
রাজধানী ঢাকায় একের পর এক নির্মাণ হচ্ছে ছোট, বড়সহ বহুতল ভবন। অধিকাংশ ভবন নির্মাণে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে নেওয়া নকশা মানছেন না নির্মাণকারীরা। যে কারণে রাজধানীতে ভূমিকম্প হলে ঝুঁকি ও ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এ জন্য রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। ভূমিকম্পের কোনও পূর্বাভাস না পাওয়ায় এর ক্ষতি মোকাবিলায় সবাইকে সচেতন হওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) হোটেল রেডিসন ব্লুতে রাজউকের আরবান রিসিলেন্ড প্রজেক্ট আয়োজিত ‘রিসেন্ট আর্থকোয়াক রিলেটেড রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাক্টিভিটিস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন।
গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভূমিকম্পের কোনো পূর্বাভাস পাওয়া যায় না, তাই এর ক্ষতি মোবাবেলায় সবাইকে সচেতন হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। ভূমিকম্পে ক্ষতি মোবাবেলায় যারা ভবন বানাচ্ছেন তাদের এ বিষয়ে সচেতন হওয়া বেশি জরুরি। পাশাপাশি তারা নির্মাণবিধি মেনে ভবন বানাচ্ছেন কি না- তা তদারকি করা দরকার।
মোশাররফ হোসেন বলেন, ভূমিকম্পের দিক থেকে আমাদের দেশ অনেক ঝুঁকিতে আছে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজধানীর ভবনগুলোর ক্ষেত্রে ভবন মালিকরা অথবা নির্মাণকারীরা ইমারত নির্মাণ আইন মেনে চলেন না। এ কারণে ভূমিকম্প হলে ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যাবে। তাই সবার জানমালের কথা চিন্তা করে সঠিক নিয়ম মেনে ভবন তৈরি করা উচিত। এসব দুর্যোগ মোকাবেলা বা দুর্যোগে ক্ষতি এড়াতে শুধু সরকার বা আইন করেই সবকিছু ঠিক করা সম্ভব না।
সেমিনারে অংশ নিয়ে রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবদুর রহমান বলেন, আমরা পরিকল্পিত নগরী গড়ে তুলতে চেষ্টা করছি। সে অনুযায়ী গুলশান, বনানী, উত্তরায় কাজ করেছি। পূর্বাচল, ঝিলমিল প্রকল্প, গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক উন্নয়ন কাজ চলছে। অন্যদিকে, ভূমিকম্পের ঝুঁকি-ক্ষতির পরিমাণ কমাতে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। সেই সঙ্গে ডিজিটাল বিল্ডিং প্ল্যান পাস করানো, রিসার্চ-ট্রেনিং ভবন গড়ে তোলা হবে।
স্থাপতি মোবাশ্বর হোসেন বলেন, ভূমিকম্প হলে আমাদের করণীয় কী হবে এ বিষয়ে ভীত আমি। কারণ, ঢাকা শহরে যেভাবে মাকরশার জালের মতো গ্যাসের লাইন আছে, বিদ্যুতের লাইন আছে। একবার ভূমিকম্প হলে এগুলোর কী অবস্থা দাঁড়াবে- এটা নিয়ে আমি ভয়ে থাকি সবসময়। প্রতিটি বাসায় বিদ্যুতে তাও একটা মেইন সুইচ আছে তার মাধ্যমে বিদ্যুৎ বন্ধ করা যেতে পারে কিন্তু গ্যাসের লাইন বন্ধ করার কোনো সুইচ নেই।
মোবাশ্বর হোসেন বলেন, একবার সিদ্ধান্ত হয়েছিল গ্যাসের লাইনে সেন্সর লাগানোর কিন্তু আজও তা বাস্তয়াবায়ন হয়নি। এগুলো বিষয়ে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।
গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভূমিকম্পের কোনো পূর্বাভাস পাওয়া যায় না, তাই এর ক্ষতি মোবাবেলায় সবাইকে সচেতন হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। ভূমিকম্পে ক্ষতি মোবাবেলায় যারা ভবন বানাচ্ছেন তাদের এ বিষয়ে সচেতন হওয়া বেশি জরুরি। পাশাপাশি তারা নির্মাণবিধি মেনে ভবন বানাচ্ছেন কি না- তা তদারকি করা দরকার।
সেমিনারে কি-নোট উপস্থাপন করেন ইউআরপি প্রজেক্টের (রাজউক অংশ) পরিচালক আব্দুল লতিফ হেলালি, বুয়েটের অধ্যাপক রাকিবুল হাসান, অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারি।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি জামিলুর রেজা চৌধুরী, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রতিনিধি স্বর্ণা কাজী, ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট রাজউক সদস্য শামসুদ্দীন আহমেদ প্রমুখ।
সম্পাদনা: আরএ/আরবি/এমএন