আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
ড্যাপ সংশোধন করে আবাসন খাত বাঁচাতে হবে: রিহ্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া

ড্যাপ সংশোধন করা না হলে আবাসন খাতের ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করেন রিহ্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া। এ কারণে দ্রুত ডিটেল এরিয়া প্ল্যান বা ড্যাপ সংশোধন করার উদ্যোগ নিতে হবে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক)। ড্যাপ সংশোধন করা না হলে আবাসন খাত বাঁচবে না। ফ্ল্যাট ও প্লটের দাম আরও বেড়ে যাবে। এতে স্বল্প আয়ের মানুষ, নিম্ন-মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্তদের নিজস্ব আবাসন কিংবা একটি ফ্ল্যাটের স্বপ্ন কখনো পূরণ হবে না। শুধু তাই নয়, রিয়েল এস্টেট সেক্টর ঠিকমতো না চললে ২২০টি সেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে ইট, বালু রড, সিমেন্ট, টাইলস, তার, লিফট ও ফিটিংস অন্যতম।

এ কারণে আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে ড্যাপ সংশোধনের কথা বলছি। তাঁর মতে, নতুন ড্যাপের কারণে মূল ঢাকায় ভবনের উচ্চতা ব্যাপকভাবে কমে গেছে। জমির মালিক ও আবাসন প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা আশায় আছেন, প্রস্তাবিত ঢাকা ইমারত নির্মাণ বিধিমালা সংশোধন হয়ে আসবে। সে জন্য সবাই অপেক্ষায় আছেন। রাজউকের চেয়ারম্যান এবারের রিহ্যাব ফেয়ারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে এটা সংশোধনের আশ্বাস দিয়েছেন। সবাই সে দিকে তাকিয়ে আছে। তিনি বলেন, ভবনের উচ্চতা বা ফ্ল্যাটের সংখ্যা কম হবে বলে আবাসন প্রকল্প অনুমোদনের জন্য জমাও পড়ছে খুবই কম। এ কারণে অ্যাপার্টমেন্টের সরবরাহে বেশ সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, স্বার্থান্বেষী একটি মহল চায় না ড্যাপে সংশোধন আসুক। সে জন্য তারা বিভিন্নভাবে চেষ্টা-তদবির করছেন। ঢাকার জমির মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত। এ ছাড়া আগামী দিনে আমরা ব্যবসা করে অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারব কি না সেটি ড্যাপ সংশোধনের ওপর অনেকটা নির্ভর করছে।

ফ্ল্যাটের উচ্চ মূল্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উচ্চমূল্যের কারণে মধ্যবিত্তের জন্য ঢাকায় অ্যাপার্টমেন্ট কেনাটা আসলেই কঠিন। বিশ্বের অনেক দেশেই ২৫-৩০ বছরের জন্য গৃহঋণ দেওয়ার জন্য মর্টগেজ করপোরেশন রয়েছে। ৩০ শতাংশ অর্থ দিয়ে অ্যাপার্টমেন্ট কিনে মর্টগেজ করপোরেশনে আবেদন করে। তারপর তারা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পায়। আমাদের দেশেও এমন ব্যবস্থায় যেতে হবে। মনে রাখতে হবে, অ্যাপার্টমেন্টে ঋণ দেওয়া সব সময়ই ঝুঁকিমুক্ত। মধ্যবিত্তরা আমাদের  দেশের অর্থনীতির মেরুদ-। তাদের যদি অ্যাপার্টমেন্টের জন্য স্বল্পসুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেওয়া যায় তা হলে আবাসন খাতের পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি চাঙা হবে। লিয়াকত আলী ভূঁইয়া আরও বলেন, পৃথিবীর প্রত্যেকটা দেশে রিয়েল এস্টেট সেক্টর ব্যবসায়-বাণিজ্যের মূল চালিকাশক্তি। রিয়েল এস্টেট সেক্টর ঠিকমতো না চললে ২২০টি সেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে ইট, বালু রড, সিমেন্ট, টাইলস, তার, লিফট ও ফিটিংস অন্যতম। বিল্ডিং নির্মাণ না হলে এরা ব্যবসা করবে কোথায়? আবাসন সেক্টরের অবস্থা খারাপ হলে এসব প্রতিষ্ঠানেরও অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। ড্যাপের ফ্যারের কারণে আমাদের আবাসন সেক্টরের অবস্থা সংকট অবস্থায় আছে। আমরা চাই এটার যৌক্তিক সমাধান হোক। এ ছাড়া নিবন্ধন ব্যয় বেশি হওয়ার কারণে আবাসন খাতে ক্রেতারা নিবন্ধন করতে আগ্রহ হারাচ্ছে। গৃহঋণ ও অপ্রতুল। আমাদের  দেশের শুধু বেতন দিয়ে ফ্ল্যাট কেনা সম্ভব নয়। এ জন্য অবশ্যই গৃহঋণ দরকার। সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা রিহ্যাব থেকে অনেক দিন যাবৎ ১০ হাজার বা ২০ হাজার কোটি টাকার একটা প্যাকেজ ঋণের কথা বলে এসেছি। ২০০৯ সালে সরকার একবার শুরু করলেও সেটা পরে বন্ধ হয়ে যায়। আমরা আবার এই ঋণ চালু করার দাবি জানাই।

শেয়ার করুন