আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com

পল্লবীতে যুবককে হত্যা, সাবেক এমপি আওয়াল প্রধান আসামি »

পল্লবীতে যুবককে হত্যা, সাবেক এমপি আওয়াল প্রধান আসামি

রাজধানীর পল্লবীর ১২ নম্বরে সাহিনুদ্দিন নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সাবেক তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব ও লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য এম এ আওয়ালকে প্রধান আসামি করে ২০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে।

নিহতের মা আকলিমা বাদী হয়ে রোববার দিবাগত রাতে পল্লবী থানায় মামলাটি করেন।  

মামলার অন্য আসামিরা হলেন আবু তাহের, মো. সুমন, মো. মুরাদ, মো. মানিক, মো. মনির, মো. শফিক, মো. টিটু, আ. রাজ্জাক, মো. শফিক (২), কামরুল, মো. কিবরিয়া, মো. দিপু, মরন আলী, মো. লিটন, আবুল, সুমন ওরপে ন্যাটা সুমন, কালু, বাবু ও ইয়াবা বাবু। 

এর আগে রোবাবার বিকালে মিরপুর ১২ নম্বর ডি ব্লকের ৩১ নম্বর রোডের ৩৬ নম্বর বাড়ির সামনে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করে স্থানীয় বাসিন্দা সাহিনুদ্দিনকে।
 
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন বিকালে সাহিনুদ্দিনকে ফোন করে মিরপুর ১২ নম্বরের  ৩১ নম্বর রোডে দেখা করার কথা বলে মামলার ৩ নম্বর আসামি সুমন।  সাহিনুদ্দিন তার ৬ বছরের ছেলে মাশরাফিকে মোটরসাইকেলে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।  সেখানে পৌঁছালে তর্কে জড়িয়ে পড়েন সাহিনুদ্দিন ও ঘাতক সুমন। এরপর ছেলের চোখের সামনেই বাবাকে লাথি মেরে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেয় সুমনসহ অজ্ঞাত আরও ৬-৭ জন। পরবর্তীতে আসামিরা সাহিনুদ্দিনকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে।  বাঁচার জন্য সাহিন পাশের একটি বাড়ির গ্যারেজে আশ্রয় নিলেও সন্ত্রাসীরা সেখানে ঢুকে তাকে কুপিয়ে দেহ থেকে মাথা বিছিন্ন করে ফেলে। 

নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরেই এম এ আওয়ালের নির্দেশে সুমন বাহিনী এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। কিছুদিন আগেও সুমন বাহিনী সাহিনুদ্দিনকে কুপিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় ওই সময় পল্লবী থানায় মামলাও হয়।

সূত্র জানায়, মিরপুর ১২ নম্বর জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের আবাসন ফ্ল্যাট প্রকল্প স্বপ্ন নগরীর পাশে  বাউনিয়া মৌজার জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সরকারি জায়গা দখল করে একটি হাউজিং কোম্পানি গড়ে তোলেন সাবেক এমপি এম এ আওয়াল।  কোম্পানির নামকরণ করেন হ্যাভেলী প্রোর্পাটিজ ডেভেলপার লি.।  সেই জায়গা প্লট আকারেও তিনি দেদারসে বিক্রি করেন। ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে কাঠা প্রতি হাকিয়েছেন কোটি টাকা। এক জায়গা কয়েকবার বিকিনিকি করেছেন।  ওই জায়গা দখল ও ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে তিনি ৩০ সদস্যের একটি সন্ত্রাসী বাহিনীও গঠন করেন। বাহিনী প্রধান যুবলীগ নেতা সুমন। 

স্থানীয়রা জানান এ বাহিনী প্রায় সময় জমিজমার দখলবাজি নিয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটায়। পল্লবী থানায় এ নিয়ে গত ২ মাসে ৬ টির বেশি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আওয়ালের বিরুদ্ধেও জায়গা দখলের একাধিক অভিযোগ রয়েছে পল্লবী থানায়। 

জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ঢাকা ডিভিশন ১ এর এস ডি ই মো. সোহেল বলেন,  মিরপুর ১২ নম্বর স্বপ্ননগরীর পাশে বাউনিয়া মৌজার জায়গাটি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের। এখানে কিছু জায়গা আছে যা অনেকে ব্যক্তি মালিকানাধীন হিসেবে দাবি করেন। এ জন্য মামলাও হয়েছে। অবশ্য আমাদের পক্ষে একটি মামলার রায় এসেছে। আশা করি অন্য মামালার রায়ও আমাদের পক্ষে আসবে।  এখানে পুরোটাই সরকারি জমি। তবে এ ব্যাপারে আমাদের আইন কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন। 

পল্লবী থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী বলেন, এ ঘটনায় পল্লবী থানায় ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। একজন গ্রেফতার হয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধান আসামি এম এ আওয়ালের রাজনৈতিক পরিচয় কি তা আমি জানি না। 

উল্লেখ্য, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটের শরিক হিসেবে তরিকত ফেডারেশন থেকে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এম এ আওয়াল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তরিকত ফেডারেশন থেকে মহাজোটের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় দল বদল করে জাকের পার্টির প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে ঋণ খেলাপি হওয়ার কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। যুগান্তর