আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
নির্ধারিত সীমানা লঙ্ঘন করে রাজউকের নকশা অনুমোদন

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যতগুলো প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রতিটি শহরে অভিভাবকও বটে। প্রতিটি শহর পরিকল্পিত ভাবে সাজানো ও জনসাধারনের সেবার মান নিশ্চিত করার জন্য রাজধানী ঢাকাসহ এর পার্শ্ববর্তী এলাকা নিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে আটটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। কখনও কখনও একই ইউনিয়ন বা থানা দুইটা জোনের মর্ধে পরলেও সীমানা নির্ধারণ করে, সেই সীমানার নকশা গেজেটে পাশ করে নকশার মধ্যে মৌজার নাম সু-স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে, কে কোন মৌজা পর্যন্ত দেখবাল করিবেন। কিন্তু একই ইউনিয়ন বা থানা একই সীমা রেখার মধ্যে দুই জোনকে ভাগ করে দেওয়ার পরও মৌজার কথা কিন্তু নকশায় উল্লেখ রয়েছে। তারপরও অতি উৎসহিত দুষ্কৃতিকারী কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছে তারা নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য বে-আইনী ভাবে সীমানা অতিক্রম করে এক জোনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী  অন্য জোনের সীমানা অতিক্রম করে অনুমোদন করে দিলে অত্র প্রতিষ্ঠানের নিয়ম বলতে কিছুই থাকবে না। যা অত্র প্রতিষ্ঠানের সীমা লঙ্ঘনের সামিল। যে যার ইচ্ছা মত ভবনের নকশা অনুমোদন করে দিচ্ছে।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) মহাখালী ৪/৩ জোন থেকে উত্তরার সমস্ত এলাকায় দেখবালসহ ভবনের নকশার অনুমোদন দেওয়া হত ২০১৩ সালের আগ পর্যন্ত। ২০১৩ সালের পর জোন-১ ও জোন-২ উত্তরা সকল এলাকার মধ্যে নির্ধারণ করা হলেও দক্ষিণখান ইউনিয়ন বা দক্ষিণখান থানার কিছু অংশ জোন-২ ও জোন-৪ এর মধ্যে পরে, তবে কসাইবাড়ী মেইনরোডের দক্ষিণ পাশ জোন-৪ এর মধ্যে পরলেও এর উত্তর পার্শ্বে চালাবনের কিছু অংশ জোন-৪ এর মধ্যে পরে। এরপর কসাইবাড়ীর উত্তর পার্শ্বে পুরাকৈর, আনল, চামুরখান, উত্তরখানের শেষ মাথায় ফায়দাবাদ মৌজায় যা তুরাগ নদীর পাশ ঘেষে আব্দুল্লাহপুর হয়ে তেরমুখ ব্রীজ পর্যন্ত বিদ্যমান রয়েছে। এই রাস্তাটি বর্তমানে সিটি কর্পোরেশনের প্রস্তাবিত ৮০ ফিট রাস্তা। এই রাস্তাটি বর্তমানে সরেজমিনে ২০ ফিট থাকলেও অতি উৎসাহিত ঐ রাস্তার দুই পাশে প্লটের কিছু মালিকরা পরিকল্পিত ভাবে ঐ রাস্তাটি নিজের দখলে নেওয়ার জন্য উঠে পরে লেগেছে।

রাস্তার দুই পার্শ্বে প্লটের মালিকরা জানে এই রাস্তাটি সিটি কর্পোরেশনের ৮০ ফিট রাস্তা প্রস্তাবিত। যা উত্তরা জোন-২ এ ৮০ ফিট রাস্তা বাদ দিয়ে ছাড়পত্র ও নকশা অনুমোদন দিলে রাস্তার দুই পার্শ্বে অনেক প্লট রাস্তার জন্য অর্ধেকেরও বেশি ছেড়ে দিতে হয়। ছাড়পত্র সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও উত্তরা জোন এলাকার নকশা মহাখালীতে অনুমোদন দিচ্ছে যা পরবর্তীতে ভবন মালিক ছাড়পত্র ও নকশার সমস্ত শর্ত ভঙ্গ করে সিটি কর্পোরেশনের প্রস্তাবিত ৮০ ফিট রাস্তা পরিকল্পিতভাবে দখল করে বেশ কয়েকজন মালিক ভবন নির্মাণ করছে, তারমধ্যে রাজউক স্মারক নং-২৫, ৩৯, ০০০০, ১০৮, ৩৩, ৪৭, ১৭-৯৪ স্থা তাং-১৩/০৪/২০১৭ইং যাহার মালিক ফারজানা নাঈম সিদ্দিক। যাহার সিএস দাগ নং-৩৬, আরএস-৩৫৭, মহানগর-১৫৯৫৩, মৌজা-ফায়দাবাদ উক্ত জমির মালিক ৪ কাঠা জায়গার ওপর আন্ডার কন্সট্রাকশন না থাকলেও ৮ম তলা ভবনের মধ্যে আন্ডার কন্সট্রাকশনসহ অত্র ভবনের চতুর্দিকে ডেভিয়েশন করে অতিদ্রুত ভাবে ভবন নির্মাণ করছে। যা ছাড়পত্র ও নকশা বিচ্যুতি করে ভবন নির্মাণ করছে। এ সব বিষয় জানতে চাইলে জোন-৪/৩ এর ভবন পরিদর্শক মো: মোতালেব বলেন আমার উপরস্থ কর্মকর্তারা যদি সীমানা অতিক্রম করে ভবনের নকশা অনুমোদন দেয় তাহলে আমার কিছুই করার থাকে না।

এসব বিষয় উক্ত ভবনের মালিক সিদ্দিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয় বলেন রাজউক আমাকে ভবনের নকশা অনুমোদন দিয়েছে। যারা আমাকে নকশার অনুমোদন দিয়েছে তাদের কে আমার কাছে আসতে বলেন। এই বিষয় জোন-২ এর ঐ এলাকা ইমারত পরিদর্শক শামীম বলেন ভবনের মালিক নকশার সম্পূর্ণ ব্যর্তয় ঘটিয়ে ভবন নির্মাণ করলে আমি তাতে বাঁধা দেই তখন ভবন মালিক বলে আমি উত্তরা জোন থেকে নকশার অনুমোদন নেই নি। আমি অনুমমোদন নিয়েছি মহাখালী জোন থেকে। আপনি কেন? এখানে এসেছেন। এই ভাবে আমাকে অপমান করে বিদায় করল। এ বিষয় জানতে চাইলে মহাখালী জোনের জোন পরিচালক খন্দকার ওলিউর রহমান দৈনিক মুক্ত খবরকে বলেন সীমানা পেরিয়ে ভবনের নকশা অনুমোদন দেওয়ার কারও কোন এখতিয়ার  নাই। যদি এমন ঘটনা ঘটেই থাকে তাহলে সীমানা নির্ধারণ করা থাকত না। তাহলে যে যার ইচ্ছা মত যেখানে সেখানে যেতে পারত ও দেখবাল করতে পারত। যেহেতু সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে এই সীমানা অতিক্রিম করে যদি কোন কর্মকর্তা কর্মচারী দেখবাল করেন এটা সম্পূর্ণ বে-আইনী। তারপরও জেনে শুনে যদি কোন কর্মকর্তা কেউ সীমানা অতিক্রম করে দেখবাল করেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

এ বিষয রাজউক উত্তরা জোনের অথরাইজ অফিসার আশরাফুল ইসলাম বলেন আমার এলাকায় অপরাধীরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।