আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
গরিবী আবাসনের নকশায় ‘স্থাপত্যকলার নোবেল’ পেলেন ৯০ বছরের আর্কিটেক্ট

চলতি বছরের প্রিটজকার পুরস্কার জিতে নিয়েছেন ভারতীয় স্থপতি বালকৃষ্ণ দোশি। কম খরচে আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলার পথিকৃৎ ৯০ বছর বয়সী বালকৃষ্ণকে সম্মানজনক পুরস্কারটিতে ভূষিত করা হয়েছে। এই প্রথমবারের মতো কোনো ভারতীয়কে ‘স্থাপত্যকলার নোবেল প্রাইজ’ হিসেবে বিবেচিত এই পুরস্কার দেয়া হলো। ১৯৫০-এর দশকে বিখ্যাত ফ্রেঞ্চ-সুইস স্থপতি কর্বুসিয়ের অধীনে কাজ করতে যাওয়ার আগে দোশি মুম্বাইতে পড়াশোনা করেছেন।

মে মাসে টরন্টোতে একটি অনুষ্ঠানে পুরস্কারের এক লাখ ডলার দোশিকে প্রদান করা হবে।

আগে সিডনি অপেরা হাউজের নকশাকার ইয়ার্ন উটজন ও ব্রিটিশ-ইরাকি স্থপতি জাহা হাদিদ এই পুরস্কারে ভূষিত হন।

প্রিটজকারের জুরি জানিয়েছে, ‘বালকৃষ্ণ দোশি সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নকশা করেন। তার কাজ কখনোই চটকদার বা প্রথাগত নয়।’

‘দোশি সবসময়ই দেখিয়েছেন ভাল স্থাপনা ও নগর পরিকল্পনায় শুধু ব্যবহারযোগ্যতা ও গঠনের মিশ্রণই ঘটে না, এগুলো তৈরিতে আবহাওয়া, জমি, কৌশল, ও নৈপুণ্যও থাকতে হয়। একই সাথে এগুলোতে পারিপার্শ্বিক অবস্থা গভীরভাবে উপলব্ধি ও এর সমাদর করতে হয়। প্রকল্পগুলো কাব্যিক ও দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে মানুষের আত্মার সাথে যোগাযোগ তৈরি করে।’

জুরিদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে দোশি বলেন, ‘আমাদের চারপাশের আলো, আকাশ, পানি ও ঝড় সবকিছু একটা ঐকতানের মধ্যে আছে। আর্কিটেকচার মানেই হচ্ছে এই ঐকতান।’

দোশির নকশা করা প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, হাউজিং কমপ্লেক্স, জনগণের জন্য উন্মুক্ত স্থান, গ্যালারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বাড়ি।

ভারতের মধ্য প্রদেশের ইন্দোর শহরে দোশির নকশা করা একটি কম খরচের আবাসন প্রকল্প ইতিমধ্যেই বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছে।

ইন্দোরের প্রকল্পটির সাড়ে ছয় হাজার বাড়িতে এখন ৮০ হাজার মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ বসবাস করে। এর বাড়ি, উঠান ও আভ্যন্তরীণ চলাচলের পথের কারণে এটি ভারতের অন্যতম দর্শনীয় আবাসন প্রকল্প হিসেবে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

বিবিসি জানিয়েছে, ১৯৫৪ সালে দোশি বলেছিলেন, ‘মনে হচ্ছে, আমার উচিত একটা শপথ নেয়া ও সারা জীবন স্মরণ রাখাঃ সমাজের সবচেয়ে নিচুতলার মানুষদের জন্য যথার্থ আবাসনের ব্যবস্থা করা।’

দোশি স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতের স্থাপত্যকলায় আন্তর্জাতিক আধুনিকতাবাদ ও স্থানীয় ঐতিহ্যের মিশ্রণের অন্যতম পথিকৃৎ।

কর্বুসিয়ের সাথে কাজ করার পর তিনি আধুনিক স্থাপত্যকলার অন্যতম দিশারী লুই কানের সাথেও কাজ করেন।