আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
বাড়ছে রডের দাম

দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন। বাড়ছে কলকারখানা, অফিস এবং আবাসন নির্মাণ। ফলে নির্মাণসামগ্রীর চাহিদা বেড়েই চলেছে। ইট-সুরকির কাজ করতে গেলে রডের বিষয়টি চলে আসে। বিশেষ করে যখন টেকসই কাঠামো কিংবা বহুতল আবাসনের কথা ভাবা হয়, তখন রড আবশ্যকীয় উপাদান হয়ে ওঠে। রডের দাম বাড়লে, নির্মাণ খরচও বেড়ে যায়। বর্তমানে দেশে রডের দাম চড়া বলে এক প্রতিবেদনে প্রকাশ। জানা যায়, রড উৎপাদনের কারখানা স্টিল মিল ও অটো স্টিল মিলগুলোয় গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট রয়েছে। এ অবস্থায় চাহিদার কম বিদ্যুৎ নিয়ে উৎপাদন ব্যবস্থা কঠিন হয়ে উঠছে বলে জানান উদ্যোক্তারা। এ অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পিক আওয়ারেও বিদ্যুৎ নিতে বাধ্য হচ্ছে। আবার ভ্যাট-ট্যাক্সের নানা ঝামেলা তো আছেই। ফলে এমএস (ম্যানুফেকচারিং স্টিল) রডের দাম বেড়েই চলেছে। অনিবার্য কারণেই নির্মাণকাজে ব্যয় বেড়ে গেছে।

সূত্রমতে, আগে থেকেই বিদ্যুৎ-গ্যাসের সংকট ছিল। বাড়তি বিদ্যুতের জন্য পিডিবিকে বলা হলে তারা সাবস্টেশন স্থাপনের জন্য জায়গা চায়। তাতে দেখা যায়, সাবস্টেশনের জায়গা দিতেই ব্যয় হয় কারখানা প্রজেক্টের চেয়ে বেশি। ফলে অবস্থার কোনো উন্নতি হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টদের মতে, এ ধরনের অসহযোগিতা থাকলে বিদেশি উদ্যোক্তারাই সুবিধা পাবেন। আর দেশীয় উদ্যোক্তারা পড়বেন ক্ষতির মুখে। এদিকে প্রকাশ, দাম যাচাইয়ে দেখা যায়, গেল এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেড ভেদে টনপ্রতি রডের দাম ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা বেড়েছে। এ সময় নির্মাণকাজের পরিমাণ বেড়ে যায়, স্বভাবতই রডের চাহিদা ব্যাপক। তাই নির্মাণকাজে হাত দিয়ে সম্ভাব্য বাজেট অতিক্রম হওয়া স্বাভাবিক। এতে শুধু আবাসন নয়, উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। উল্লেখ্য, দেশে বছরে প্রায় ৩০ লাখ টন রডের চাহিদা রয়েছে। দেশে ১৫০টি রিরোলিং মিল এবং ২৫টি অটো স্টিল মিল রয়েছে। এসব মিলে বছরে ৪০ ও ৬০ গ্রেডের রড উৎপাদন হয় প্রায় ২০ লাখ টন। চাহিদার বিপরীতে বছরে রডের ঘাটতি থাকে ১০ লাখ টন।

রডের দাম বৃদ্ধির পেছনে যে শুধু গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট দায়ী, তা নয়। সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণেও দাম বাড়ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আরও জানা যায়, রড তৈরির অন্যতম উপকরণ বা কাঁচামাল স্ক্র্যাপ। আন্তর্জাতিক বাজারে এখন স্ক্র্যাপ জাহাজের দাম বেশি বলে রডের উৎপাদন খরচও কিছুটা বাড়া স্বাভাবিক। তবে বিদ্যুৎ-গ্যাসের পরিমাণমতো সরবরাহ এবং সিন্ডিকেটের কারসাজি রোধ করে রডের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আসবে- এটাই সবার প্রত্যাশা।