
রাজধানীর অধিকাংশ খেলার মাঠ, পার্ক ব্যবহারের সুযোগ পান না এই রাজধানীর বাসিন্দারাই। ফলে এই শহরে খেলাধুলা বা প্রকৃতিতে চিত্তবিনোদনের সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার আবদুল মতিন বলেন, সব খেলার মাঠ ও খোলা জায়গাগুলো ধীরে ধীরে দখল হয়ে যাচ্ছে। এই শহরে এখন শিশু ও বয়স্কদের জন্য মুক্তভাবে নিঃশ্বাস নেওয়ার কোনো জায়গা নেই। আর কর্তৃপক্ষেরও এ দিকে কোনো নজর নেই।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সীমানায় প্রায় ৬০টি খেলার মাঠ ও পার্ক আছে। এসবের কোনোটিই তাদের একক সম্পত্তি বা ব্যবস্থাপনাধীন নয়। গণপূর্ত অধিদফতর, রাজউক, বন বিভাগ এবং পরিবেশ অধিদফতরের মালিকানা-ব্যবস্থাপনাধীনও আছে।
২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবিলম্বে রাজধানীর শিশুপার্ক ও খেলার মাঠগুলো উদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও পরিস্থিতির বদল নেই।
উত্তর ও দক্ষিণে বিভক্ত হওয়ার আগে ঢাকা সিটি করপোরশন রাজধানীতে একটি জরিপ পরিচালনা করেছিল। এতে দেখা যায়, ঢাকার খেলার মাঠগুলোর বড় একটি অংশই অবৈধ দখলে কিংবা অন্য কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। অনেক পার্ক ও খেলার মাঠেই নেই ঘাস, শুকনো মৌসুমে এগুলো ধূলায় ভরে যায়, বর্ষার মৌসুমে হয়ে পড়ে কর্দমাক্ত।
ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টের ২০১৬ সালের একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ঢাকার অধিকাংশ খোলা জায়গা ব্যবহার করছে সরকারি সংস্থা বা বেসরকারি সংগঠনগুলো। ফলে এসব স্থানে জনসাধারণের প্রবেশাধিকার কমে যাচ্ছে। নগরের সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নাগরিক প্রয়োজন মেটাতে পার্ক ও খোলা জায়গা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হচ্ছে দুই সিটি করপোরেশন।
ঢাকার উন্নয়ন পরিকল্পনার সুপারিশে বলা হয়েছে, প্রতিটি নাগরিকের জন্য মাথাপিছু ০.০৫২ বর্গমিটার পার্ক ও ০.৫ বর্গমিটার খোলা সবুজ জায়গা থাকতে হবে। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও লিডারশিপ ইন এনার্জি এনভায়রানমেন্টাল ফর নেইবারহুড ডিজাইনের সুপারিশে এই পরিমাণ যথাক্রমে ৯ ও ২০ বর্গমিটার।