আমাদের মেইল করুন abasonbarta2016@gmail.com
ভাড়ার টাকায় নাগরিকদের আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে

রাজধানী ঢাকায় যে সকল আবাসন প্রতিষ্ঠান নাগরিকদের কাছে আকর্ষনীয় হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে তার মধ্যে স্কাইরোজ বিল্ডার্স লিমিডেট অন্যতম। সরকারের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে আবাসন সমস্যা সমাধানে বেসরকারি পর্যায়ে যে কোম্পানি সততা-সচ্ছতা এবং আইন কানুন ভালভাবে মেনে এই শিল্পের উন্নয়ন কাজে দক্ষতার সাথে কাজ করে আসছে তাদের মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানের অবস্থান অনেক উপরে। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার হিসেবে নিজস্ব মেধা ও শ্রম দিয়ে স্কাইরোজ বিল্ডার্সকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন জনাব কামাল মাহমুদ। দেশের যে কয়েকজন উদ্যোক্তা সুদৃঢ় কমিটমেন্ট নিয়ে আবাসন ব্যবসা কে নিষ্ঠার সাথে এগিয়ে নিচ্ছেন সেইসব ব্যাক্তির মধ্যে কামাল মাহমুদ একজন। ২০১০ আবাসন ব্যবসা শুরু করেন তিনি। এরপর রিহ্যাবের মেম্বার হন ২০১২ সালে। সফলতার সাথে শেষ করেছেন বেশ কয়েকটি প্রকল্প। আবাসন ব্যবসার আগে দীর্ঘদিন গণমাধ্যমে কাজ করেছেন তিনি। বর্তমানে মিডিয়া স্টেশন লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এই মিডিয়া প্রতিষ্ঠানটি বিনোদন, জনসচেতনতা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা মূলক নানা ধরনের কার্যক্রম গুরত্বের সাথে তুলে ধরছে। স্কাইরোজ বিল্ডার্স শুরু থেকেই গুণগত মান বজায় রাখায় ক্রেতাদের বিশ্বস্ততা অর্জন করেছে দ্রুত। সময় মত ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা এবং গ্রাহক সেবায় মনযোগ দেয়ায় দ্রুত প্রসারণ ঘটছে স্কাইরোজ বিল্ডার্সের। ঢাকায় সুপরিকল্পিত আবাসন গড়ে তুলতে স্কাইরোজ বিল্ডার্স বদ্ধ পরিকর এমন কথা জানান প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামাল মাহমুদ। শুধু প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবেই না তার মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) এর কর্মকান্ডেও। বর্তমানে রিহ্যাবের বোর্ড অব ডিরেক্টর্সের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এছাড়া রিহ্যাবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যান্ডিং কমিটি প্রেস এ্যান্ড মিডিয়ার কো-চেয়ারম্যান হিসেবে দক্ষতার সাথে স্বীয় দায়িত্ব সামাল দিয়ে যাচ্ছেন। প্রেস এ্যান্ড মিডিয়া ছাড়াও বেশ কয়েকটি স্ট্যান্ডিং কমিটির মেম্বার কামাল মাহমুদ। সম্প্রতি রিহ্যাবের পরিচালক এবং স্কাইরোজ বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামাল মাহমুদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করেছে আবাসন বার্তা। নিচে তার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।

প্রশ্নঃ সদ্য ঘোষিত বাজেট নিয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কি?
কামাল মাহমুদঃ আমরা বাজেটে আবাসন খাতের জন্য বেশ কিছু দাবি জানিয়ে ছিলাম। এর জন্য সরকারের বিভিন্ন মহল বিশেষ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, অর্থমন্ত্রণালয় সহ বিভিন্ন জায়গায় আমাদের প্রস্তাবনা দিয়ে ছিলাম রিহ্যাবের পক্ষ থেকে। সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হলেও প্রস্তাবিত বাজেটে আমাদের রিহ্যাবের দাবির পক্ষে কোন প্রতি ফলন আমরা পাই নাই। বিষয়টা খুবই দুঃখজনক। আমরা আশা করি সরকার বাজেট পাশের আগে আমাদের বিষয় গুলো বিবেচনা করবেন। কারণ আবাসন মানুষের মৌলিক অধিকার। আবাসন ছাড়া জীবনের কথা চিন্তাই করা যায় না। ভাড়ার টাকায় দেশের নাগরিকরা যেন তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারে সেদিকে সরকারকেই অবশ্যই নজর দিতে হবে।
প্রশ্নঃ প্রস্তাবিত বাজেটে সবচেয়ে ভাল এবং খারাপ দিক কোন গুলো।

