আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
১৮ প্রকল্পে সাত হাজার ৮৮২টি সরকারি ফ্ল্যাট, প্রধান স্থপতির স্বাক্ষরহীন মিনি মাস্টার প্ল্যান

সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ১৮টি প্রকল্পের মাধ্যমে সারা দেশে সাত হাজার ৮৮২টি বিভিন্ন আকৃতির আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণাধীন রয়েছে, যা সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের সংখ্যার ১৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। ঢাকা শহরে কর্মরত এক লাখ ৪৮ হাজার ৯১৫ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ৯২ শতাংশই আবাসনসুবিধা থেকে বঞ্চিত। মাত্র আট শতাংশ এই সুবিধা ভোগ করতে পারছেন। এখন সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ঢাকার বেইলী রোডে আলাদা প্রকল্পের মাধ্যমে ১১টি ভবনের মাধ্যমে ৫২৮টি বিভিন্ন আকৃতির ফ্ল্যাট নির্মাণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রকল্প এলাকার মিনি মাস্টার প্ল্যানে প্রধান স্থপতির স্বাক্ষর নেই বলে লে-আউট প্ল্যান পরীক্ষায় ধরা পড়েছে পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট উইংয়ের কাছে।

গণপূর্তের তথ্য থেকে জানা যায়, ঢাকা শহরে বসবাসরত সরকারি কর্মচারীদের আবাসন সমস্যা অত্যন্ত প্রকট। আবাসন পরিদফতর এ সঙ্কট সমাধান করতে পারছে না বলে তাদেরকে বাধ্য হয়ে অধিক মূল্য দিয়ে ব্যক্তি মালিকানাধীন নিম্নমানের বাড়ি ভাড়া দিয়ে থাকতে হচ্ছে। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৯ সালের মধ্যে ১৮ হাজার ২৭৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণের কথা। ইতঃপূর্বে দু’টি প্রকল্পের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের জনবলের জন্য শেরেবাংলা নগরে ৪৪৮টি ফ্ল্যাট এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের জন্য ৭৬টি ফ্ল্যাটসহ মোট ৫২৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ শেষ করা হয়েছে।

১৮টি প্রকল্পের মাধ্যমে মোট ২১ হাজার ৪৫৮টি আবাসিক ইউনিট নির্মাণ সম্পন্ন হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সচিব বা প্রথম গ্রেডের কর্মকর্তাদের জন্য ইস্কাটনে ১১৪টি, মতিঝিলে কর্মচারীদের জন্য ৪৫৬টি, মিরপুরের পাইকপাড়াতে ৬০৮টি, মিরপুরের সেকশন ৬ এ এক হাজার ৬৪টি, মিরপুরে গণপূর্তের খালি জায়গাতে ২৮৮টি, নারায়ণগঞ্জের আলিনগঞ্জে ৬৭২টি, মালিবাগে ৪৫৬টি, ঢাকায় বিভিন্ন স্থানের পরিত্যক্ত বাড়িতে ৩৯৮টি, চট্টগ্রামে ৫৯৬টি এবং পরিকল্পনা কমিশনের কর্মচারীদের জন্য ২২৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প।

সূত্রে জানা গেছে, কর্মকর্তাদের জন্য বেইলী রোডের অফিসার্স কোয়ার্টার ক্যাম্পাসে পুরনো ও জরাজীর্ণ ভবন ভেঙে ১১টি বহুতল ভবন নির্মাণ হবে। ৭ দশমিক ৩৪ একর জমির ওপর বর্তমানে ১৬টি ৬ তলা ভবন রয়েছে। এসব স্থাপনার কিছু অংশ ৭০ বছর আগে নির্মিত। এখানে ৫২৮টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করার পরিকল্পনা নিয়েছে গণপূর্ত অধিদফতর। ৬৭৭ কোটি ৩৫ লাখ ৪২ হাজার টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের কাছে। চলতি বছর প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে তা ২০২১ সালের জুনে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এখানে ৩টি ১৩ তলা ভবনে ১৮ শ’ বর্গফুটের ১৪৪টি, ৩টি ১৪তলা ভবনে ১৫ শ’ বর্গফুটের ১৪৪টি, ৩টি ১৩তলা ভবনে সাড়ে ১২ শ’ বর্গফুটের ১৪৪টি, ২টি ১৩তলা ভবনে এক হাজার বর্গফুটের ৯৬টি ফ্ল্যাট নির্মিত হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের পিইসি বলছে, প্রকল্পের মাস্টার প্ল্যান বা লে-আউট প্ল্যান পরীক্ষান্তে দেখা যায়, তাতে প্রধান স্থপতির স্বাক্ষর নেই। যেহেতু মিনি মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের বিষয়ে একনেকের নির্দেশনা রয়েছে, সেহেতু প্ল্যানটি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে। ১৮ শ’ বর্গফুট আয়তনের পরিবর্তে বাস্তবতার নিরিখে ছোট আকারের ফ্ল্যাট করা যেতে পারে। এতে করে ফ্ল্যাটের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং আরো বেশিসংখ্যক কর্মচারীর আবাসন সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে। কমিশন থেকে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের রেট শিডিউল দিয়ে প্রাক্কলন করা হয়েছে। এখন ২০১৮ সালের রেট শিডিউল করা হয়েছে। তাই নতুন শিডিউলে ব্যয় প্রাক্কলন করা উচিত। ক্রয়কাজে প্যাকেজ সংখ্যা কমিয়ে আনার জন্য পিইসি থেকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।