আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
পাঁচদিনের আবাসন মেলায় ৪০০ কোটি টাকার বুকিং

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চলা পাঁচদিনব্যাপী রিহ্যাব শীতকালীন আবাসন মেলা-২০২১ এ প্রায় ৪০০ কোটি টাকার বুকিং দিয়েছেন ক্রেতারা। মেলায় গৃহঋণ সংক্রান্ত ব্যাংক কমিটমেন্ট এসেছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা।

সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) মেলা নিয়ে এক তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন (কাজল)।

রিহ্যাব সভাপতি বলেন, রিহ্যাব মেলার শেষ দিন সোমবার বিকেল চারটা পর্যন্ত প্রায় ৩৯৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকার ফ্ল্যাট, প্লট এবং বাণিজ্যিক স্পেস বিক্রি ও বুকিং হয়েছে। এর মধ্যে ফ্ল্যাট বিক্রি ও বুকিং হয়েছে ১৯৮ কোটি টাকার। প্লট ১২৫ কোটি এবং বাণিজ্যিক স্পেস ৭৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকার বুকিং ও বিক্রি হয়েছে। এছাড়া ব্যাংক কমিটমেন্ট এসেছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থী এসেছে ১৯ হাজার ২৩৭ জন।

আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, মেলার মূল উদ্দেশ্য ব্র্যান্ডিং করা। এখানে যেসব ক্রেতা-দর্শনার্থী এসেছেন তারা সবাই ফ্ল্যাট বা প্লট কিনবেন। কেউ হয়তো এখন কিনবেন, কেউবা একটু পরে। মেলায় অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাদের কাছে তাদের পণ্যের মান সম্পর্কে তুলে ধরেছেন। তারা ক্রেতা-দর্শনার্থীদের নার্সিং করবেন। অন্যদিকে ক্রেতারা পণ্য দেখে পরবর্তীতে ফাইনাল সিদ্ধান্ত নেবেন। এ বছর মেলায় অংশ নেওয়া অনেকে ডিজিটাল মাধ্যমে নিজেদের পণ্য তুলে ধরেছেন। আমাকে অনেকেই জানিয়েছেন, বিদেশ থেকেও প্রবাসী ভাইয়েরা তাদের পণ্য সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন। এটাও আমাদের জন্য একটা ভালো দিক।

সংবাদ সম্মলনে বলা হয়, করোনা মহামারির পর নাগরিকদের বিনিয়োগে আস্থার অভাব লক্ষণীয় ছিল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার প্রকোপ এখনো চলমান। প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় পদক্ষেপে নাগরিকদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন এবং ব্যাপক মাত্রায় টিকা দেওয়ার ফলে আমাদের দেশে করোনার প্রকোপ কমে এলেও এখনো শঙ্কার সংকেত রয়ে গেছে। এ অবস্থায় রিহ্যাব ফেয়ার সফলভাবে শেষ হতে চলেছে।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ কাটিয়ে সবাইকে এক করতে পেরেছি। এই রিহ্যাব ফেয়ারের মাধ্যমে মানুষের মাঝে আস্থা ফেরানোর চেষ্টা করেছি। ক্রেতা-বিক্রেতা, মিডিয়া এবং সবার স্বতঃস্ফূর্ততায় আশার সংকেত পেয়েছি। মেলায় ক্রয়-বিক্রয়ের সংখ্যাতত্ত্ব দিয়ে এ আস্থার সার্বিক চিত্র ভিজুয়ালাইজড করতে পারবো না। মেলায় নাগরিকদের যে সাড়া, যে আবেদন আমরা দেখেছি তাতেই আশান্বিত হয়েছি। আমরা দ্বিধাহীন চিত্তে বলতে পারি, আবাসন খাত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

মেলায় ২২০টি স্টল স্থান পাওয়ার পাশাপাশি প্রায় ১৫০টি আবাসন প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সোমবার শেষ হতে চলা এ মেলায় ১৫টি নির্মাণসামগ্রী এবং ৩০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।

মেলার সিঙ্গেল অ্যান্ট্রির প্রবেশ ফি ৫০ টাকা, মাল্টিপল অ্যান্ট্রির প্রবেশ ফি ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সিঙ্গেল অ্যান্ট্রি টিকিটে একবার ও মাল্টিপল অ্যান্ট্রি টিকিটে পাঁচবার মেলায় প্রবেশ করতে পারছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে মেলা। অ্যান্ট্রি টিকিটের ওপর র্যাফেল ড্র’তে থাকছে আকর্ষণীয় পুরস্কার।

২০০১ সাল থেকে ঢাকায় রিহ্যাব হাউসিং ফেয়ার শুরু হয়। এছাড়া চট্টগ্রামে ১৪টি মেলা সফলভাবে সম্পন্ন করেছে রিহ্যাব। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৪ সাল থেকে বিদেশে হাউসিং ফেয়ার আয়োজন করে আসছে। এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১২টি, যুক্তরাজ্য, দুবাই, ইতালির রোম, কানাডা, সিডনি, কাতারে একটি করে এবং দুবাইয়ে দুটি রিহ্যাব হাউসিং ফেয়ার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এসব ফেয়ার আয়োজনের মাধ্যমে রিহ্যাব দেশে-বিদেশে গৃহায়ণ শিল্পের বাজার সৃষ্টি এবং তা প্রসারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- রিহ্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইন্তেখাবুল হামিদ, সহ-সভাপতি (প্রথম) কামাল মাহমুদ ও সহ-সভাপতি সোহেল রানাসহ রিহ্যাব মেলা স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা। জাগোনিউজ