আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
আবাসন প্রকল্পে সরকারি জমির জটিলতা নিরসনে উদ্যোগ

আবাসন প্রকল্পের মধ্যে থাকা সরকারি জমির জটিলতা নিরসনে ভূমি মন্ত্রণালয় ইতিবাচক উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য ডিসিদের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়ে সম্প্রতি মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেয়া হয়। তথ্য-উপাত্ত পাওয়ার পর মন্ত্রণালয়ে বৈঠক আহবান করা হবে। সেখানে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি ও প্রকল্প মালিকদের উপস্থিতিতে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে আইন অনুযায়ী প্রতিটি কেস সুরাহা করার নির্দেশনা দেয়া হবে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকারের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি বিভিন্ন আবাসন প্রকল্পের মধ্যে পড়ে আছে। যেগুলোর প্রকৃত হিসাবও মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই। এর মধ্যে খাস, অর্পিত ও পরিত্যক্ত সম্পত্তি রয়েছে। ডিসিদের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পর আবাসন শিল্প বিকাশের স্বার্থে প্রয়োজনে আইন অনুযায়ী তা ছেড়ে দেয়া হবে। সেভাবে নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ নেয়া হবে। এরপর অবশিষ্ট জমি উদ্ধার করে সরকারের দখলে নিয়ে সদ্ব্যবহার করা হবে। মোদ্দা কথা, সরকারি জমি এভাবে আর ফেলে রাখা কিংবা ছেড়ে দেয়া হবে না।

এ বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের চিঠি পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত গাজীপুর ও ফরিদপুর জেলা ছাড়া আর কোনো জেলা থেকে তথ্য আসেনি। ফরিদপুর ডিসি অফিস সূত্র জানিয়েছে, সেখানে আবাসন প্রকল্পে সরকারি কোনো জমি নেই। তবে গাজীপুর জেলা থেকে পাঠানো তথ্যে দেখা যায়, ১১টি কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের প্রকল্পে সরকারের ২১৬ একর ৬৩ শতক জমি রয়েছে। বলা হয়েছে, নিয়মানুযায়ী এসব সরকারি জমি ব্যবহারে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে কোনো ছাড়পত্র নেয়নি।

প্রসঙ্গত, আবাসন প্রকল্পে খাস/অর্পিত/পরিত্যক্ত জমি অন্তর্ভুক্ত হলে সে বিষয়ে প্রকল্প করার আগে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে মর্মে ২০১১ সালের ২৪ মার্চ ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে গৃহায়ন ও পূর্ত সচিবকে চিঠি দেয়া হয়। বিভাগীয় কমিশনার, ডিসিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়কে চিঠির অনুলিপি দিয়ে অবহিত করা হয়। কিন্তু সেটি বেশিদূর এগোয়নি। এরপর ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৭ সালের ৪ মে ডিসিদের চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে তথ্য পাঠাতে বলা হয়। সেখানে কোনো আবাসন প্রকল্পে সরকারের কী পরিমাণ জমি আছে তাও জানাতে নির্দেশনা দেয়া হয়। সম্প্রতি এ বিষয়ে দ্রুত তথ্য পাঠাতে তাগিদপত্র দেয়া হয় এবং ২১ মার্চ প্রথম বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাত্র দুটি জেলা থেকে তথ্য আসায় গতকালের বৈঠকটি বাতিল করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বুধবার যুগান্তরকে বলেন, সরকারি জমি এভাবে ফেলে রেখে কোনো লাভ নেই। বরং সরকারের ক্ষতি। তার চেয়ে বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে লিজ কিংবা অধিগ্রহণ প্রস্তাবে অনুমোদন দিলে সরকারের অনেক রাজস্ব আসবে। অথবা কোথাও সে রকম প্রস্তাব মানা সম্ভব না হলে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি সরকারের দখলে নিয়ে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা হবে। তিনি জানান, ভূমি মন্ত্রণালয় কাউকে হয়রানি করতে চায় না। আইনে সুযোগ থাকলে তা আবাসন প্রকল্প মালিকদের অনুকূলে যথানিয়মে ছেড়ে দেয়া হবে। কিন্তু ধরে রেখে বছরের পর বছর হয়রানি করা হবে না। মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী ইতিবাচক এমন পদক্ষেপ গ্রহণে সম্মত আছেন।

এজন্য সভা আহবান করে তারা এসব জটিলতা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে চান।