আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
পূর্বাচলে ঢাবিকে ৫২ একর জমি দিচ্ছে সরকার

রাজধানীর অদূরে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৫২ একর জায়গাজুড়ে হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুুনিক একাডেমিক অবকাঠামো সম্পন্ন দ্বিতীয় ক্যাম্পাস। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বাধুনিক আবাসিক সুবিধা নিয়ে এ ক্যাম্পাস পরিচালিত হবে পূর্ণাঙ্গ মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টিসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম। স্থানান্তর হতে পারে ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি ও বিভাগের কার্যক্রমও। ১৯২১ সালে ৬৪০ একর জমি নিয়ে যাত্রা শুরু করে আজ মাত্র ৩০০ একর জায়গা অবশিষ্ট থাকায় ধুঁকতে থাকা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসে আশার আলো দেখছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই।

জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ইতোমধ্যেই ৫২ একর জমি দেয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে। রাজউকের সংশ্লিষ্ট বোর্ডের নীতিগত অনুমোদনও শেষ। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অনুশাসন পেলেই বরাদ্দপত্র বিশ্ববিদ্যালয়কে দেবে রাজউক। রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবদুর রহমান বলেছেন, কাজের অবস্থা অত্যন্ত পজেটিভ। আমরাও চাই পূর্বাচলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠুক। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ রাজউকের প্রাথমিক বরাদ্দপত্র পেতে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের পরিধি যেমন বেড়েছে তেমনি কমেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব জমি। ৬৪০ একর থেকে আজ আছে মাত্র ৩০০ একর। অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার আশানুরূপ অগ্রগতি করতে পারছে না এটা হলো বাস্তবতা। এমন এক পরিস্থিতিতে ৫২ একর নতুন জমি অনেক বড় একটা পাওয়া হবে। ২০২১ সালের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা একাডেমিক ও অবকাঠামোগতভাবে বিশ্বের আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপান্তর করতে চাই। পূর্বাচলে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুুনিক একাডেমিক অবকাঠামো সম্পন্ন ক্যাম্পাস। সর্বাধুনিক আবাসিক সুবিধা নিয়ে এ ক্যাম্পাসে পরিচালিত হবে পূর্ণাঙ্গ মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টিসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম। মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টির জন্য হবে আধুনিক হাসপাতাল। যদি জায়গা সঙ্কুলান হয় তবে সেখানে স্থানান্তর হতে পারে ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি ও বিভাগের কার্যক্রমও। শিক্ষকরা বলছেন, নতুন ক্যাম্পাস হলে তা হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি মাইলফলক।

নানা ব্যতিক্রমী উদ্যোগে স্বপ্নের শহর পূর্বাচল ক্রমশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। উপশহরটির ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ লেকের সবচেয়ে প্রশস্ত স্থান ১২ ও ১৭ নম্বর সেক্টরের মাঝে স্থাপন করা হবে ইকোপার্ক। ডিজাইনটি এমনভাবে করা হয়েছে যা দেখতে মনে হবে ভাসমান পার্ক। জানা গেছে দৃষ্টিনন্দন এই পার্কের পাশেই দেয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস। ফলে ক্যাম্পাসটি পাবে সাধারণ সৌন্দর্যময় এক দুর্লভ পরিবেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো সঙ্কটের বিভিন্ন দিক নিয়ে শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, মূলত বছরের পর বছর প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমের বিস্তৃতির বিপরীতে অবকাঠামো বাড়ার পরিবর্তে ক্রমেই কমেছে। ফলে আজ হাজার হাজার ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়ে রীতিমতো ধুঁকছে বিশ্ববিদ্যালয়, যার আছে কয়েকশ বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও প্রতিষ্ঠান। শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিধি ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। ভয়াবহ জমি সঙ্কটে পড়েছে দেশের গৌরবোজ্জ্বল এই প্রতিষ্ঠানটি। ১৯২১ সালে ৬৪০ একর জমি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হলেও বিভিন্ন সময়ে ৩৪০ একর জমিই হাতছাড়া হয়েছে।

অবশিষ্ট জায়গার কিছু অংশ লিজ দেয়ার পাশাপাশি বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণ করে ক্যাম্পাসের পরিবেশ ঘিঞ্জি করে তোলা হয়েছে। বেদখল হওয়া জমি উদ্ধারের বিষয়ে বিভিন্ন সরকারের সময়ে কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা কামনা করেছেন। কতটুকু জমি বেদখল হয়েছে তার হিসাবও হয়েছে বিভিন্ন সময়। কিন্তু অগ্রগতি তেমন হয়নি কখনই।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নতুন জমি পাওয়ার জন্য বিভিন্ন সরকারের সময়ে চেষ্টা করেছে কর্তৃপক্ষ। এতদিন দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি দেখেনি কেউ।