আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
বস্তির জীবনকেও হার মানিয়েছে ঢাবির সলিমুল্লাহ মুসলিম হল

নবাব স্যার সলিমুল্লাহর নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্র হল ‘সলিমুল্লাহ মুসলিম হল।’ হলটিকে সবাই এসএম হল বলেই চেনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই হলটিতে তীব্র আবসন সংকট বিদ্যমান। নবাবের নামে হলটিতে ছাত্রদের বস্তিবাসীর মতো ঘিঞ্জি পরিবেশ বসবাস করতে হয়।
বহু বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রত্ব শেষ অথচ হলের কক্ষ দখল করে থাকেন অনেকে। আবাসন সমস্যা এই হলের একটি পুরাতন সমস্যা। কিন্তু সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনের কোনো তত্পরতা নেই। হলের ছাত্ররা বলছেন, নিয়ম মেনে ছাত্র ওঠা-নামানো করা এবং কোথায়ও হলের অতিরিক্ত ভবন তৈরি করা গেলে আবাসন সঙ্কট কিছুটা হলেও কমবে।
সরেজমিন দেখা যায়, হলের দোতলার দক্ষিণ পাশের বারান্দায় সারি সারি খাট। খাট ও বিছানা একটার সঙ্গে আরেকটা লাগানো। চৌকির নিচে, মাথার পাশে বই, ট্রাংক। একপাশ থেকে অন্য পাশে বহু কষ্টে যেতে হয়। বারান্দায় কয়েকটি বর্ষের অন্তত ৩০০ ছাত্র থাকেন। হলের গেমস রুমে ৮০ জন ছাত্র থাকেন।
দুইতলা বিশিষ্ট এসএম হলে ১৪৮টি কক্ষে ৪০২টি আসন রয়েছে। এসব কক্ষে প্রায় ১২০০ ছাত্র থাকেন। হলে ৬০টি একক শয্যার কক্ষের ৯০ শতাংশ কক্ষেই বহিরাগতরা থাকেন। এর বাইরে দুই শয্যার ১২টি, তিন শয্যার ২টি ও চার শয্যার ৭৪টিসহ ৮৮টি কক্ষ রয়েছে। এসব গুলোতেও ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে এমন অনেকে থাকেন।
নিয়ম অনুসারে ছাত্রদের দ্বিতীয় বর্ষ থেকে কক্ষ দেয়ার কথা। কিন্তু হল প্রশাসন সে নিয়ম পালনে সক্ষম হয় না। হলের অন্তত ৭০ জন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র বারান্দায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবন-যাপন করেন।
মুহিব নামে হলের চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্র বলেন, চার বেডের কক্ষে আটজন থাকা খুবই কষ্টকর। আটজনের আট রকম মন-মানসিকতা। পড়ালেখায় করা যায় না, মনও বসে না।
বারান্দায় বসবাস করা এক ছাত্র বলেন, এটা হল মেধার বিড়ম্বনা। ভেবেছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ভালো থাকব। কিন্তু মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
আবাসন সমস্যার বিষয়ে হল ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল বলেন, আমরা হল প্রশাসনের সঙ্গে একত্রে অনেক বহিরাগতদের বের করেছি। এখন তৃতীয়, চতুর্থ বর্ষের কাউকে হলের বারান্দায় থাকতে হয় না। বিসিএস পরীক্ষার পরে আরো কিছু বহিরাগত বের হবে। তখন শুধুমাত্র প্রথম বর্ষের ছাত্রদের বারান্দায় থাকতে হবে।
আবাসন সঙ্কটের বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুল আলম জোয়ার্দার বলেন, বহিরাগতদের উচ্ছেদ করার জন্য একবার প্রচেষ্টা নিয়েছিলাম। ঈদের পরে আবার নেব। তাদের বের করে দিয়ে নিয়মিত ছাত্রদের দেয়ার চেষ্টা করব।