
সমুদ্রকণ্যা কুয়াকাটায় প্রতারণার মাধ্যমে সরজারি জমি দখল করেছে রেখেছে প্রভাবশালীরা। কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গামতি ও লতাচাপলি মৌজাতেই বেদখল হয়ে আছে প্রায় এক হাজার বিঘা জমি। স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি ও কতিপয় আবাসন প্রতিষ্ঠান এ দখলদারির সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা মালিকানা দাবি করে সংরক্ষিত বনের ভূমি ও বন বিভাগের বাগানে সাইনবোর্ড ও সীমানা স্তম্ভ স্থাপন করেছে। ভূমি উদ্ধারে বন বিভাগ চেষ্টা করলেও সফল হতে পারছে না।
এ বিষয়ে কয়েক মাস আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চিঠি দিলেও বেদল হওয়া সব জমি বুঝে পায়নি বন বিভাগ। উপকূলীয় বন বিভাগের পটুয়াখালী কার্যালয় সূত্র জানায়, গঙ্গামতি মৌজায় ১ হাজার ৩৩৮ একর ও লতাচাপলি মৌজায় ২ হাজার ১৬৫ একর সংরক্ষিত বনভূমি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ভাঙন ও সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে এখানকার বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারপরও ছোট-বড় মিলিয়ে আনুমানিক ৩০ লাখের মতো বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। এর মধ্যে কড়ই, তেঁতুল, রাম তেঁতুল, গেওয়া, কেওড়া ও আকাশমণি উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া গঙ্গামতি ও লতাচাপলি এলাকার ২ হাজার ২০০ একর খাসজমিতে গাছ লাগিয়ে বাগান করা হয়েছে। গঙ্গামতি মৌজায় ১১৫ দশমিক ২৫ একর বনভূমি অবৈধভাবে দখল করে নেওয়া হয়েছে। এখানে ৫১ জন দখলদারকে চিহ্নিত করেছে বন বিভাগ। এ ছাড়া লতাচাপলি মৌজায় ২৯৭ একর বনভূমি ৫৫ জন ভূমিদস্যু ভোগদখল করছে।
কয়েক যুগ আগে সমুদ্রে বিলীন হওয়া প্রচুর পরিমাণে জমি প্রকৃতির বিবর্তনে নতুনভাবে জেগে উঠেছে। সমুদ্র বেলাভূমির মালিকানা নিয়ে স্থানীয় ভূমি অফিসে স্পষ্ট রেকর্ড নেই। ভূমি অফিসের রেকর্ডে অস্পষ্টতা থাকা ওই সব জমি নিজেদের দাবি করে একাধিক রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ‘স্বপ্নের অবাসন’ হিসেবে লোভনীয় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ক্রেতাদের সামনে উপস্থাপন করছে।
গঙ্গামতির কাউয়ার চরে দেখা যায়, বন বিভাগের ১২৫ একরের নতুন বাগান নিজেদের সম্পত্তি দাবি করে চারপাশে সীমানা পিলার (স্তম্ভ) ও সাইনবোর্ড স্থাপন করেছে কয়েকটি আবাসন প্রতিষ্ঠান। এখন এই বনের দখল নিতে সাইনবোর্ড স্থাপনসহ বন বিভাগের লোকজনদের হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে।
বন বিভাগের গাছ কেটে আবাসন প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড বসানো কোন কোন জায়গায়। কতিপয় আবাসন প্রতিষ্ঠান স্থানীয় ব্যক্তিদের বনভূমি ও সরকারি খাসজমি দখল করতে সহযোগিতা করছে। পরে তাদের কাছ থেকে ওই জমি নামমাত্র দামে কিনে নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।