আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
ঢাকায় জমি দখলের মচ্ছব!

রাজধানী ঢাকার নানামাত্রিক সমস্যা সমাধানে নগর কর্তারা যখন অনেকটাই অসহায়। শহরটি অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠার কারণেই সমাধান সম্ভব হচ্ছে না বলে যারা নিয়মিত বুলি আওরান। তাদের চোখের সামনেই ঢাকার আশপাশে এমনকি খোদ সিটি করপোরেশনের ভেতরেই যেন-তেন ভাবে গড়ে উঠছে নতুন নতুন মডেল টাউন। মানা হচ্ছে না ভূমি ব্যবহারে নীতিমালা। কোনো ধরণের অনুমোদন ছাড়াই তৈরি করা হচ্ছে বহুতল ভবন। কর্তৃপক্ষ বলছে, এ ধরণের কাজ যারা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন তারা। আর নগরবিদরা বলছেন, ঘটনা ঘটার সুযোগ দিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি তামাশা ছাড়া কিছুই না।

রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, বেড়িবাঁধের অপরপাশে সব জায়গায় বন্যা কবলিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা। নামে বেনামে যে হাউজিং কোম্পানি আছে সেগুলোর বিন্দুমাত্র অনুমোদন নেই।

সরেজমিনের চিত্র বলছে ভিন্ন কথা। রাজউকের কাগজপত্রে যেসব এলাকাকে সমতল ভূমি কিংবা জলাশয় দেখানো হচ্ছে এসব এলাকায় জলাশয় তো দূরে থাক একটু ফাঁকা জায়গার দেখা মেলাও দুষ্কর। নামে-বেনামে গড়ে উঠেছে অসংখ্য আবাসন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। মানা হচ্ছে না কোন ধরণের আইন। এমনকি ভূমি ব্যবহার নীতিমালা সম্পর্কে-ই ধারণা নেই অনেকের। নেই আবাসন ব্যবসার কোনো অনুমোদনও। বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির মালিক বলেন, আমরা আসলে হাউজিং না। সরকার একটা অনুমোদন দিয়েছে আমরা কাজ করছি।

এক দশক আগে বসিলার বুদ্ধিজীবী সেতুর কাছে গড়ে উঠেছিল ওয়েস্ট ধানমন্ডি ডেভলপারস লিমিটেড নামের এই প্রতিষ্ঠানটি। কোন ধরণের অনুমোদন ছাড়াই এখানে নির্মিত হয়েছে শতাধিক বহুতল ভবন। রাখা হয়নি খেলার মাঠ, একই অবস্থা তারপাশে স্বপ্নধারা হাউজিং এর। নিজেদের মতো করে তৈরি করা হচ্ছে সুয়ারেজ লাইন। বেহালদশা সড়কের। এছাড়া, একই এলাকায় মেট্রো হাউজিং, বছিলা সিটি, রাজধানী হাউজিংসহ আবাসন কোম্পানিগুলোতে চলছে মালিকদের রাজত্ব। বিভিন্ন কৌশলে এসব অনিয়মের কথা স্বীকার করে তারা বলছেন, কর্তৃপক্ষের কেউ নাকি তাদের খোঁজ-খবরই নেন না।

তারা বলেন, রাজউকের পরিদর্শক আসেন না।  সিটি করপোরেশনের লোকজন মাঝে মাঝে আসে। সুয়ারেজ লাইন ব্যক্তিগতভাবে কোম্পানিরা তৈরি করছে। রাজউকের ইঞ্জিনিয়ার যদি এসে বলে আপনারা এমন করতে পারবেন না তো করবো না।

অভিযোগ আছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশে চলছে এসব অনিয়ম। যদিও অভিযুক্তরা বলছেন, বারবার সতর্ক করেও কিছু করতে পারছেন না তারা। ঢাকা উত্তরের কাউন্সিলর বলেন, অভিযোগ না করে আসুন আমরা এক হয়ে কাজ করি যাতে সুন্দর ঢাকা গড়া যায় রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, আমাদেরও নজরে আসছে এই বিষয়গুলো। আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।

নগরবিদরা বলছেন, যারা আইন প্রয়োগ করবেন তারাই যদি আইন কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখান তাহলে এ ধরণের কর্মযজ্ঞ চলতেই থাকবে। নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ঢাকা শহরে রাস্তার জায়গা দখল করে বিশ তলা ভবন বানাবে। আর তুমি কিছু বলবে না। তাহলে পূর্বাচলের লোক কি কারণে ২ ফিট জায়গা ছেড়ে দিবে।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে ২৮টি অনুমোদিত আবাসন কোম্পানি তালিকা দেয়া থাকলেও রাজধানী ও এর আশপাশে আসলে এ ধরণের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কত তার হিসাব নেই কারও কাছে।