আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
আদালতের নির্দেশনা সত্ত্বেও উদ্যোগ নেই রাজউকের

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। কিন্তু ডি-বিল্ডার্স অ্যান্ড প্রপার্টিজ লিমিটেড নামের ওই প্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাজ বন্ধ করতে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেই। এমনকি আদালতের নির্দেশনার সাড়ে তিন মাসের বেশি পার হলেও নির্মাণকাজ বন্ধ করতে পারেনি সংস্থাটি। অথচ এক মাসের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল রাজউককে।

জানা গেছে, রাজউকের তিন নম্বর জোনের আওতাধীন মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের ১৪/৭ ও ১৪/৮ নম্বর প্লটে ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের অক্টোবরে। ওই প্লট দুটির মালিক নূর মোহাম্মদ ও কানিজ মোরশেদ আহমেদ। তবে ভবনটি নির্মাণ করছে ডি-বিল্ডার্স অ্যান্ড প্রপার্টিজ লিমিটেড। ভবনটির চারপাশে আইন অনুযায়ী ফাঁকা জায়গা না রাখায় পশ্চিম পাশের বাড়ির মালিক কাজী নিয়াজ মোহাম্মদ ২০১৮ সালের ৫ জুন অভিযোগ দায়ের করেন রাজউকে। তাতে সাড়া না পেয়ে একই বছরের ৩ জুলাই আবারও অভিযোগ দেন তিনি। এরপর গত বছরের ১৩ জুলাই রাজউকের তদন্ত কমিটি পরিদর্শন করে ভবনটি নির্মাণে আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পায়।

ভবনটির সেটব্যাক (পাশের বাধ্যতামূলক ফাঁকা জায়গা) সামনের দিকে শূন্য দশমিক ৮৩ মিটার, পেছনে ও ডানে শূন্য দশমিক ৮৭ মিটার এবং বাঁয়ে শূন্য দশমিক ৮৬ মিটার কম রাখা হয় বলে রাজউকের নোটিশে উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে ভবনটির নিচতলা ও অন্যান্য ছাদ সেটব্যাক (আবাসিক উন্মুক্ত স্থান) সামনে দেড় মিটার, পেছনে শূন্য দশমিক ৬০ মিটার এবং ডানে ও বাঁয়ে শূন্য দশমিক ৩০ মিটার অবৈধভাবে বাড়ানো হয়েছে বলেও জানায় রাজউক। পরে ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই অবৈধ স্থাপনা ভাঙতে চূড়ান্ত নোটিশ দেওয়া হয় রাজউকের পক্ষ থেকে। ওই নোটিশের একটি অনুলিপি মোহাম্মদপুর থানায়ও দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে রাজউকের নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন ডি-বিল্ডার্স অ্যান্ড প্রপার্টিজের চেয়ারম্যান সরোয়ার খালেদ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১২ আগস্ট রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের আদেশের পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর আপিল করেন নিয়াজ মোহাম্মদ। এর পরিপ্রেক্ষিতে রিট মোকদ্দমাটি ৩০ দিনে নিষ্পত্তি করতে রাজউককে আদেশ দেন হাইকোর্ট।

কাজী নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, ‘আইন-আদালতের নির্দেশের তোয়াক্কা করছে না নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। রাজউকের বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরতে ঘুরতে আমি ক্লান্ত। হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়নে রাজউক কার স্বার্থে কালক্ষেপণ করছে বুঝতে পারছি না।’ তিনি আরো বলেন, ‘পাঁচ কাঠা জমির মধ্যে বেইসমেন্টসহ সাততলার বেশি ভবনের নকশার অনুমোদন দেওয়ার বিধান নেই। কিন্তু এই ভবন বেইসমেন্টসহ ১১ তলা করা হচ্ছে। এই নকশার অনুমোদন কিভাবে দেওয়া হলো তাও জানি না।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সরোয়ার খালেদ বলেন, ‘আমি আইন লঙ্ঘন করলে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাজউক ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু তারা কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না?’

রাজউকের ৩ নম্বর জোনের অথরাইজড অফিসার মোবারক হোসেনের কাছে কালক্ষেপণের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। কালের কণ্ঠ