং ১টি জিপ ও ২টি ডাবল কেবিন পিকআপ গাড়ি সংগ্রহ করা হবে।

সম্পাদনা: এফএইচ/আরএ/এমএন