আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
ধুঁকতে থাকা আবাসন শিল্প আবারও বিপাকে

ধুঁকতে থাকা শিল্প রক্ষা নয় বরং, নতুন অর্থবছরের বাজেট পাসের পর আরেক দফা বিপাকে পড়েছে দেশের আবাসন খাত। এমন দাবি করে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজেটের আগে তাদের দেয়া প্রস্তাবের কোনটিই গ্রহণ করেনি সরকার, এমনকি ব্যাংক থেকেও মিলছেনা এক অংকের সুদে ঋণ সুবিধা। বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ রক্ষায় ভ্যাট আর সুদ সুবিধার সঙ্গে ২০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল চাইছেন তারা। সামগ্রিক পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন অর্থনীতিবিদরাও, অর্থনীতির কাঠামোগত উন্নয়নের স্বার্থেই আবাসন শিল্পের সুরক্ষা নিশ্চিতের আহ্বান তাদের।

নিস্কণ্ঠক জমি ক্রয়, নির্মাণসামগ্রী জোগাড়, তারপর মিস্ত্রির খোঁজ, দেশে নগরকেন্দ্রিক বাসস্থান নির্মাণে এরকমই জটিলতায় পড়তে হয় অধিকাংশ বাড়ি নির্মাতাকেই। এতে স্বাভাবিকভাবেই বিশেষ আগ্রহ সৃষ্টি হয় তৈরি ফ্লাট ক্রয়ে। যদিও, বেশ ক’বছর আবাসন খাতে সুদের হার নিম্নমুখী থাকলেও নতুন অর্থবছরের বাজেটে তা আবার বেড়েছে। এতে আবাসন শিল্পে বিক্রি কমেছে প্রায় ৭৫ শতাংশ। উচ্চ নিবন্ধন ফি’র কারণে ঝুলে আছে বহু প্লট ফ্লাটের হস্তান্তর প্রক্রিয়া।

২০১০ সালে গৃহঋণ প্রদানে বিশেষ তহবিল তৈরি করেছিলো বাংলাদেশ ব্যাংক, সে সময় ১৪টি ব্যাংক ও ২৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৬১০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিল সরকার। যদিও কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে সে উদ্যোগ, নতুন করে সামনে আসা সংকট নিরসনে বিশেষ তহবিল পুনরায় ফেরত চাইছেন ব্যবসায়ীরা।

ইম্পেরিয়াল ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শামিম রেজা বলেন, ‘টোটালি রিয়েল স্টেট সেক্টরে কোন লোন দিচ্ছে না। ১৩শ’ সদস্যের মধ্যে অর্ধেক কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।’

রিফা প্রোপার্টিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাঈদ উল্লাহ কোয়েল বলেন, ‘আবাসন সেক্টরে যখন সমস্যা সৃষ্টি হয় তখন আপনাকে ধরে নিতে হবে যে, এখানে বেকার সংকট বাড়বে। এরসাথে সরকারের ইনকাম ট্যাক্স, ভ্যাট, এগুলোও কমবে। নির্দিষ্ট একটা তহবিলের দাবি ছিলো, আমাদের রেজিস্ট্রেশনের ভ্যালু কমানোর কথা ছিলো। সেগুলোর কোনটাই কার্যকরী হয়নি।

বিনিয়োগবান্ধব আবাসন খাত তৈরির ক্ষেত্রে বাজেটে কোন দিকনির্দেশনা নেই বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরাও। তাদের আশঙ্কা, ভোক্তাপর্যায়ে ব্যয় বাড়লে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে সামগ্রিক অর্থনীতিতেই।

অর্থনীতিবিদ ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘সক্ষম দক্ষ আবাসন খাত যদি দেশের ভেতরে থাকে তাহলে এই লিংকেজের কারণে অন্য অনেক খাতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। ভারসাম্যপূর্ণ বাজেটারি ব্যবস্থার একেবারে বিপরীত একটা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সেই জায়গা থেকে আমি বলবো যে, একদিকে যেমন তারা সুবিধা পাননি আবার ছোট ফ্লাট তৈরি করার ক্ষেত্রে আবাসন ব্যবসায়ীদের যে আগ্রহ সেটাতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি কবে।’

দেশে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের আবাসন সুবিধা নিশ্চিতে ২০২০ সাল নাগাদ এ খাতে ব্যয় করতে হবে ৮২ হাজার কোটি টাকা। বিশ্বব্যাংকের গবেষণা বলছে, ৪৮ হাজার কোটি টাকা লাগবে শহরাঞ্চলে আর গ্রামীণ আবাসন নিশ্চিতে লাগবে ৩৪ হাজার কোটি টাকা। সময়টিভি