আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
নতুন উদ্যোগে বদলে যাবে পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি এলাকা

ঢাকা মহানগরীর ঘিঞ্জি এলাকা আর থাকছে না। সেখানে গড়ে উঠবে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত বহুতল ভবন। সরু গলি, অপরিকল্পিত ও জরাজীর্ণ সব অবকাঠামো ভেঙে সেখানে গড়ে তোলা হবে প্রশস্ত রাস্তা, উন্মুক্ত স্থান যুক্ত বাসস্থান। জমির মালিকদের অধিকার অক্ষুণ্ণ রেখেই তাদের মতামতের ভিত্তিতেই এ ব্যাপারে বিধিমালা তৈরির উদ্যোগ প্রায় চূড়ান্ত করেছে সরকার। সিঙ্গাপুর, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও মালয়েশিয়ার অনেক ঘিঞ্জি এলাকা এখন উন্নত শহরে পরিণত হয়েছে। সেই একই পদ্ধতিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) তত্ত্বাবধানে ও সহযোগিতায় বিধিমালা প্রণয়নের কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। ল্যান্ড-রি-ডেভেলপমেন্ট বা ভূমির পুনঃউন্নয়ন বিধিমালা নামে চলতি বছরের মধ্যেই এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। এ পদ্ধতি পর্যায়ক্রমে ছড়িয়ে দেয়া হবে সারাদেশে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ল্যান্ড-রি-ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরের অনেক ঘিঞ্জি বা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এখন চেনাই যায় না। সেই পদ্ধতি বা কাছাকাছি মডেল অনুসরণ করে বদলে গেছে বিশ্বের অনেক ঘিঞ্জি শহর। সে বিষয়টি মাথায় রেখে রাজধানীর পুরান ঢাকাসহ অনেক অপরিকল্পিত অংশের চিত্র বদলে দিতে চায় সরকার। রাজউক এ সংক্রান্ত বিধিমালাও প্রণয়ন করছে। পুরান ঢাকায় পরীক্ষামূলক প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করতে চায় রাজউক। এরই মধ্যে পুরান ঢাকাবাসীর সঙ্গে একাধিকবার মতবিনিময় করে রাজউক একটি ধারণাপত্রও তৈরি করেছে। পরের ধাপে ঢাকা এবং তার আশপাশে একই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। ধীরে ধীরে এটা সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হবে।

ল্যান্ড রি-ডেভেলপমেন্টের খসড়া বিধিমালায় অ্যাডভাইজার প্যানেল, ব্যবস্থাপনা কমিটি, জমির মূল্যায়ন কমিটি, ভূমির পুনঃউন্নয়ন বা রি-ডেভেলপমেন্টের ধাপসমূহ সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া জমি মালিকদের সঙ্গে চুক্তিপত্র এবং প্রকল্প সম্পন্নের পর ব্যবস্থাপনাসহ সবই বিস্তারিত রয়েছে। কমিটিগুলোতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিশেষজ্ঞ ও দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাসমূহের প্রতিনিধিদের রাখার কথা বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম-সম্পাদক ও স্থপতি ইকবাল হাবিব যুগান্তরকে বলেন, ল্যান্ড রি-ডেভেলপমেন্ট ফর্মুলা খুবই ভালো উদ্যোগ। এর মাধ্যমে পৃথিবীর অনেক ঘিঞ্জি শহরকে আধুনিক ও বাসযোগ্য শহরে রূপান্তরিত করা সম্ভব হয়েছে। পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি পরিবেশ দূর করতে এ ফর্মুলা বাস্তবায়নে রাজউককে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। ল্যান্ড রি-ডেভেলপমেন্ট বিধিমালা প্রণয়ন কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন রাজউকের পরিকল্পনাবিদ ও ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার তিনি যুগান্তরকে বলেন, ল্যান্ড রি-ডেভেলপমেন্টের ধারণা বাংলাদেশের জন্য নতুন। এ ধারণা বাস্তবায়ন করে সিঙ্গাপুর, জাপানসহ পৃথিবীর অনেক দেশ সুফল পেয়েছে। এ ফর্মুলার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, এজন্য জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হয় না। আর পরিকল্পনা প্রণয়ন থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে ভূমির মালিক ও স্থানীয় ব্যক্তিদের মতামতের ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।