আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
বাড়ি ভাড়া দিয়ে নিজেরা সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে

বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষে রাশিয়ায় হোটেল ব্যবসা জমজমাট। কোনো হোটেলে সিট পাওয়া কঠিন। পাওয়া গেলেও তার মূল্য অনেক বেশি। অন্যান্য সময়ের চেয়ে এখন ভাড়া কয়েকগুণ বেড়ে গেছে, বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রায় ৫০ লাখ দর্শক এখন রাশিয়ায় ছড়িয়ে আছে। যাদের টিকিট আছে তারা তো আছেনই। আর যাদের টিকিট নেই তারাও আছেন রাশিয়ায়। আর এই বিশাল দর্শকদের থাকার জায়গা হোটেল, মোটেল, হোস্টেল। এখানে আত্মীয়ের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা খুবই কম। সবাইকে বিকল্প ব্যবস্থা করে চলতে হয়।

সারাবিশ্ব হতে এতো দর্শক আসার কারণে হোটেলের চাহিদা বেড়ে গেছে। সেই সুযোগে হোটেল মালিকরাও মুনাফা তুলে নিচ্ছেন। দুই হাজার টাকার হোটেল এখন ৫ হাজার টাকায় ভাড়া হচ্ছে। যে শহরে খেলা নেই সেই শহরেও বাড়তি হোটেল ভাড়া গুনতে হচ্ছে ফুটবল পর্যটকদের। বাফুফের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিনকে ফিফা যে হোটেলে রেখেছিল সেই হোটেলের দামও এখন বাড়তি। প্রতিদিন সোয়া লাখ টাকা ভাড়া। আরো বাড়বে এমন কথাও শোনা যাচ্ছে।

সারা দুনিয়া হতে ধনকুবেররা এসেছেন ফুটবল খেলা দেখবেন বলে। তাদের কাছে ডলার যেন ছাপানো কাগজ। যেমন খুশি খরচ করছেন। এক চুমুক দিয়েই বিয়ারের ক্যান ফেলে দিচ্ছেন। খেলার দিন স্টেডিয়ামের কফিশপে ঢোকা যায় না তাদের অর্থের ছড়াছড়িতে। সাধারণ দর্শক খেলা দেখতে এসে ভোগান্তি পোহাচ্ছে। হোটেল সংকট। হোস্টেল সংকট। হোস্টেল আছে, এক রুমে ১২ জন থাকতে পারেন। পুরুষ নারী কোনো ভেদাভেদ নেই। উপরের বিছানায় নারী তো নিচের বিছানায় পুরুষ। একই টয়লেট। টয়েলেট হতে বেরিয়ে দেখবেন অপেক্ষায় আরেকজন তরুণী। কিংবা আপনার সামনেই পোশাক পরিবর্তন করছে। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগেও যে হোস্টেলটি ছিল ৩০০ টাকা (১০০ ডলারে ৬ হাজার রুবল)। পরে গিয়ে সেটি হলো ৬০০ টাকা। এখন দুই হাজার ৫০০ টাকা একটি বিছানা, এক রাতের ভাড়া। বাইরের দেশ থেকে যারা এসেছেন তারা তো কষ্ট করছেনই এমনকি যেসব রাশিয়ান এক শহর হতে অন্য শহরে গিয়েছেন তারাও আবাসন সংকটে আছেন।

রমরমা ব্যবসার গন্ধ পেয়ে অনেক রাশিয়ান তাদের নিজেদের ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। নিজেদের ঘর ভাড়া দিয়ে ১৬ জনের এক রুমে এক সিট ভাড়ায় থাকছেন। নাদিয়া নামের এক তরুণী, পেশায় প্রোগ্রাম অর্গানাইজার। সে আজ এই হোস্টেলে, কাল অন্য হোস্টেলে। কাউকে কিছু বলতে রাজি না। শুধু জানালেন আমার মতো সবাই এটা করছে।

একমাত্র বাচ্চা নিয়ে নিজের বাসা ছেড়ে দিয়েছেন এমন পরিবারও আছেন। বাংলাদেশিদের কাছে ১০ দিনের জন্য ঘর ভাড়া দিয়ে নিজেরা বাইরে। কোথায় থাকবেন বলে যাননি। তবে শোনা গেছে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে থাকতে পারেন। এভাবে অনেকেই ঘর ভাড়া দিয়ে টাকা কামাচ্ছেন।