কামাল মাহমুদঃ প্রস্তাবিত বাজেটে বেশ কিছু ভাল দিক রয়েছে। তবে আমি কথা বলতেই চাই আবাসন খাত নিয়ে। প্রস্তাবিত এই বাজেটে আমাদের জন্য ভালর তেমন কিছুই নেই। যেটা আমি আগেই বলেছি। সবচেয়ে খারাপ দিকে হচ্ছে নতুন করে আবাসন সেক্টরে ভ্যাট এর পরিমান বৃদ্ধি। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে মাননীয় অর্থমন্ত্রী যে বাজেট উপস্থাপন করেছেন তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে নির্মাণ তথা আবাসন খাত। ফ্ল্যাটের উপর ভ্যাট ছিল ১.৫ থেকে ৪.৫ পর্যন্ত। গড়ে ৩% এটা বর্তমানে হবে ১৫%। ফ্ল্যাট কেনাবেচায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রয়োগ শুরু হলে আবাসন খাতে মারাক্তক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে । নির্মাণ খাতের অন্যতম কাঁচামাল এমএস রড। এই রডে এখন সব মিলিয়ে টনপ্রতি ৯০০ টাকা ভ্যাট দিতে হয়। নতুন আইনের ফলে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হবে। বর্তমান বাজারমূল্যে এক টন রডে ভ্যাট হবে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। এ ছাড়া কাঁচা লোহা কিংবা স্ক্রাপ থেকে রড তৈরির সময় ফেরো ম্যাঙ্গানিজ, ফেরো সিলিকন, ফেরো সিলিকো ম্যাঙ্গানিজসহ বিভিন্ন উপাদান লাগে। এবারের বাজেটে এই তিনটি পণ্যে আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ হারে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বসানো হয়েছে। এতে সার্বিকভাবে এসব পণ্য আমদানি খরচ বাড়বে, যা রড তৈরির খরচ আরও বাড়িয়ে দেবে। এছাড়া বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বেড়েছে। এর ওপর ভ্যাট বাড়বে। সব মিলিয়ে রড এর দাম প্রতি টন ৯-১০ হাজার টাকা বৃদ্ধির আশঙ্কা আছে। রডের পরে আসেন সিমেন্টের কথায়। এই সিমেন্টের প্রধান কাঁচামাল ফ্লাই অ্যাশ। ফ্ল্যাই অ্যাশ আমদানিতেও ১০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বসানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুই ধরনের পাথরের উপর আগামী ১ জুলাই থেকে বোল্ডার স্টোন ও স্যান্ডস স্টোন আমদানিতে যথাক্রমে ১৫ ও ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রক শুল্ক দিতে হবে। একই ভাবে নির্মাণ খাতের অন্যতম উপাদান ইটের খরচও বাড়বে ভ্যাটের কারনে। সার্বিকভাবেই নির্মাণের চারটি উপাদান রড, সিমেন্ট , ইট ও পাথরের দাম বাড়বে ফলে এই সেক্টর আরো ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে যাবে।

প্রশ্নঃ বর্তমান অবস্থায় আপনারা রিহ্যাবের পক্ষ থেকে কি দাবি জানাচ্ছেন সরকারের কাছে।
কামাল মাহমুদঃ সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করতে আগামী ৫ বছর ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি আমরা। মধ্য বিত্ত এবং নিন্মবিত্তদের জন্য ভাড়ার টাকায় মাথা গোঁজার ঠাই নিশ্চিত করতে একটি তহবিল অবশ্যই গঠন করতে হবে। বর্তমানে আবাসন খাতে সব মিলে নিবন্ধন ব্যয় ১৪% উপরে । আমারা এটা ৭% এর নিচে নিয়ে আসার দাবি জানাই। ২০১৩ সালে ৭৬ হাজার কোটি টাকা এবং ২০১৪ সালে ৭২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। বর্তমানে যে অবস্থা দাঁড়াচ্ছে তাতে বিদেশে টাকা পাচারের হার আরো বাড়বে বলে আমাদের শংকা। আমরা চাই দেশের টাকা দেশে থাকুক। দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধি হোক। কাজেই এই অপ্রদর্শিত অর্থের বিষয়ে সরকারকে সুচিন্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।

প্রশ্ন: রিহ্যাব সদস্য ছাড়া আর কেউ রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করতে পারবে না। এই বিষয় সম্পর্কে জানতে চাই।
কামাল মাহমুদ: রিহ্যাব সদস্য ছাড়া আর কেউ রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করতে পারবে না এটা আমাদের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করেছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারনে আবাসন খাতে স্বচ্ছতা- জবাবদিহীতা এবং শৃঙ্খলতা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

আপনাকে ধন্যবাদ
কামাল মাহমুদঃ আপনাকেও ধন্যবাদ।

শেয়ার করুন