আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com

ওয়ারিশ কারা? সম্পত্তি বন্টনের নিয়মাবলী »

ওয়ারিশ কারা? সম্পত্তি বন্টনের নিয়মাবলী

বন্টনযোগ্য সম্পদ থেকে প্রথমে অংশীদারগণকে তাদের জন্য নির্ধারিত অংশ প্রদান করা হবে। বাকি সম্পত্তি যদি থাকে তবে রেসিডুয়ারিগণের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হবে। যদি অংশীদার বা রেসিডুয়ারির মধ্যে কোন ওয়ারিশ না থাকে তবে দূর সম্পর্কীয় আত্বীয়গণের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়।

মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ নীতি:
(ক) মৃতের সাথে যার কারণে বা মাধ্যমে সম্পর্কযুক্ত তিনি বেচেঁ থাকলে পরবর্তী সম্পর্কযুক্ত ব্যক্তি ওয়ারিশ হবে না । যেমন পিতা বেচেঁ থাকলে ভাই সম্পত্তি পায় না।
(খ) একই শ্রেণির উত্তরাধিকারীদের মধ্যে নিকটবর্তীর কারণে দূরবর্তী বঞ্চিত হয়। যেমন পিতার কারণে দাদা বঞ্চিত হয়। ব্যতিক্রম-কন্যার কারণে ভাইয়ের ছেলে বঞ্চিত হয় না।
(গ) পাচঁজন উত্তরাধিকারী কোন অবস্থাতেই বঞ্চিত হবে না। ১. সন্তান-পুত্র এবং কন্যা, ২. পিতা, ৩. মাতা, ৪.স্বামী, ৫. স্ত্রী । এদেরকে প্রাথমিক উত্তরাধিকারী বলা হয়ে থাকে।
উপরোক্ত ৫ জনের মধ্যে তিন জনের বিকল্প উত্তরাধিকারী রয়েছে। তারা হচ্ছে-১. সন্তানের সন্তান (যত নিম্নে হতে পারে), ২. দাদা (যত উপরে হতে পারে), ৩.দাদী অথবা নানী (যত উপরে হতে পারে)। স্বামী ও স্ত্রীর কোন বিকল্প উত্তরাধিকারী নাই।
(ঘ) প্রাথমিক উত্তরাধিকারী থাকলে তার বিকল্প উত্তরাধিকারী সম্পত্তি পাবে না। ব্যতিক্রম-যখন কোন পুত্র থাকবে না কিন্তু এক কন্যা ও ছেলের কন্যা থাকলে কন্যা ১/২ অংশ এবং পুত্রের কন্যা ১/৬ অংশ পাবে।
(ঙ) সাধারণ সমপর্যায়ের নারী পুরুষের অর্ধেক থেকে পাবে। যেমন কন্যা পুত্রের অর্ধেক পাবে।
(চ) দুটো কারণে একজন উত্তরাধিকারী সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হয়। ১. যার সম্পত্তি বন্টন হচ্ছে তাকে হত্যা করলে। ২.ভিন্ন ধর্ম গ্রহণ করলে।
(ছ) কোন ব্যক্তির মৃত্যুর সময় তার জীবিত আত্মীয়গণ উত্তরাধিকারী হিসাবে বিবেচিত হবে।

ওয়ারিশ হিসাবে অংশীদারেরা কে কি পরিমাণ সম্পত্তি পাবে সে বিষয়ে কতিপয় উদাহরণঃ

(ক) মৃত ব্যক্তিঃ পিতা-পিতার পিতা, মাতা-মাতার মাতা, দুই কন্যা-পুত্রের কন্যা।

কোন ব্যক্তি মৃত্যুকালে পূর্ববর্ণিত ৬ ধরনের আত্নীয়/ওয়ারিশ রেখে মৃত্যুবরণ করলে, ওযারিশরা নিম্নোক্তভাবে সম্পত্তি প্রাপ্য হবেন।
১. পিতা—————–১/৬ (যেহেতু কন্যা আছে)
২. পিতার মাতা———- (পিতার কারণে বাদ)
৩. মাতা—————– ১/৬ (যেহেতু কন্যা আছে)
৪. মাতার মাতা———- (মাতার কারণে বাদ)
৫. দুই কন্যা———— ২/৩
৬. প্রত্রের কন্যা——— (কন্যার কারণে বাদ)

(খ) মৃত ব্যক্তিঃ- পিতা-মাতা, কন্যা-পুত্রের কন্যা ৪ জন

কোন ব্যক্তি মৃত্যুকালে পূর্ববর্ণিত ওয়ারিশ রেখে মৃত্যুবরণ করলে তার ওয়ারিশরা নিম্নোক্তভাবে সম্পত্তি পাবেন।
১. পিতা——————-১/৬ (সন্তান বর্তমান)
২. মাতা———— —– ১/৬ (সন্তান বর্তমান)
৩. কন্যা———— —— ১ (এক কন্যা)
৪. পুত্রের কন্যা ৪ জন—— ১/৬ (প্রত্যেকে ১/২৪ অংশ)

(গ) মৃত ব্যক্তিঃ– মাতা-বোন-পিতা।

১. পিতা———— ১/৩ (সম্পত্তি নাই এক বোন আছে)
২. বোন———— (পিতার কারণে বাদ)
৩. পিতা———— ২/৩ (অংশীদার ও রেসিডুয়ারী)

(ঘ) মৃত ব্যক্তিঃ- পিতার মাতা-মাতার মাতা-পিতার পিতা।মৃত ব্যক্তির পিতার মাতা (দাদী), মাতার মাতা (নানী) ও পিতার পিতা (দাদা) ওয়ারিশ থাকলে সম্পত্তি পাবে।

(ঙ) কোন মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি থেকে ৫ জন ব্যক্তিকে কোন ক্রমে বাদ দেওয়া যাবে না। কোন মৃতের পিতা, মাতা, স্বামী বা স্ত্রী জীবিত থাকলে তাদের অংশ আগে বন্টন করতে হবে। অবশিষ্ট সম্পত্তি বন্টনের ক্ষেত্রে পুত্র কন্যা থাকলে পুত্র ও কন্যা থাকলে পুত্র কন্যার দ্বিগুণ পাবে। তবে সন্তানের সন্তান, দাদা, দাদী অথবা নানীর বিকল্প উত্তরাধিকারী রয়েছেন। যেমন-

মৃত ব্যক্তিঃ-পিতা-মাতা-স্ত্রী-দুই পুত্র-দুই কন্যা। কোন ব্যক্তি মৃত্যুকালে পূর্ববর্ণিত ৪ ধরনের আত্নীয় /ওয়ারিশ রেখে মৃত্যুবরণ করলে, ওয়ারিশরা নিম্নোক্কভাবে সম্পত্তি প্রাপ্য হবেন।
১. পিতা————- ১/৬ (যেহেতু কন্যা আছে)
২. মাতা————- ১/৬ ( যেহেতু কন্যা আছে)
৩. স্ত্রী————— ১//৮
৪. অবশিষ্ট সম্পত্তি = ১-/+১/৬+১/৮=১৩/২৪ অংশ
৫. এক পুত্র পাবে -১৩/২৪ এর ২/৬ =১৩/৭২ অংশ
৬. দুই পুত্র পাবে -১৩/৩৬ অংশ
৭. এক কন্যা পাবে -১৩/২৪ এর ১/৬ = ১৩/১৪৪ অংশ
৮. দুই কন্যা পাবে -১৩/৭২ অংশ