আবার বাড়তে শুরু করেছে নির্মাণ সামগ্রীর অন্যতম প্রধান উপকরণ রডের দাম। গেলো এক সপ্তাহে প্রতি টন রডের দাম দুই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে দেশের বাজারে ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে পৌঁছায় রড। তখন ভালো মানের বা ৬০ গ্রেডের ওপরে এক টন রড খুচরা পর্যায়ে ৮১ হাজার টাকার ওপরে উঠে যায়।
ইতিহাসের সর্বোচ্চ দাম স্পর্শ করার পর ডিসেম্বরে এসে কমতে শুরু করে রডের দাম। ৮১ হাজার টাকা থেকে কমে চলতি বছরের শুরুর দিকে ৭৬ হাজার টাকায় চলে আসে। তবে এক সপ্তাহ ধরে আবার বাড়তে শুরু করেছে রডের দাম। এতে ভালো মানের এক টন রড ৮০ হাজার টাকায় উঠেছে।
এর আগে ওয়ান ইলেভেনের (২০০৭ সালের ১১ নভেম্বর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতা) সময় প্রতি টন রডের দাম সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকায় উঠেছিল।
রডের এই দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, হঠাৎ করে আন্তর্জাতিক বাজারে রডের কাঁচামাল স্ক্র্যাপের দাম বেড়ে গেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে স্ক্র্যাপের দাম বেড়েছে দুই হাজার টাকার ওপরে। সেই সঙ্গে রডের চাহিদাও কিছুটা বেড়েছে। সব মিলিয়ে বেড়েছে রডের দাম।
খুচরা ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখন ভালো মানের বা ৬০ গ্রেড এক টন রড কোম্পানি ভেদে বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৭৩ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭১ হাজার থেকে ৭৮ হাজার টাকার মধ্যে।
এদিকে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এখন ৬০ গ্রেডের রড ১৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। আর ৪০ গ্রেডের রডের দাম গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ১০ দশমিক ৫১ শতাংশ।
রডের দামের বিষয়ে পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী সঞ্জয় চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, গত বছরের নভেম্বরে ভালো মানের ৬০ গ্রেড রড ৮২ হাজার টাকায়ও বিক্রি করেছি। এখনো পর্যন্ত দেশের ইতিহাসে এটা রডের সর্বোচ্চ দাম। এরপর রডের দাম কিছুটা কমে ৭৭-৭৮ হাজার টাকায় চলে এসেছিল। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে রডের দাম আবার বাড়ছে। কিছুদিন আগে যে রড ৭৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি, এখন তা ৮০ হাজার টাকার ওপরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের ধারণা সামনে অস্বাভাবিক কিছু না হলে রডের দাম আরও বাড়বে। কারণ প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চে নির্মাণ কাজ বেশি হয়। তাই এই সময়ে রডের চাহিদাও বেশি থাকে। এরই মধ্যে রডের চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। করোনার কারণে কাজকর্ম বন্ধ না হয়ে গেলে সামনে রডের চাহিদা আরও বাড়বে। সেক্ষেত্রে রডের দাম ৮২-৮৩ হাজার টাকা হয়ে গেলে আমরা অবাক হবো না।
হঠাৎ রডের দাম বাড়ার বিষয়ে কদমতলী স্টিল মিলস প্রাইভেট লিমিটেডের (কেএসএমএল) চেয়ারম্যান আজিজ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, রডের কেমিক্যাল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে রডের কাঁচামাল স্ক্র্যাপের দাম অনেক বেড়ে গেছে। গত ৫-৬ দিনে স্ক্র্যাপের দাম বেড়েছে দুই হাজার টাকার ওপরে। কাঁচামালের এই দাম বাড়ার কারণেই রডের দাম বেড়েছ।
শুধু কী কাঁচামালের দাম বাড়ার কারণে রডের দাম বেড়েছে, রডের চাহিদা বাড়েনি? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, রডের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। তবে করোনার কারণে কিছু কাজ বন্ধ। যে কারণে রডের চাহিদা যে পরিমাণ বাড়ার কথা, সে পরিমাণ বাড়েনি। আমাদের এ সেক্টর বর্তমানে বেশ সমস্যার মধ্যে আছে। বিক্রি অনেক কম। মূলত কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছি। জাগোনিউজ২৪