
ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৬টি বেদখলী ও বুজে যাওয়া খাল খননের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। যা আগামী ২ বছরের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে এবং এগুলো সম্পন্ন হয়ে গেলে ঢাকায় আর জলাবদ্ধতা থাকবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দাকর মোশাররফ হোসেন।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে তার মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের উপর ৩৪ নম্বর দাবির উপর আনা ছাটাই প্রস্তাবের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, ছাটাই প্রস্তাবের উপর সংসদে বিরোধী দলসহ অনেক সংসদ সদস্য ঢাকায় জলাবদ্ধতার কথা বলেছেন। এটা একটা সমস্যা। ড্রেনেজ ব্যবস্থা সঠিক না থাকায় এটা হচ্ছে। তবে আমরা গত ২ বছর যাবৎ ড্রেনেজ ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কারে কাজ করে চলেছি। পৌরসভা, সিটি করপোরেশন ও ওয়াসা যৌথভাবে এ কাজ করে চলেছে। এ কাজের জন্য পানি নিষ্কাশন কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে কাজ দ্রত গতিতে চলছে। আশা করি আগামী বছর থেকে এ জলাবদ্ধতা দূর হবে।
মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয় এখনো স্বাবলম্বী নয়। দেশে আমাদের মোট ৩ লাখের উপর রাস্তা রয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে মোট রাস্তা ৩ লাখ ২১ হাজার ৪৬২ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১ লাখ ১১ হাজার ৫২৮ কিলোমিটার রাস্তা পাকা। বাকি রাস্তা এখনো কাঁচা বা ইট বসানো। তাই জনগণের চাহিদা উত্তরোত্তর বাড়ছে। তাদের চাহিদা মেটাতে হিমসিম খাচ্ছি। স্থানীয় মন্ত্রণালয়ের অধীনে এ পর্যন্ত ১৯৪৪টি প্রকল্প চলমান। এ ছাড়াও বিদেশি সাহায্যপুষ্ট অনেক প্রকল্প রয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে উপযুক্ত অর্থের প্রয়োজন।
তিনি বলেন, এসব রাস্তা এক বছরে ভেঙে যায় এ অভিযোগ ঠিক নয়। তবে হাইওয়ে ও গ্রামীণ রাস্তার স্টান্ডার্ড এক রকম নয়। এসব রাস্তার লোড নির্ধারণ করা থাকে। কিন্তু সমস্যা এই যে, ছোট ছোট রাস্তায় বেশি লোডের গাড়ি ঢুকে পড়ে রাস্তা নষ্ট করে ফেলে।
তবে এটা স্বীকার করতে হবে যে, সব রাস্তা হয়তো সমান মানের হয় না। অনেক সময় দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে গিয়ে কাজের মান নিম্ম মানের হয়ে যায়। এসময় তিনি সংসদ সদস্যদের নিজ নিজ এলাকায় রাস্তাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ মনিটরিং করে মন্ত্রণালয়ের নজরে আনার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, দেশে ১১টি সিটি করপোরেশন, ৩৩০টি পৌরসভা, ৬১টি জেলা পরিষদ (পার্বত্য চট্টগ্রাম বাদে), ৪৯২টি উপজেলা এবং ৪ হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে।
সুষম বণ্টন হয় না এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, যে এলাকা বড় ও জনসংখ্যা বেশি সেখানে বেশি বরাদ্দ দিতে হয় আবার কোন কোন এরিয়া ছোট সেখানে হয়তো কম বরাদ্দ করা হয়। তবে দেশের ৯৯ শতাংশ মানুষ স্যানিটেশনের আওয়ায় রয়েছে। খোলা আকাশের নীচে মলত্যাগ করেন মাত্র ১ শতাংশ মানুষ। এটি শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার জন্য কাজ চলছে। দেশের মানষের সুপেয় পানি দেয়ার জন্য নানা ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
বাজেট প্রস্তাবের ৩৪ নম্বর দাবির উপর ছাটাই প্রস্তাবের উপর আলোচনায় বক্তব্য দেন, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজী, জাপার কাজী ফিরোজ রশীদ, সেলিম উদ্দীন, নুরুল ইসলাম মিলন, ফকরুল ইমাম প্রমূখ।
তারা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মনে অভিযোগ করেন। পরে কণ্ঠে ভোটে তাদের ছাটাই প্রস্তাব নাকচ হয়ে যায়। পরিবর্তন.কম