আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
খালি পড়ে আছে শতাধিক কক্ষ তবু নতুন আবাসন

পটুয়াখালী সদরের ছোট বিঘাই ইউনিয়নে কয়েক বছর আগে ভূমিহীনদের জন্য নির্মাণ করা দুইটি আবাসনে খালি পড়ে আছে ১৩০টি কক্ষ, এরপরও সেখানে নতুন আবাসন প্রকল্প নির্মাণের তোড়জোড় চলছে।

সরেজমিন জানা যায়, ছোট বিঘাই ইউনিয়নের মাটিভাঙা বাজার সংলগ্ন খরস্রোতা পায়রা নদীর পাশে ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি আলতাফ হোসেন হাওলাদারের নেতৃত্বে বিভিন্ন জমির ফসল নষ্ট করে ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের জন্য আবাসন প্রকল্পের নামে মাটি খনন করছেন। কৃষক আবদুল খালেক ও গনি হাওলাদার জানান, চেয়ারম্যান আবাসনের নামে যে জমি দখল করছে, সেই জমি নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান এবং ওই জমির অনুকূলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু চেয়ারম্যানের স্বার্থ হাসিলের জন্য গ্রামবাসীর কোনো আপত্তি কর্ণপাত করেনি। মামলার কথা বললেও তিনি বলেন, মামলা নিয়া ভাবার সময় নেই। তারা আরো জানান, গত ইউপি নির্বাচনে এই চেয়ারম্যানের পক্ষে কাজ না করায় এককভাবে সাড়ে ৩ একর জমি দখল করে নিচ্ছেন তিনি। প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যান জেল খাটানোর ভয় দেখায়।

সুলতান হাওলাদার, হেলাল হাওলাদার, সেলিম ফকির, নুরুল ইসলাম, হারুন মাঝিসহ একাধিক গ্রামবাসী অভিযোগ, মাটিভাঙা বাজারের পাশে একটি আবাসন রয়েছে, ভূমিহীন না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে ওই আবাসনের ১৫০ রুমের মধ্য ১০০ রুম খালি। তারপরও আলতাফ চেয়ারম্যান কৃষি জমিতে আবাসন নির্মাণের প্রস্তুতি নিয়েছে। এছাড়াও পায়রা নদীর পাশে হওয়ায় আবাসন প্রকল্প এলাকা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। আবদুল গনি মাঝি জানান, এই ইউনিয়নের পূর্বপ্রান্ত হরতকিবাড়িয়া গ্রামে ৭০টি রুমের আরো একটি আবাসন রয়েছে। সেখানে এখন পরিবারের সংখ্যা মাত্র ৩০/৩৫ জন। ভূমিহীন না থাকায় সেখানেও রুমগুলো খালি। ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের নামে চেয়ারম্যান সরকারের কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছেন। আবদুল গনি আরো জানান, আদালতের নিষেধাজ্ঞার কথা চেয়ারম্যানকে বললে, তিনি বলেন আমি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, আমার কোনো কাগজপত্র দেখার দরকার নেই।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাশের আবাসনটি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এখানে পরিবেশসম্মত আবাসন করা হবে। তার ইউনিয়নে ভূমিহীন আছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার ইউনিয়নে কত ভূমিহীন রয়েছে সে কাগজ নিয়ে আমি কি ঘুরে বেড়াই।

এদিকে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহকারী মিজানুর রহমানের কাছে গিয়ে আবাসনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে রিপোর্ট না করাই ভালো, তাতে কাজের ক্ষতি হয়। আবাসনের জন্য নির্ধারিত জায়গা কোনটি জানতে চাইলে তিনি ভূমি অফিসের কথা বলতে বলেন, কিন্তু ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আলী আজগর জানান, ইউপি চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন হাওলাদারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জমি নির্ধারণ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রকল্প কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, জমি নির্ধারণ করে উপজেলা ভূমি অফিস পাঠিয়েছেন। পরবর্তী ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবেকুন নাহার জানান, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।