
আবাসন কোম্পানির ভূমি আগ্রাসন, জমি জবরদখল, কৃষকের জমি ভুয়া দলিলের মাধ্যমে লুট করা আর না কিনেই জমিতে বালি ভরাটের প্রতিবাদে জেহাদ ঘোষণা করেছেন রূপগঞ্জের সংসদ সদস্য গাজী গোলাম দস্তগীর (বীর প্রতীক)। আবাসন বণিকদের হিংস্র থাবা থেকে উদ্ধার করে রূপগঞ্জের আধিবাসীদের স্ব-ভূমিতে বসবাসের অধিকার আদায়ে তার এই জেহাদ বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে নেতাকর্মীদের নিয়ে ভূমিদস্যুতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধনসহ ভূমিদস্যু কোম্পানিগুলোকে রূপগঞ্জে জবরদখল বন্ধের নির্দেশ দেন এমপি। জানা গেছে, রূপগঞ্জ সদর আর দাউদপুর ইউনিয়নের কিছু এলাকা নিয়ে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার একর জমির ওপর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাউজক) নির্মাণ করছে দেশের আধুনিক শহর পূর্বাচল।
এই পূর্বাচল প্রকল্প শুরুর পর থেকে আবাসন বণিকদের চোখ পড়ে এই উপজেলায়। বিভিন্ন নামে বেনামে প্রায় ৩শ’ হাউজিং কোম্পানি পূর্বাচল লোগো লাগিয়ে তাদের দোকান খুলে বসেন। এছাড়া রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় আবাসন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা হাউজিং। তারা কায়েতপাড়া পূর্বাচল লাগোয়া রূপগঞ্জ সদর, কাঞ্চন পৌর এলাকা আর ভোরাব ইউনিয়নে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রকল্প তৈরি করতে জমি ক্রয় আর বালুভরাটের কাজ শুরু করেছে। এছাড়া অর্ধ শতাধিক আবাসন প্রকল্প রয়েছে। এসব আবাসন প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত দালাল এজেন্টরা অনেকক্ষেত্রে উপজেলার নিরীহ কৃষকদের জমি কিনে না কিনে শুরু করে জবর দখল। কেউ কেউ অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জমি কোম্পানিকে লিখে দিতে বাধ্য করেন। আবার অনেক নিরীহ মানুষের জমি খাড়া (ভুয়া) দলিল করে কোম্পানির নামে নিয়ে নিচ্ছেন চতুর ভূমিদস্যুর দল। এছাড়া ভাইয়ে বসবাস করছে এ অবস্থায় বোনকে ফুসলিয়ে অংশ কিনে মাস্তান দিয়ে দখল করে নিচ্ছে সাধারণ মানুষের জমি। বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া সাইনবোর্ড দেখিয়ে আর পূর্বাচল উপশহরের নাম ভাঙিয়ে বিক্রি হচ্ছে কোটি কোটি টাকার জমি। বলা হচ্ছে ‘এ আর এক পূর্বাচল’।
ক্রেতাদের জমি দেখানোর জন্য মৌসুম ভিত্তিতে সাইনবোর্ড লাগানোর জমি ভাড়া মিলছে রূপগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামে। গ্রামে ছোট আকৃতির একেকটা টিনের সাইনবোর্ড ভাড়া বছরে গড়ে মাত্র দুই থেকে তিন হাজার টাকা। ইট-সিমেন্টের পাকা সাইনবোর্ডের ভাড়া লাখ টাকার মতো। পূর্বাচল উপশহরের নাম ভাঙিয়ে রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া, রূপগঞ্জ সদর, দাউদপুর, ভোলাব ইউনিয়ন ও কাঞ্চন পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় এভাবেই চলছে প্লট বাণিজ্য। হাউজিং প্রকল্পের লোকজনেরা অধিকাংশই গ্রাহকদের ঠকাচ্ছে নতুন এই কৌশলে। এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) বলেন, দীর্ঘদিন এ উপজেলায় সুনির্দিষ্ট কোনো ভূমি ব্যবহার নীতিমালা না থাকায় ফসলি জমির অপব্যবহার হয়েছে নিরবচ্ছিন্নভাবে। আর চতুর আবাসন ব্যবসায়ীরা রূপগঞ্জকে গিলে খেতে হা করে বসে আছে। আমি এমপি থাকি বা না থাকি ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে আমার আন্দোলন চলমান থাকবে।