
বাড়িঘর বেচা-কেনা অত্যন্ত ঝামেলার, কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিভীষিকাময় কাজ। কখন গুরুত্বপূর্ণ দলিল হাতছাড়া হয়ে যায়, কখন সঠিক প্রক্রিয়ার অভাবে আইনি হাঙ্গামা বেঁধে যায়।
এ বেচাকেনার প্রক্রিয়া অনেকটাই সহজ করে নিয়ে এসেছে রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানগুলো। সময়ের সঙ্গে রিয়েল এস্টেটে এসেছে অনেক পরিবর্তন। অতীতে যেখানে পরিচিতদের মাধ্যমে খোঁজখবর নিয়ে বেচা-কেনা হয়েছে, এখন মানুষ ক্রমান্বয়ে রিয়েল এস্টেট এজেন্টের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।
বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেট এজেন্টের কার্যক্রম সেভাবে এখনো বেশ গতি না পেলেও ক্রমেই তার প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ধীরে ধীরে এজেন্টের চাহিদাও তৈরি হচ্ছে।
বহির্বিশ্বে বিভিন্ন স্থানে প্রযুক্তির কারণেও রিয়েল এস্টেট লেনদেন পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে।
নতুন ও অত্যাশ্চর্য্য প্রযুক্তির আবির্ভাবের সঙ্গে সব ক্ষেত্রেই আমূল পরিবর্তন এসেছে। রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ও প্রযুক্তির ফলে বেশ কিছু বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে। কিছু কিছু প্রযুক্তির ব্যবহারে তো ঘরবাড়ি বিক্রি, কেনা ও ভাড়া দেওয়া-নেওয়ার পদ্ধতিই পালটে যাচ্ছে আমূল। এসব প্রযুক্তিক-পদ্ধতিকে বলা হচ্ছে ‘রিয়েল এস্টেট টেক’ বা ‘রি-টেক’।
তেমন সময় দূরে নয় যখন বাংলাদেশেও এসব সুবিধা পাওয়া যাবে। এর মধ্যেই বিপ্রপার্টি.কম বাংলাদেশের বাড়িঘরের সর্ববৃহৎ অনলাইন ডাটাবেস তৈরি করে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ দিচ্ছে।
বিপ্রপার্টি.কম এর মতো সার্ভিসের জন্য এখন মানুষকে বাড়ি ভাড়া বা কেনা-বেচা করতে বিভিন্ন স্থানে হন্যে হয়ে ঘুরতে হচ্ছে না। এই প্রতিষ্ঠানটির কল্যাণে অনেকেই এক এজেন্টের কাছ থেকেই আইনি সহায়তা, রেজিস্ট্রি করাসহ সব কাজ করিয়ে নিচ্ছে এবং হাজারো ঝামেলা এড়াতে পারছেন।
অদূর ভবিষ্যতে বিভিন্ন বৈপ্লবিক প্রযুক্তির কারণে বাসা ভাড়া নেওয়া, কেনা-বেচার পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া সব বদলে দেবে বাংলাদেশের এই খাতটিকেও। অবশ্য এর মধ্যেই এ মডেলগুলো নতুন উদ্যোক্তারা তৈরি ও ব্যবহার করে দেখাচ্ছেন।
ভোক্তা-এজেন্ট মার্কেট
‘সিটুএ’ মার্কেটপ্লেস বা ক্রেতা থেকে এজেন্ট মার্কেট এর মাধ্যমে ভোক্তা এবং এজেন্ট এর যোগাযোগ ও লেনদেন ঘটে। প্রযুক্তির ফলে সেবাগুলো একত্রীকরণ করে বড় ডাটাবেস ও স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ার সাহায্যে সেবা দেওয়া হয়। হংকং থেকে পরিচালিত প্রতিষ্ঠান ‘স্পেইশাস’,এমন মডেলের ব্যবহার করছে।
ভোক্তা থেকে ভোক্তা মার্কেট
‘সিটুসি’ বা ভোক্তা থেকে ভোক্তা মার্কেটের মডেল মধ্যস্থতাকারীকে বাদ দিয়ে সরাসরি বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়া/ক্রেতার মধ্যে লেনদেনের ব্যবস্থা করে দেয়। ব্যাঙ্গালোরে অবস্থিত ‘নোব্রোকার’এ মডেলের স্টার্টআপের জন্য ১৩ মিলিয়ন ডলার তহবিল সংগ্রহ করেছে।
প্রযুক্তি চালিত এজেন্সি
এ মডেলে এজেন্সি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে প্ল্যাটফর্ম ভিত্তিক সেবা প্রদান করবে। অর্থাৎ সেবাগ্রহণকারী অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে,যেটুকু বাইরে না গেলেই নয় তা বাদে, সব প্রয়োজনীয়তা সেরে নিতে পারবেন। হংকং এর ওকে ডটকম এমন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে।
অনলাইন থেকে অফলাইন এজেন্সি
এখানে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, নিজস্ব এজেন্ট ও অফলাইন কার্য্যালয় এর সমন্বয় ঘটিয়ে সার্ভিস দেওয়া হয়ে থাকে। এশিয়ার মার্কেটে এ মডেলটি বেশি চালিত। বাংলাদেশে বিপ্রপার্টি.কম এমন সার্ভিস দিচ্ছে।
ভি.আর দেখার সুবিধা
দৃশ্য সমন্বয়কারী ছবি ও ভিডিও তৈরি করা এখন অসাধ্য কিছু তো নয়ই, এমন কি খুব কঠিনও নয়। সে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়েই রিয়েল এস্টেট এ চলে এসেছে ভি.আর দিয়ে বাসা দেখবার সুবিধা। ভি.আর বা ভারচুয়াল রিয়ালিটির বৃহৎ ডাটাবেস থাকলে আপনাকে আর দীর্ঘ রাস্তা ও ভিড় পাড়ি দিয়ে যেতে হবে না বাসা দেখতে। একি সঙ্গে আপনি খুব কম সময়েই অনেক বাড়ি দেখে ফেলতে পারবেন এবং তার জন্য আপনাকে নিজের ঘর থেকে বেরও হতে হবে না। হংকংয়ের ‘প্যারাল্যাক্স’ এ প্রযুক্তির ব্যবহার করছে। তাদের ওয়েবসাইট থেকে আপনিও দেখে আসতে পারেন এ চমকপ্রদ প্রযুক্তির সুবিধা।