আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
রাজউকের উচ্ছেদ করা প্রতিষ্ঠান ফের চালু, লাখ লাখ টাকা অপচয়

টানা ছয় মাস অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক। তবে উচ্ছেদের পর যথাযথ মনিটরিং না করায় ফের যে যার মত করে চালু করেছে। ফলে লাখ লাখ টাকা অপচয় করে উচ্ছেদ কার্যক্রম ভেস্তে গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের উচ্ছেদ করা আবাসিক ভবনে থাকা অধিকাংশ বাণিজ্যিক প্রাতিষ্ঠান আবারো চালু করা হয়েছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের যথাযথ মনিটরিং না থাকায় উচ্ছেদ অভিযান তেমন কোন কাজে আসছে না। তবে রাজউক বলছে হাইকোর্টের রায় নিয়ে অনেকে প্রতিষ্ঠান চালু করছে। এতে আমাদের তেমন কিছু করার থাকছে না।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর থেকে শুরু হওয়ায় আবাসিক ভবনে থাকা সব অ-অনুমোদিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ ও বন্ধে প্রায় অভিযান চালাচ্ছে রাজউক। এখোনও এ অভিযান অব্যাহত রেয়েছে বলে রাজউক জানিয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের শায়েস্তা খান অ্যাভিনিউর ২৭ নম্বর প্লটের হোটেল নগর ভ্যালি, ৭ নম্বর সড়কের হোটেল ব্লু বেল ইন্টারন্যাশনাল, ১৮ নম্বর সড়কের ১২ নম্বর প্লটের হোটেল এঙ্করেজ দ্য রেসিডেন্স এবং ১১ নম্বর সড়কের শেষ মাথায় ৫০ নম্বর প্লটের হোটেল কমফোর্ট ইন আবার চালু হয়েছে। রাজউক-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, হোটেলগুলো উচ্ছেদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে এসে পুনরায় তাদের প্রতিষ্ঠান চালু করেছে। সেক্টরটির ১১ নম্বর সড়কের হোটেল কমফোর্ট ইন-এর একই চিত্র দেখা গেছে। চলছে হোটেলের স্বাভাবিক কার্যক্রম। অতিথিরা আসছেন, চেক-ইন দিয়ে ভেতরে যাচ্ছেন। ভেতরে দেশের বাইরের কিছু অতিথিও দেখা গেছে। রাজউকের তথ্যমতে, হোটেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, গাড়ি রাখার স্থানে হোটেল লবি ও অভ্যর্থনার জন্য ব্যবহার। তখন কার্যক্রম বন্ধ করতে এবং অতিথিদের অন্যত্র সরিয়ে দিতে এক দিনের সময় বেঁধে দেয় রাজউক। কিন্তু এখন তা আগের মতই চলছে। এ ছাড়া,৭ নম্বর সড়কের হোটেল ব্লু বেল ইন্টারন্যাশনাল, ১৮ নম্বর সড়কের ১২ নম্বর প্লটের হোটেল এঙ্করেজ দ্য রেসিডেন্স প্রতিষ্ঠান দুটিও আগের মতো সচল। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, উচ্ছেদের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে পুনরায় প্রতিষ্ঠান চালু করেছেন। রাজউকের অনুমোদনেই রাষ্ট্রীয় সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ডেসকো এবং তিতাস গ্যাস থেকে তাদের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ আবার দেয়া হয়েছে। বাকারু রেস্তোরাঁর মতো আরও কিছু প্রতিষ্ঠান অবশ্য স্থান পরিবর্তন করে অন্যত্র চালু করেছে। ৪ নম্বর সেক্টরের ১৩ নম্বর সড়কের হোটেল শেফ দ্য সিটি, শাহজালাল অ্যাভিনিউর প্ল্যাটিনাম রেসিডেন্সের হোটেল শেলটেক,৩ নম্বর সেক্টরের হোটেল প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানও হাইকোর্টের উচ্ছেদ স্থগিতাদেশ চিঠির অপেক্ষায় আছে বলে জানা গেছে। শুধু উত্তরায়ই নয় বনশ্রী, খিলগাঁও ও মহাখালিসহ যেসব অবৈধ প্রতিষ্ঠান বা স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল এখন আবারো তা চালু করা হয়েছে। এভাবে উচ্ছেদ হওয়ায় প্রায় প্রতিষ্ঠান চালু হয়েছে। এতে রাজউকের অভিযান অনেকটাই বিফলে গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তবে রাজউকের কর্মকর্তারা বলছেন, নিয়ম মেনেই তারা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছেন। যে প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ কিংবা বন্ধ করা হয়েছিল, সেগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। আর উচ্ছেদ আদেশের পরে প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্চ আদালতে রিট করে উচ্ছেদ স্থগিতাদেশ নিয়ে এসে তাদের প্রতিষ্ঠান ফের চালু করেছে। এ ব্যাপারে রাজউকের সহকারী অথরাইজ অফিসার খায়রুজ্জামান বলেন, আমরা আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। এখন মহামান্য উচ্চ আদালতের অনুমতি নিয়েই তারা তাদের প্রতিষ্ঠান আবার চালু করেছে। এতে আমাদের উচ্ছেদ কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে।