আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
বিলুপ্তির পথে ছনের চালের মাটির ঘর

ময়মনসিংহে জয়েনশাহী পাহাড় বা রসুলপুর বনের পাদদেশ জুড়ে একসময় জনবসতি গড়ে উঠেছিল। এসব অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি ছিল লাল মাটির টিলা। একে স্থানীয় ভাষায় ‘টেঙ্গর’ বলা হয়।

টেঙ্গরের লাল মাটি গৃহনির্মাণে উপযোগী বলে ওই অঞ্চলের সব বাড়ি-ঘর নির্মাণ করা হতো লাল মাটিতে। বনে পাওয়া যেতো প্রচুর ছন, যা দিয়ে ছাউনি দেয়া (ছাওয়া) হতো।

প্রখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা তার সফরনামায় এই অঞ্চলের ঘরবাড়ির কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘এখানকার অধিবাসীরা বাস করেন মাটির ঘরে। এখনও শতকরা ২৫ ভাগ বাড়িঘর মাটির তৈরি।’

কালের পরিবর্তনে জয়েরশাহী গড় বনশূন্য হয়ে পড়েছে। এখন আর পর্যাপ্ত ছনও জন্মে না। তেমনি পাশের টিলা অঞ্চল কৃষির প্রয়োজনে কেটে সমতল করা হয়েছে। ফলে পর্যাপ্ত লাল মাটি এখন আর পাওয়া যায় না। তাই ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে মাটির তৈরি ঘর।
এই অঞ্চলে ঘর নির্মাণের প্রাচীনতম মাধ্যম হিসেবে লাল মাটি আর ছনের ব্যবহার আবহমান কালের বলে মাটির তৈরি ছনের ঘর ঐতিহ্যের দাবি রাখে।

এই ঐতিহ্যের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে আদিম আবাসন রীতির নানা প্রাকৃতিক সুবিধা, যা ইট বা টিনের তৈরি আবাসনের চেয়ে অবশ্যই উত্তম। মাটির তৈরি ঘর নির্মাণের কারিগর যারা র্দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় দক্ষতা অর্জন করেছিলেন তারা নতুন ঘর নির্মাণ না হওয়ায় যেমনি নিরুৎসাহিত হচ্ছেন, তেমনি নতুন কারিগরও গড়ে উঠছে না।

ফলে মাটির তৈরি বাড়িঘর ক্রমেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ এলাকায় লাল মাটির তৈরি ছনের ঘর টিকিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজন উদ্যোগ।