আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
আবাসিক সুবিধাবঞ্চিত রাবির ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থী

শতভাগ আবাসিক সুবিধার নিশ্চয়তার আশ্বাস নিয়ে ১৯৫৩ সালে যাত্রা শুরু করে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ৬৫ বছরেও বিশ্ববিদ্যালয়টির ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থীই আবাসিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়ে গেছে। এরপরও প্রায় প্রতি বছর নতুন নতুন বিভাগ খোলা হলেও নতুন আবাসিক হল নির্মাণে তেমন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩৭ হাজার ২৪৮ জন। তার মধ্যে এমফিল ১০৬, পিএইচডি ৪৩, গবেষক ১৪৯ জন। আর আবাসন সুবিধার জন্য রয়েছে ১৭টি আবাসিক হল। ছাত্রদের ১১টি হলের মধ্যে শের-ই-বাংলা ফজলুল হক আবাসিক হলের আসন ৩১২টি, শাহ মখদুম হলে ৪৩৪, নবাব আব্দুল লতিফ হলে ৩১৯, সৈয়দ আমীর আলী হলে ৪১০, শহীদ শামসুজ্জোহা হলে ৪৩১, শহীদ হবিবুর রহমানে ৭২৮, মতিহার হলে ২৮৮, মাদার বখশ হলে ৫৮৪, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ৫৯২, শহীদ জিয়াউর রহমান ৫৯৮ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৪৯৪টি আসন রয়েছে। ছাত্রদের আবাসিক হলে মোট আসন ৫ হাজার ১৯০টি।

অন্যদিকে ছাত্রীদের আবাসিক হল আছে ৬টি। এর মধ্যে মন্নুজান হলে আসন সংখ্যা ৮৬০টি, রোকেয়া হলে ৭২০, তাপসী রাবেয়া হলে ৪৬৯, বেগম খালেদা জিয়া হলে ৪৫২, রহমতুন্নেসা হলে ৫৮০, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলে ৫২৮টি আসন রয়েছে। ছাত্রীদের জন্য ছয়টি হলে ৩ হাজার ৬০৯টি আসন রয়েছে।

এছাড়াও গবেষক শিক্ষার্থীদের জন্য শহীদ মীর আব্দুল কাইয়ূম ইন্টারন্যাশনাল ডরমিটরিতে আসন রয়েছে ২৬টি। সবমিলিয়ে আবাসিক সুবিধা পাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ হাজার ৮২৫ জন শিক্ষার্থী।

ru-hall2

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৩৭ হাজার ২৪৮। এই হিসাবে মোট শিক্ষার্থীর মাত্র ২৪ শতাংশ আবাসন সুবিধা পেয়ে থাকেন। বাকি ৭৬ শতাংশ এখনও আবাসন সুবিধার বাইরে। এই হিসাবে প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধার বাইরে আছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্রদের হলের তুলনায় মেয়েদের হলে কষ্ট বেশি। প্রত্যেকটি হলেই বৃহৎ গণরুম রয়েছে। গণরুমগুলোতে প্রায় ২০০ জন ঠাসাঠাসি করে বসবাস করছে। পর্যাপ্ত শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই তাদের জন্য।

অন্যদিকে আবাসিক হলগুলোর পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। হলগুলোতে সংস্কার কাজ নেই। পুষ্টিকর খাবারও পরিবেশন করা হয় না। হলগুলোতে নামে মাত্র ইন্টারনেট ও ওয়াইফাই সংযোগ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ আবাসিক শিক্ষার্থীদের।

গত ১৫ এপ্রিল হল নবাব আব্দুল লতিফ হলে খাবারের মান বৃদ্ধিসহ ১২ দফা দাবিতে ডাইনিং ভাঙচুর ও হল গেটে তালা লাগিয়ে আন্দোলন করেছে আবাসিক শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই হলগুলোতে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।

এদিকে প্রস্তাবিত দুটি আবাসিক হল নির্মাণের জন্য বাজেট পেলেও হল নির্মাণ কাজ কবে থেকে শুরু হবে সে বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহা বলেন, শিক্ষার্থীদের আবাসিক সমস্যা বিবেচনা করে দুটি হলের নির্মাণ কাজ এ বছরেই শুরু করার পরিকল্পনা আছে। যার একটি ছাত্রীদের জন্য ১০ তলা বিশিষ্ট ‘শেখ হাসিনা হল’। আর ছাত্রদের জন্য ৬ তলা বিশিষ্ট এ এইচ এম কামরুজ্জামান হল। যাতে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রায় ১৫০০ আসন থাকবে।

তিনি আরও বলেন, এগুলো বাস্তবায়ন হলে পরবর্তীতে আমরা শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা বিবেচনা করে সরকারের নিকট আরও নতুন আবাসিক হলের দাবি করব। জাগোনিউজ