
রাজধানীর পুরান ঢাকার লালবাগ কেল্লার সীমানার মধ্যে অবৈধভাবে গড়ে তোলা দুটি বাড়ি উচ্ছেদ করেছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। আদালতের নির্দেশে প্রত্নতত্ত্বঅধিদপ্তরের সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে এই অভিযান চালানো হয়। ৬ দশমিক ২ শতক জায়গা জুড়ে থাকা বাড়ি দুটি উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদ এলাহী। এ সময় দুই বাড়ির মালিক হাজী মো. আবুল হাশেম ও মো. হারুনুর রশীদ উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘদিন মামলা চলার পর আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমেই এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হলো বলে জানিয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব অসীম কুমার দে সাংবাদিকদের জানান, বাড়ি দুটি নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা চলছিল। ২০১৭ সালের ৩১ মে সুপ্রিম কোর্ট প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের পক্ষে রায় দেন। সেখানে তিন মাসের মধ্যে স্থাপনা দুটি অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়। উচ্ছেদ করার আগে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর যেন এ দুই বাড়ির মালিককে ৪০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয় সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
অসীম কুমার দে জানান, আবুল হাশেম তাঁর ক্ষতিপূরণ বুঝে নিয়ে বিনা শর্তে বাড়ি ভাঙার কাজে সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু হারুনুর রশীদ ক্ষতিপূরণ বাবদ তার ২২ লাখ ৫৮ হাজার ৬৪ টাকার চেক এখনো নেননি। হারুন সাহেব ওই টাকা নিতে রাজি নন।
তিনি বলছেন, তাঁকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে আরও বেশি টাকা দিতে হবে। তিনি আবারও রিট করবেন। আদালত তখন ক্ষতিপূরণ বাবদ যে টাকা দিতে বলবে, আমরা দেব। তিনিও সে শর্তে রাজি। আজ তার বাড়িও ভেঙে ফেলা হয়েছে।
এদিকে, বাড়ি ভাঙার সময় দেখা যায়, দুটো বাড়ির বেজমেন্টেই লালবাগ কেল্লার দেয়ালের ইট ব্যবহার করা হয়েছে, যা প্রত্নতত্ত্ব আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ঢাকা জেলার আঞ্চলিক পরিচালক রাখি রায় জানান, তারা এ বিষয়টি পরে খতিয়ে দেখবেন।
উল্লেখ্য, প্রায় এক যুগ ধরে দুই মালিক অবৈধভাবে ওই দুই বাড়িতে বসবাস করছিলেন। কেল্লার সীমানার ভেতরে বাড়ি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ‘বাধার শিকার’ও হতে হয়েছে অনেক সময়।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, দুটি বাড়ির মালিকানা বেশ কয়েকবার পরিবর্তন হয়েছে। তবে কেল্লার সীমানার ভেতরে কারা ওই দুই বাড়ি নির্মাণ করেছিলেন, সে তথ্য তারা জানাতে পারেননি।
সম্পাদনা: এমএন/আরবি/জেডএইচ