আবাসন খাত সচল থাকলে দেশের অর্থনীতি সচল থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) পরিচালক এবং রিহ্যাব ফেয়ার উদযাপন কমিটির কো-চেয়ারম্যান মির্জা মুক্তাদির। তিনি বলেন, সাধারণত মানুষ চায়, দিন শেষে নিজের বাসায় গিয়ে একটু শান্তিমতো ঘুমাতে। এজন্য জীবনের সবটুকু সঞ্চয় দিয়ে হলেও আবাসনের ব্যবস্থা করতে চায় প্রায় সব শ্রেণিপেশার মানুষ। তাই এ খাতকে সচল রাখতে হবে। এতে দেশের অর্থনীতি সচল থাকবে।
গত মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে দেশ রূপান্তরকে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা মুক্তাদির বলেন, ‘একটা দেশের মূল সৌন্দর্য সড়ক এবং বিল্ডিং। বিল্ডিং স্ট্রাকচার সুন্দর হলে ওই দেশের নান্দনিকতা ফুটে ওঠে। আমরা বিশ্বের বহু দেশে এমন দেখেছি। আমাদের রিয়েল এস্টেট খাত একদিকে যেমন আবাসনের চাহিদা পূরণ করছে, অন্যদিকে দেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করছে। তিনি বলেন, পৃথিবীর প্রত্যেকটা দেশে রিয়েল এস্টেট সেক্টর ব্যবসায়-বাণিজ্যের মূল চালিকাশক্তি। রিয়েল এস্টেট সেক্টর ঠিকমতো না চললে ২২০টি সেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে ইট, বালু রড, সিমেন্ট, টাইলস, তার, লিফট ও ফিটিংস অন্যতম। বিল্ডিং নির্মাণ না হলে এরা ব্যবসা করবে কোথায়? আবাসন সেক্টরের অবস্থা খারাপ হলে এসব প্রতিষ্ঠানেরও অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।’
রিহ্যাবের এই পরিচালক বলেন, ‘এর আগে যখন বিভিন্ন সরকার ক্ষমতা ছিল, তারা কেন জানি এই সেক্টরকে পাশ কাটিয়ে তাদের অর্থনৈতিক নীতি তৈরি করেছে। রিয়েল এস্টেট সেক্টরটাকে সামনে নিয়ে আসতে হবে। অর্থনৈতিক নীতিটা এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে, যাতে আবাসন খাত, নতুন উদ্যমে যাত্রা শুরু করতে পারে। যেহেতু নতুন সরকার এসেছে, তাই আমাদের প্রত্যাশাও বেশি।’
তিনি আরও বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং পটপরিবর্তন, ব্যাংক খাতের অস্থিরতা, নির্মাণসামগ্রীর বাড়তি দাম এবং ড্যাপের বৈষম্যমূলক নীতির কারণে আবাসন শিল্পে মন্দা চলছে। এই পরিস্থিতিতে ভ্যাট, ট্যাক্স ও রেজিস্ট্রেশন ফি কমিয়ে আনতে হবে। ড্যাপকে ২০০৮ সালের বিধিমালায় নিয়ে আসা উচিত। এতে আবাসন খাত সচল হবে, লিংকেজ প্রতিষ্ঠানগুলো সচল হবে।
মির্জা মুক্তাদির বলেন, ‘টাকা কালো হোক আর সাদা হোক, তা দেশে বিনিয়োগের সুযোগ থাকতে হবে। তা না হলে আমাদের দেশের টাকা নানাভাবে বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়।’ তিনি বলেন, ‘বলা হয়, কালো টাকা। কিন্তু এই টাকা তো আমাদের দেশের টাকা। যখন এগুলো দেশে ইনভেস্ট করার সুযোগ পায় না, তখন দেশের বাইরে নিয়ে যায়। আমি মনে করি, আবাসন খাতে এমন অর্থ ইনভেস্ট করার সুযোগ দেওয়া উচিত।’