আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
আবারো বাড়ল পেঁয়াজের দাম, ক্ষোভ

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পেঁয়াজের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। গত পাঁচ দিনে রাজধানীর বাজারে এই পণ্যের দাম প্রতি কেজিতে ১৫ টাকা বেড়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) এক কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ ৫০ এবং দেশি পেঁয়াজ ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতিবেশি দেশ ভারতে দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারে পেঁয়াজের এই মূল্যবৃদ্ধির কারণ বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে, এমনিতেই বেশ কয়েক দিন ধরেই সবজি ও মাছের দাম চড়া। চালের দামও তেমন কমছে না। এর ওপর পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় আরেকটু বাড়াল। এ এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক ক্রেতা।

জানা যায়, রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা- দুই বাজারেই একই হারে বেড়েছে। ১২ অক্টোবর ঢাকার খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় উঠেছে। অন্যদিকে, ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয় কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৫৪ টাকা দরে। এক সপ্তাহ আগেও দেশি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৪৮ টাকায় ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৮ থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।

পশ্চিম আগারগাঁও কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারের দোকানি সিরাজ মিয়া প্রতিকেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করেন ৫০ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। তিনি বলেন, পাঁচদিন ধরে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে।

পেঁয়াজ কিনে ফেরার সময় স্থানীয় বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন আহমেদ অনেকটা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, সবকিছুর দামই বাড়ছে। পেঁয়াজ আর বাকি থাকবে কেন?

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি ও আমদানি করা দুই ধরনের পেঁয়াজের দামই বেড়েছে। টিসিবির বাজারদরের তালিকা অনুযায়ী এক মাসে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের পেঁয়াজের দর ১০ থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা জানান, দেশি মজুদ পেঁয়াজ এখন কৃষকদের ঘরে নেই। থাকলেও তা সীমিত। এ কারণে আমদানি করা পেঁয়াজের ওপর নির্ভরতা বাড়ছে। দেশে আমদানি হওয়া পেঁয়াজের মূল অংশ ভারত থেকে আসে। ভারতে গত এক সপ্তাহে দাম বাড়ছে। এ কারণে দেশের বাজারেও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।

ঢাকার কৃষিপণ্যের পাইকারি বাজার শ্যামবাজারকেন্দ্রিক আমদানিকারক মো. মাজেদ সাংবাদিকদের বলেন, পেঁয়াজ পচনশীল বলে আমদানি করে দ্রুত বিক্রি করতে হয়। দাম বাড়লেও আমদানিকারকদের এখনো লোকসান হচ্ছে।

মাজেদ আরো বলেন, ৪০ টাকা দরে পেঁয়াজ আমদানি করে আমি কিছুদিন আগে কেজি ১০-১২ টাকায় বিক্রি করেছি। এতে বিপুল লোকসান হয়েছে। এখনো ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি করে কারও লাভ হচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত আগস্টে দাম বাড়তে বাড়তে দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৬৫-৭০ এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৫৫ টাকায় উঠেছিল। পবিত্র ঈদুল আজহার কয়েক দিন পর দাম কমতে থাকে। চলতি মাসের প্রথম দিকে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৪০ এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়।

সবজির দাম চড়া
এদিকে, বাজারে সবজির দাম এখনো চড়া। বেশির ভাগ সবজির কেজি প্রতি দাম ৬০ টাকার ওপর। ভালো মানের বেগুন, বরবটি, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, করলা, শসা ইত্যাদির প্রতি কেজির দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা। একটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। একটি জালি কুমড়া কিনতে খরচ হচ্ছে ৪০ টাকা। কম দামি সবজির মধ্যে আছে কাঁচা পেঁপে, প্রতি কেজি ২০-২৫ টাকা।

দাম কমেছে কাঁচা মরিচের
কাঁচা মরিচের দাম সামান্য কমেছে। ১০০ গ্রাম ২০ টাকা ও ২৫০ গ্রাম ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি কিনলে দাম পড়ছে মানভেদে ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ২৫০ টাকায় উঠেছিল।

মাছের দামও কমেনি
মাছের দামও কমেনি। কারওয়ান বাজারের বিক্রেতারা বলেন, কয়েক দিন পরেই ইলিশ ধরা আবার শুরু হবে। পাশাপাশি খালবিলের পানি শুকাতে থাকায় মাছ ধরা বাড়বে। এতে দাম কমবে।