
চট্টগ্রামে বসবাস করলেও রাজধানী ঢাকায় ফ্ল্যাট ও প্লট কিনতে চান ব্যবসায়ী এম এ জামীলসহ আরও অনেকে। এসব মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত শ্রেণির ক্রেতাদের আগ্রহের কথা মাথায় রেখে চট্টগ্রামের আবাসন মেলায় এবার এমন প্রতিষ্ঠানও অংশ নিয়েছে, যাদের সব প্রকল্প রাজধানী ঢাকায়। এ রকম কনকর্ড, আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন, রাকিন ও র্যাংকস এফসি প্রপার্টিজ প্রতিষ্ঠানের স্টলেও ফ্ল্যাট ও প্লটের খোঁজ নিতে দেখা গেছে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। মেলায় ফ্ল্যাট বিক্রির চেয়ে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের কাছে নিজেদের পণ্যের মান তুলে ধরছেন তাঁরা। কারণ, শেষ পর্যন্ত পণ্যের মানই গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
চট্টগ্রাম নগরের র্যাডিসন ব্লু হোটেলের মেজবান হলে গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া চার দিনের আবাসন মেলা ‘রিহ্যাব চট্টগ্রাম ফেয়ার ২০১৮’-এর শেষ দিন আজ রোববার। মেলার আয়োজক আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে। প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা। এবারের মেলায় ৪২টি আবাসন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সাতটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ১০টি নির্মাণ উপকরণ প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। সব মিলিয়ে মেলায় স্টল ৫৯টি। বিভিন্ন আবাসন প্রতিষ্ঠান মেলায় ২০০ প্রকল্প নিয়ে এসেছে।
মেলায় বেশ কয়েকজন দর্শনার্থীকে ঢাকায় প্লট বা ফ্ল্যাটের খোঁজ নিতে দেখা যায়। চট্টগ্রামে কোনো আবাসন প্রকল্প নেই, মেলায় অংশ নেওয়া এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬। আবার ঢাকা ও চট্টগ্রাম দুই জায়গাতেই আবাসন প্রকল্প রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠান আটটি।
চট্টগ্রামে থাকলেও ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনতে খোঁজ জানতে রাকিন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড এর স্টলে এসেছিলেন ব্যবসায়ী এম এ জামীল। স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে জামীল বলেন, ঢাকার উত্তর বাড্ডা কিংবা গুলশানের আশপাশে ফ্ল্যাট খুঁজছেন তিনি। দামে মিললে এবং পছন্দ হলে ফ্ল্যাট কেনার সিদ্ধান্ত নেবেন।
রাকিন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের নির্বাহী কর্মকর্তা সৈকত বড়ুয়া বলেন, চট্টগ্রামের ক্রেতাদের আগ্রহের কথা মাথায় রেখে তাঁরা মেলায় স্টল দিয়েছেন। প্রতিদিন অনেক ক্রেতা-দর্শনার্থী ফ্ল্যাটের খোঁজখবর নিচ্ছেন। চট্টগ্রামে তাঁদের কোনো আবাসন প্রকল্প নেই। ঢাকার মিরপুরে ‘বিজয় রাকিন সিটি’ প্রকল্পের ফ্ল্যাটের সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরছেন স্টলের কর্মীরা। প্রায় ৫০ বিঘা জায়গার ওপর গড়ে তোলা হয়েছে বিজয় রাকিন সিটি। খেলার মাঠ, বিদ্যালয়, ব্যায়ামের জায়গা, ক্লাব হাউসসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এই প্রকল্পে। এই প্রকল্পে ১৫ তলা করে ৩৬টি আবাসিক ভবনে ১ হাজার ৯৫০টি ফ্ল্যাট রয়েছে।
সৈকত বড়ুয়া বলেন, বিজয় রাকিন সিটির বেশির ভাগ ফ্ল্যাট বিক্রি হয়ে গেছে। ক্রেতাদের সাড়া পাওয়ায় এই প্রকল্পের পাশাপাশি কাঁচপুরে ১৫০ বিঘা জমিতে নতুন আরেকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন তাঁরা।
প্লট ও ফ্ল্যাটের প্রকল্প নিয়ে এসেছে মেলায় আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন লিমিটেড। এবারের মেলায় তারা ঢাকার ২৭টি অ্যাপার্টমেন্টের প্রকল্প ও মতিঝিলের কাছে ‘গ্রিন মডেল টাউন’ নামের প্লটের একটি প্রকল্পের প্রচারণা চালাচ্ছে।
কোম্পানির ঊর্ধ্বতন নির্বাহী রাজীব হোসেন বলেন, ঢাকার বাইরে প্লট বা ফ্ল্যাটের সবচেয়ে বেশি ক্রেতা রয়েছেন চট্টগ্রামের। এখানকার গ্রাহকদের আগ্রহের কারণে চট্টগ্রামের নাসিরাবাদে তাঁরা একটি অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। ২৮ মাসের কিস্তিতে বর্গফুটপ্রতি ৬ হাজার ৩০০ টাকায় সেখানে ফ্ল্যাট বিক্রি করছেন তাঁরা।
চট্টগ্রামেও অ্যাপার্টমেন্ট ব্যবসায় রয়েছে ঢাকার প্রতিষ্ঠান কনকর্ড এর। মেলায় কনকর্ড ঢাকা ও চট্টগ্রামে তাদের প্রকল্পগুলোর প্রচারণা চালাচ্ছে। চট্টগ্রামের উত্তর খুলশীতে ‘কনকর্ড আলপনা’ নামের অত্যাধুনিক অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্প তুলে ধরছে ক্রেতাদের কাছে।
কনকর্ডের সহকারী ব্যবস্থাপক তাওহীদুল করিম বলেন, কনকর্ড প্রকল্পের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো ভবন নির্মাণে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা। এই কোম্পানিতে ক্রেতারা ঢাকা কিংবা চট্টগ্রাম দুই জায়গা থেকে তাঁদের পছন্দের ফ্ল্যাট বাছাই করার সুযোগ পাচ্ছেন।
র্যাংকস এফসি প্রপার্টিজ লিমিটেড মেলায় মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত শ্রেণির জন্য চট্টগ্রামে ফ্ল্যাট প্রকল্প নিয়ে এসেছে। গত এক বছরে প্রতিষ্ঠানটি তিনটি প্রকল্প হস্তান্তর করেছে। বর্তমানে দক্ষিণ খুলশী, কাতালগঞ্জ, মেহেদীবাগ, হালিশহর ও আগ্রাবাদে তাদের সাতটি প্রকল্প রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি দক্ষিণ খুলশী এলাকায় বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটের প্রকল্পের প্রচারণা চালাচ্ছে।
সম্পাদনা: জেডএইচ/আরএ/আরবি